BOOK | Jawaharlal Nehru | Bharat Sandhane | MUKTADHARA | 2025 JANUARY 24

বই | জওহরলাল নেহরু | 'ভারত সন্ধানে" প্রসঙ্গে | মুক্তধারা | ২০২৪ জানুয়ারি ২৪

সাহিত্যের পাতা

BOOK  Jawaharlal Nehru  Bharat Sandhane  MUKTADHARA  2025 JANUARY 24

বই | মুক্তধারা

'ভারত সন্ধানে" প্রসঙ্গে

জওহরলাল নেহরু

উনিশ শতকের শুতকীর্তি রাষ্ট্রনীতিবিদ বেঞ্জামিন ডিসরেলি একবার লিখেছিলেন, সাধারণ মানুষ যখন কারাগারে কি নির্বাসনে যায়, বেঁচে থাকলেও তারা বাঁচে নরাশ্যে জীবন্বত হয়ে, আর বিদ্যাব্রতী মানুষের পক্ষে সেই দিনগুলিই হয় জীবনের সবথেকে সুখের দিন। জওহরলাল নেহরুর ক্ষেত্রে কথাটা যেন অন্যভাবে সত্যি। ীর্ঘ কারাবাসের দিনগুলি তাঁর নিজের পক্ষে যত ক্লেশকর ও দুঃসহই হোক, এমন তিনটি গ্রন্থ তিনি বিভিন্ন পর্বের কারাজীবনের অন্ধকার অন্তরালে বসে রচনা ভরে গেছেন, যার প্রত্যেকটির মধ্যে নিহিত চিরকালের আলোকদীপ্তি। 'ভারত সন্ধানে' এমনই এক উজ্জ্বল গ্রন্থ। আমেদনগর দুর্গের কারাশিবিরে লেখা এই গ্রন্থ তিহাসচর্চার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত। সভ্যতা ও সংস্কৃতির যে বিরাট উত্তরাধিকার ভারতের মতো প্রাচীন এক ভূখণ্ডে জন্মসূত্রে আমাদের উপর বর্তেছে তিনি শুধু তারই স্বরূপটিকে নতুন করে আবিষ্কার করেননি এই মহাগ্রন্থে, একইসঙ্গে সমকালীন ভারতের উপর এর প্রভাবটিকেও করাতে চেয়েছেন অনুভবগপাচয়। চয়েছেন, ভবিষ্যৎ ভারতের আদর্শ ভাবমূর্তি সম্পর্কেও একটি স্বচ্ছ ধারণা গড়ে দিতে আত্মজীবনীয় মতো নিঃসংকোচ এই আলোচনা, গল্পের মতো কৌতূহলকর ভাহিত্যের মতো স্বাদু। ইতিহাসচর্চা যে আত্মচর্চার অঙ্গ, ইতিহাস-সন্ধান যে আত্মানুসন্ধান, ব্যক্তি ও ইতিহাস যে পরম্পরসম্পৃক্ত ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী জওহরলাল সেই তত্ত্বটিকেও যেন এ-গ্রন্থে করে গেলেন সূচিত ও প্রতিষ্ঠিত। স্বাধীনতা এসে যখন ভবিষ্যতের নানা নূতন দিক খুলে দেবে, অব্যবহিত অতীতের জানি ও ব্যর্থতা যখন দূর হয়ে যাবে-তখন ভারত নিজেকে আবার নূতন করে পাবে। গঞ্জীর আত্মপ্রত্যয়ে সে অগ্রসর হয়ে চলবে সামনের দিকে। পুরাতন ঐতিহ্যে প্রতিষ্ঠিত ভারত নব নব দেশ ও জাতির কাছ থেকে নূতন নূতন শিক্ষা গ্রহণ করবে ও ও সবার সঙ্গে সহযোগিতা করবে। আজ একদিকে সে প্রাচীন আচারে অন্ধবিশ্বাসী ও অপর দিকে নির্বিচারে বিদেশী হাবভার অনুকরণেই ব্যস্ত। এ ঘটোর কোনোটাতেই তার শাস্তির আশ্বাস নেই কোনোটাই তাকে জীবনের দিকে পূর্ণতার দিকে এগিয়ে দিতে পারবে না। এটা তো বোঝাই যাচ্ছে যে ভারতকে আজ তার প্রাচীনতার খোলস ত্যাগ। করে বেরিয়ে আসতে দুণের জীবন ও ধর্মধারায় সক্রিয় অংশ গ্রহণ করতে হবে। অপর দিকে এও সত্যি যে সত্যিকা হবে এবং আধুনিক যে সত্যিকার আহিক কিংবা সাংস্কৃতিক উন্নতি অনুকরণের দ্বারা সম্ভবপর হতে বারে না। জনসাধারণ থেকে কিংবা জাতীয় জীবনের উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন মুষ্টিমেয় কয়েকজন। এই অনুকরণের নেশায় মেতে থাকতে পারে। সত্যকার সংস্কৃতি, হির্জগৎ থেকে যতই প্রেরণা আহরণ করুক না কেন, একেবারে দেশজ জিনিস দেশের জনসাধারণের উপরই এর ভিত্তি। বিদেশের মানদণ্ড দিয়ে সব যদি আমরা পরিমাণ করে দেখতে যাই, তাহলে শিল্প তথা সাহিত্য দেশের জীবনধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে মৃতবর হতে বাধ্য।

Comments :0

Login to leave a comment