Covid-19 4th Wave

জানুয়ারিতেই করোনার চতুর্থ ঢেউ দেশে? আগামী ৪০ দিন গুরুত্বপূর্ণ

জাতীয়

Covid-19 4th Wave

করোনা ভাইরাসের ঢেউ কি আবার আছড়ে পড়তে চলেছে ভারতে? কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, আগামী ৪০ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে করোনা সংক্রমণের আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জানুয়ারিতে এই ভাইরাসের আরেক দফা প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সম্ভাবনা থাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে আগামী সপ্তাহেই চীন সহ ছ’টি দেশ থেকে ভারতে আগত যাত্রীদের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ৭২ ঘণ্টা আগের নেগেটিভ আরটি-পিসিআর রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। 

 

অন্য দেশগুলি হলো জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হঙকঙ, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর। তবে এই সঙ্গেই ওই আধিকারিক বলেছেন, এদেশে ফের করোনা সংক্রমণের ঢেউ উঠলেও এবার হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে খুবই কম সংখ্যককে এবং করোনায় মৃত্যুও হবে অত্যন্ত কম সংখ্যকের। বিশেষজ্ঞরা তেমনই অভিমত জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রককে।
দিন কয়েক আগেই খবর পাওয়া গিয়েছে, চীনে আবার ছড়াচ্ছে করোনার সংক্রমণ। তারপরেই জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সহ পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। এবার দাপট দেখাচ্ছে করোনা ভাইরাসের বি ৭ প্রকরণ। মারণ-ক্ষমতা কম হলেও এটির সংক্রমণ ক্ষমতা ব্যাপক, এতে আক্রান্ত এক জনের থেকে ১৬ জন পর্যন্ত করোনায় অসুস্থ হতে পারেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে কেন্দ্রের তরফে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে করোনা প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এবং করোনা আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসার পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার জন্য নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন করোনার সম্ভাব্য সংক্রমণ মোকাবিলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে। সরকার প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানে আগত যাত্রীদের দুই শতাংশের করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে গত শনিবার থেকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সূত্র বুধবার জানিয়েছে, করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার দিল্লি বিমানবন্দরে যাবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। 
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, গত দুই দিনে বিমানবন্দরগুলিতে বিদেশ থেকে আগতদের মধ্যে ৬ হাজার জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। বুধবারই দু’জন যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে তামিলনাডুর চেন্নাই বিমানবন্দরে। তাঁদের এক জন দুবাই ও আরেক জন কম্বোডিয়া থেকে ভারতে এসেছেন। গত মঙ্গলবার ওই রাজ্যের মাদুরাই বিমানবন্দরে এক মহিলা ও তাঁর ছয় বছরের মেয়ের করোনা ধরা পড়েছে। মেয়েকে নিয়ে চীন থেকে কলম্বো হয়ে ভারতে এসেছেন ওই মহিলা। সবাইকেই নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ভারতে যে তিন বার করোনা সংক্রমণের ঢেউ ধাক্কা দিয়েছে, প্রতিবারই ভাইরাস মূলত ছড়িয়েছে বিদেশ থেকে আগতদের মাধ্যমে। তাই এবার এখনই আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা ভাবা না হলেও যাঁরা আসছেন, তাঁদের করোনা পরীক্ষায় জোর দিচ্ছে সরকার। 

 


এদিকে, করোনা সংক্রমণ ফের ছড়ালে মোকাবিলায় দেশ কতটা প্রস্তুত, তা বোঝার জন্য গত মঙ্গলবার সারা দেশের সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ২০ হাজার চিকিৎসা কেন্দ্রে ঝটিকা মহড়া চালানো হয়েছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশে। বুধবার তার ফলাফল জানিয়েছেন মন্ত্রকের আধিকারিকরা। তাঁরা বলেছেন, ওই ২০ হাজার কেন্দ্রে প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার আইসোলেশন বেড বা পৃথক শয্যা প্রস্তুত রয়েছে করোনা রোগীদের ভর্তি নেওয়ার জন্য। ১১ হাজারের বেশি অ‍‌ক্সিজেন প্ল্যান্টও চালু অবস্থায় রয়েছে। সেই সঙ্গে ৬৪ হাজার ৭১১টি আইসিইউ বেড এবং ৪৯ হাজার ২৩৬টি ভেন্টিলেটর যুক্ত আইসিইউ বেডও এখনই ব্যবহার করার মতো অবস্থায় আছে। এগুলি ছাড়াও অক্সিজেনের সিলিন্ডার সহ অ্যাম্বুলেন্স তৈরি আছে ১১ হাজার ছ’শোর বেশি এবং আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে ৩ হাজার ৭২৩টি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যখন এই চিকিৎসা পরিকাঠামোর কথা জানাচ্ছে, তখন সেরাম ইনস্টিটিউট করোনা প্রতিরোধে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুই কোটি ডোজ বিনামূল্যে সরবরাহের প্রস্তাব দিল সরকারকে। ভ্যাকসিন উৎপাদনে দেশের এই শীর্ষ সংস্থা বুধবার এই প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে। এই দুই কোটি ভ্যাকসিনের মূল্য ৪১০ কোটি টাকা। 

Comments :0

Login to leave a comment