Sujan Chakraborty

মমতার রাজত্বে বোমা কারখানই শিল্প, এগরায় সুজন চক্রবর্তী

রাজ্য

Sujan Chakraborty


রামশংকর চক্রবর্তী, তমলুক

এগরায় বোমা বিস্ফোরণে সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বামফ্রন্টের ডাকে প্রতিবাদ মিছিল হলো এগরায়। শনিবার দীঘা মোড় থেকে সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড হয়ে ত্রিকোণ পার্ক পর্যন্ত হয় মিছিল।
এগরারই খাদিকুল গ্রামে বাজির আড়ালে চালানো বোমা তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। নিহত হয়েছেন ১২ জন। কারখানার মালিক, তৃণমূল নেতা, ভানু বাগ মারা গিয়েছেন। এদিন মিছিলে পশ্চিমবঙ্গকে বোমা বন্দুকের রাজ্যে পরিণত করার বিরুদ্ধে উঠেছে স্লোগান। 
এদিন শালবনি যাওয়ার পথে, বিস্ফোরণের ১১ দিন পর, খাদিকুলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার নিয়োগপত্র দেন। ঘটনার পরপর তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে গ্রামে ঢুকতে দেননি রুষ্ট জনতা। তাড়া করেছিলেন পুলিশকেও। স্থানীরা বারবার বলেছেন, পুলিশের মদতে বাজির কারখানার আড়ালে চলেছে বোমার ব্যবসা। 


এর আগে এদিন পাঁশকুড়ায় হয় মহামিছিল। শান্তি, গণতন্ত্রের দাবি ওঠে সেই মিছিলেও। এগরায় জনসভায় সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ১২ বছরের রাজত্বে বোমার কারখানা শিল্পের মর্যাদা পেয়েছে। একটিও নতুন শিল্প কলকারখানার ফিতে কাটতে ওনাকে কেউ দেখেননি। বরং বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে চালু কারখানার বেশিরভাগ তোলাবাজি করে বন্ধ করে দিয়েছে তৃণমূল।’’ 
স্বর্ণময়ী গার্লস স্কুলের সামনে সভায় সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতার বোমা তৈরীর কারখানা মুখ্যমন্ত্রী জানেন না, এটা অসম্ভব। উনি ১১ দিন পর এগরা এসে বলছেন আবহাওয়া খারাপ ছিল। আসলে সবটাই মুখ বন্ধের চেষ্টা। প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে যারা তোলা নিত সেই সব আইসি বা পুলিশদের কি শাস্তি হবে? সারা রাজ্যজুড়ে বোমা বন্দুক এর রাজনীতি করছে তৃণমূল।’’
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে থাকা তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নতুন করে অশান্তির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। কারণ মানুষ লুটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন, তাই তৃণমূলের এত ভয়।’’


এই সভায় সভাপতিত্ব করেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নিরঞ্জন সিহি। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আরএসপি'র সুভাষ নস্কর, সিপিআই এর বিপ্লব ভট্ট, সুব্রত পন্ডা। উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) নেতা হিমাংশু দাস, ইব্রাহিম আলি সহ বামফ্রন্টের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পাঁশকুড়া এবং এগরা দুই জায়গায় চক্রবর্তী বলেন, "বগটুইয়ের ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন সাত দিনের মধ্যে এ রাজ্য কে বোমা বন্দুক মুক্ত করবো। সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা কী? বোমা বন্দুক উদ্ধার তো হয়নি, বরং এ রাজ্যের বোমা কারখানাটা কে শিল্পে মর্যাদা দিয়েছে তৃণমূলের সরকার। আর সেই জন্যই শনিবার খাদিকুলে এসে অবৈধ বোমা কারখানায় কাজ করাটাকে চাকরি আখ্যা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর থেকে লজ্জার এবং হতাশাজনক আর কিছু হতে পারে না।" 
সুজন চক্রবর্তী বলেন "শিক্ষাক্ষেত্রে লাগামহীন দুর্নীতি, মানুষের হাতে কাজ নেই, ১০০ দিনের কাজের টাকা, পঞ্চায়েতের প্রকল্পের সুযোগ সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। সাধারণ মানুষের টাকা চুরি করছে তৃণমূল। আর মুখ্যমন্ত্রী ভাইপোকে নিয়ে কয়েক হাজার পুলিশ কর্মীর নিরাপত্তা বেষ্টনী নিয়ে ভ্রমণে বেরিয়েছেন। মানুষের করের টাকায় দলীয় সার্কাস করছে তৃণমূল।"

Comments :0

Login to leave a comment