Places of worship act

উপাসনাস্থল আইনের পক্ষে অবস্থান, মামলায় যুক্ত হচ্ছে সিপিআই(এম)

জাতীয়

 উপাসনাস্থল আইন নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা দিল সিপিআই(এম)। মঙ্গলবার পার্টির পক্ষ থেকে পলিট ব্যুরোর সদস্য প্রকাশ কারাতের মাধ্যমে ওই আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আবেদনে ১৯৯১ সালের আইনটির পক্ষে জোরালো সওয়াল করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই আইন দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে। আইনটির সমর্থনে এদিন শীর্ষ আদালতে আবেদন জমা দিয়েছেন মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সদ্য নির্বাচিত এনসিপি (শারদ) বিধায়ক জিতেন্দ্র সতীশ আওহাদও।
ও‍ই আইনে বলা আছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশের যে ধর্মীয় স্থানের যা চরিত্র ছিল, তা অপরিবর্তিত থাকবে। বাবরি মসজিদকে ওই আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। এখন হিন্দুত্ববাদীরা যখন একদিকে দেশে একের পর এক মসজিদ ও মাজারের নিচে মন্দিরের দাবি তুলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পারদ চড়াতে চাইছে, তখন আরেকদিকে আরএসএসপন্থীদের তরফে আইনটিকেই অসাংবিধানিক বলে বাতিল করার দাবি জানিয়ে ছ’-ছ’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপি’র প্রাক্তন সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এবং সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়।
আগের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় মামলাগুলিকে ফেলে রাখলেও নতুন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এগুলির শুনানির জন্য নিজের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেছেন গত শনিবার এবং ডিসেম্বরের ১২ তারিখ শুনানির দিনও ধার্য করেছেন। সেই মামলাতেই পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জমা দেওয়া হলো সিপিআই(এম) এবং আওহাদের তরফে।
সিপিআই(এম)’র আবেদনে বলা হয়েছে, আবেদনে বলা হয়েছে, পার্টি চায়, ভারতের সাংবিধানিক সৌভ্রাতৃত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমতা এবং আইনের শাসন সুরক্ষিত থাকুক। এগুলি দেশের সংবিধানের মৌলিক নীতি। ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইনকে বাতিল বা লঘু করা হলে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের উপর আঘাত নেমে আসবে। এই আইনটির বিশেষ সাংবিধানিক ও সামাজিক তাৎপর্য রয়েছে। আইনটি ইতিহাসের ভুলের পুনরাবৃত্তি ধর্মীয় বিবাদের হাত থেকে দেশকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করেছে।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, আইনটির বিশেষ তাৎপর্য এখানেই যে, এটি দেশের শাসনব্যবস্থাকে অগ্রবর্তী দৃষ্টি নিয়ে চলার কথা বলেছে, আইনের শাসন লঙ্ঘন করে বা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে কেউ যাতে ঐতিহাসিক ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে না পারে, তার ব্যবস্থা করেছে। এখন এই আইনটি বাতিল করার বা লঘু করার আরজি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে, আর ঠিক তখনই একাধিক মসজিদ ও মাজারের ধর্মীয় চরিত্র বদলের দাবি নিয়েও আদালতে যাওয়া হয়েছে। সংবিধান রচয়িতারা চেয়েছিলেন, নানা সংস্কৃতি, জাত, ধর্ম ও ভাষার এক স্থায়ী মিশ্রণ হয়ে থাকুক ভারত। এই সব মামলা সেই ধারণাকেই আক্রমণ করেছে। অথচ ওই আইন প্রণয়নের পরে পরপর তিনটি দশকে ক্ষমতাসীন সরকারের পূর্ণ গরিষ্ঠতা ছিল সংসদে। কোনও সরকারই সংসদীয় গরিষ্ঠতাকে ব্যবহার করে আইনটি সংশোধন বা বাতিল করার পথে যায়নি। স্পষ্টতই মামলাগুলি সংসদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিপন্থী।

Comments :0

Login to leave a comment