গোন্দলপাড়া জুট মিল খোলা সহ ২৪ ঘন্টা জল ও আলোর দাবিতে সোমবার ৯ টি ইউনিয়নের উদ্যোগে চন্দননগর জ্যোতির মোড়ে জিটি রোড অবরোধ করা হয়। শ্রমিক ইউনিয়নগুলির উদ্যোগে এই অবরোধ কর্মসূচিতে সামিল হয় চন্দননগরের সংযুক্ত নাগরিক কমিটি। গোন্দলপাড়া জুট মিলটি গত ১৩ মাস ধরে বন্ধ। বিগত ২০১৯ সালে টানা ২৮ মাস বন্ধ থাকার পর কয়েক মাসের জন্য মিলটি চালু হয়। তারপর গত ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আবার টানা বন্ধ। মিলের শ্রমিক আবাসন গুলোতে আলো, জল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়েছে ইএসআই'র চিকিৎসার সুযোগ। মিল মালিক বিদ্যুৎ সংস্থা ও ইএসআই'র টাকা মেটানো বন্ধ করে দিয়েছেন। অবসর নেওয়া কর্মীরা পাচ্ছেন না গ্রাচুইটি , পিএফ'র টাকা।
এমন অবস্থায় শ্রমিকরা বার বার ছুটে গেছেন ডিএলসি, এসডি বা ডিএম'র কাছে। বার বার ডেপুটেশন দিয়ে অনেক আলোচনা, অনেক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সবই প্রহসনে পরিণত হয়েছে। বিগত ৪ বছরে ৪২ জন শ্রমিকের আত্মহত্যা, বিনা চিকিৎসায় শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। লেখাপড়া বন্ধ হয়েছে শ্রমিক পরিবারের ছাত্র ছাত্রীদের। অথচ সরকার নীরব। এদিকে এখানকার বিধায়ক- মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহরে অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে একের পর এক উৎসব। অভিযোগ, ভোটের সময় উদয় হওয়া সাংসদ শ্রমিকদের দুর্দশার সময় নিরুদ্দেশ। তাই বাঁচার জন্য চলছে লড়াই। লড়াই চলছে বি সি এম ইউ' র উদ্যোগে ৯টি ইউনিয়নের জোটবদ্ধ লড়াই।
গত জানুয়ারি মাসে সংযুক্ত নাগরিক কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে নাগরিক কনভেনশন। সেখান থেকে অবিলম্বে মিল খোলার দাবিতে প্রস্তাব গৃহীত হয়। আর এদিনের লড়াই ছিল জানকাবুল করা। সকাল ১০টায় মিল এলাকা থেকে শুরু হয় বিশাল মিছিল। শুধু শ্রমিকরা নয়, বিশাল সংখ্যক মহিলাদের উপস্থিতি জানান দিলো লড়াইয়ে তারাও কোমর বাঁধছেন। শ্রমিক পরিবারের শিশুদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য। প্রায় দু ঘন্টা জিটি রোড অবরোধ করে রাখা হয়।
অবরোধ চলাকালীন অবিলম্বে জুট মিল খুলতে হবে, মিল খোলা নিয়ে কোন টালবাহানা চলবে না, গ্র্যাচুইটি টাকা দেওয়া ইত্যাদি দাবিতে সোচ্চার শ্লোগান ওঠে। পরে চন্দননগর থানার ভারপ্রাপ্ত আই সি বিশাল পুলিশ নিয়ে অবরোধ স্থানে উপস্থিত হন। দফায় দফায় চলে আলোচনা। অবশেষে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শ্রমমন্ত্রীর দপ্তরে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে। এই সময়ের মধ্যে দাবি দাওয়া না মিটলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার কথা জানান নেতৃবৃন্দ।
Comments :0