Crackers Allowed

১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত ছাড়, রাজ্য ব্যবস্থা করল শব্দবাজির তাণ্ডবের

রাজ্য

 

এই বছর কালীপটকা ফাটানো যাবে। ফাটানো যাবে কম মাত্রার যে কোনও শব্দবাজি। বাজি বিক্রেতাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত আওয়াজের শব্দবাজিকে অনুমতি দিলো রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এর অর্থ, এই বছর থেকে কালীপটকা সহ একাধিক শব্দবাজি রাজ্যে বৈধ হয়ে গেলো। এত দিন রাজ্যের দূষণবিধি মেনে ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দমাত্রার বাজি ফাটানো যেত না। অন্যান্য রাজ্যে আরও বেশি শব্দমাত্রার বাজির অনুমতি থাকায় বারংবার এই নিয়ে দাবি জানিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। এই বছর সেই লাগাতার দাবি মেনে নিলো রাজ্য সরকার।
রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্যে বাজির শব্দমাত্রা ৯০ ডেসিবেল থেকে বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবেল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে সারা দেশে বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল। আমরা সেই নির্দেশকেই কার্যকর করেছি। তবে সাইলেন্স জোন ও তার ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও শব্দবাজি ফাটানো যাবে না।’’ পর্ষদ চেয়ারম্যানের এই ঘোষণায় বেজায় খুশি বিক্রেতা থেকে ব্যবহারকারীরা। কারণ, এতে বাজির বিক্রি বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
প্রকৃতির দিক থেকে ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের ব্যবহার প্রাণীজগতের কাছে ক্ষতিকর। তাই বাজির শব্দমাত্রা ৯০ ডেসিবেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগের সরকার। ওই শব্দমাত্রার জেরে কালীপটকা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রাজ্যে বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন বাজি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, গোটা দেশে বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল হলেও পশ্চিমবঙ্গে ৯০ ডেসিবেল থাকায় ভিনরাজ্য থেকে বাজি আমদানি করতে সমস্যা হয়। তাঁদের আরও বক্তব্য ছিল, আলোর বাজি ছাড়া এই রাজ্যে বাজি বিক্রি কঠিন হয়ে পড়েছে। আলোর বাজিতে শব্দদূষণ কম হলেও বায়ুদূষণ হয় মারাত্মক। তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণের যে লক্ষ্য, তা আদৌ পালন করা যায় না। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে শব্দবাজির মাত্রাকে বাড়ানোর নির্দেশ জারি করা হলো। তবে বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশের কথায়, একপ্রকার বাধ্য হয়েই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তার মুখ্য কারণ, পরপর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের কারণে পুলিশের সংগ্রহে এখন বাজির পাহাড়।
পুজোর মুখে এগরা ও দত্তপুকুরে বাজি বিস্ফোরণের পর রাজ্য জুড়ে বেআইনি কারখানা থেকে প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বাজি ব্যবসায়ীরদের মতে, এই পরিস্থিতিতে হাতে গোনা কয়েকটি বৈধ বাজি কারখানা থেকে রাজ্যের বিপুল চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না। ভিনরাজ্য থেকে বাজি আমদানি করতে গেলে শব্দমাত্রা বৃদ্ধির ছাড়পত্র দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। এটা না হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হতো। ২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচন। তাই সামান্য বিষয় থেকে মানুষের মনে যাতে কোনও ক্ষোভ তৈরি না হয়, তার জন্য এমন চটজলদি সিদ্ধান্ত। তবে এতে তাঁদেরও লাভই হলো।

 

Comments :0

Login to leave a comment