Budge Budge Murder

বজবজে জোড়া খুন, তৃণমূল নেতা সহ গ্রেপ্তার ৩

রাজ্য

Budge Budge Murder

অনিল কুণ্ডু – বজবজ

ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের বজবজে এবার নৃশংস জোড়া খুন! ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে খুনের ঘটনায় মহাদেব পুরকাইত (৪২) ও গণেশ নস্কর (৪৮) প্রাণ হারিয়েছেন। 
শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বজবজ থানার খড়িবেড়িয়া এলাকায়। এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা অসীম বৈদ্যসহ মোট ৩ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃত যুব তৃণমূল নেতা বজবজ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস’র বুথ সভাপতি। এদিকে জোড়া এই খুনের ঘটনার খবর পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো সত্বেও ঘটনাস্থলে পুলিশ দেরীতে পৌঁছয়। এই অভিযোগ তুলে শনিবার স্থানীয় গ্রামবাসীরা পুলিশের বিরুদ্ধে দীর্ঘসময় ধরে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। নৃশংস এই হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মানুষেরা। 


ঘটনার বিবরণে স্থানীয় মানুষেরা জানান, শুক্রবার রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ বাড়ির কাছেই নিহত হয়েছেন মহাদেব পুরকাইত ও তাঁর বন্ধু গণেশ নস্কর। বজবজ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খড়িবেড়িয়া এলাকার পন্ডিতিয়া মাঠে দুই জনকে ঘিরে ধরে মারধর করে অসীম বৈদ্য ও তার দলবল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের গলার নলি কেটে দেওয়া হয়।মাঠেই তাঁদের দেহ পড়ে ছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় খড়িবেড়িয়ায় হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই খুনের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় মানুষেরা।
তাঁরা জানান, নিহত মহাদেব পুরকাইত আগে জমিজমা কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও গত প্রায় ১ বছর ধরে সে মাছ, মাংস’র ব্যবসা করছিলেন। নিহত গণেশ নস্কর উলুবেড়িয়ায় একটি চামড়া কারখানার শ্রমিক ছিলেন। নিহতরা তৃণমূলেরই কর্মী। অপরদিকে অসীম বৈদ্য যুব তৃণমূলের বুথ সভাপতি হওয়ার পর থেকেই এলাকায় তার প্রতিপত্তি বাড়াচ্ছিল। জমি কেনাবেচার সঙ্গে বরাবরই যুক্ত। 


এদিকে জোড়া এই খুনের ঘটনায় ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার এক আধিকারিক শনিবার জানান, ঘটনার তদন্ত করতে ৪ জনের বিশেষ তদন্তকারী টিম তৈরি করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন। মূল অভিযুক্ত অসীম বৈদ্য, মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল ও প্রসেনজিৎ নস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে বজবজ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইনসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি বলে তিনি জানান। 
শনিবার দুপুরে খড়িবেড়িয়া এলাকায় পথ অবরোধ করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। প্রায় পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে তাঁরা অবরোধ, বিক্ষোভ দেখায়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। 


নিহত মহাদেব পুরকাইত’র স্ত্রী রূম্পা পুরকাইতএদিন অভিযোগ করে বলেছেন, অসীম বৈদ্য প্রায়ই তারঁ স্বামীকে মারধর করার হুমকি দিত। এমনকি বাড়িতে এসেও হুমকি দিয়েছিল। তিনি জানান, অসীম বৈদ্য’র সঙ্গে মহাদেব আগে জমি কেনাবেচার কাজ করলেও গত প্রায় এক বছর তার কাছ থেকে সরে এসেছিল।নিজেই মাছ, মাংস’র ব্যবসা করছিল। তবে কি কারণে আক্রোশ, শত্রুতা সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে তিনি এদিন কিছু বলতে পারেননি। জোড়া এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় খড়িবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দারা। ধৃতদের এদিন আলিপুর আদালতে পুলিশ হাজির করলে বিচারক তাদেরকে দশ দিন পুলিশ হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন।


 

Comments :0

Login to leave a comment