Farooq Abdullah

জম্মু কাশীরে দ্রুত বিধানসভা ভোটের দাবি জানালেন ফারুক আবদুল্লা

জাতীয়

Farooq Abdullah

জম্মু কাশ্মীরের নির্বাচন কেন বারে বারে পিছিয়ে যাচ্ছে বলে এবারে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। তিনি জানান দেশের অন্য রাজ্যে নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে। অথচ জম্মু কাশ্মীরে আইন শৃঙ্খলা হামেশাই ভালো বলে বিজেপি দাবি করলেও রাজ্যের নির্বাচন বারে বারে কেন পিছিয়ে দেওয়া হয়, তার কোন জবাব তাদের কাছে মেলে না। তিনি বলেন, সময় এসেছে অবিলম্বে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করা উচিত। রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেন আবদুল্লা। জম্মু কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল, রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা বৃদ্ধি, রাজ্যে গণতান্ত্রিক কার্যকলাপ রোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আবদুল্লা। আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এক জোট হয়ে লড়ার কথাও তিনি জানান।
এদিন রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ‌আবদুল্লা সাক্ষাৎকারে বলেন, দীর্ঘদিন হয়ে গেল জম্মু কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে না। আমাদের গণতান্ত্রিক দেশ। প্রতি রাজ্যে সময় মতো নির্বাচন হচ্ছে, অথচ কেন জম্মু কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন করা হচ্ছেনা তার কোনও জবাব নেই।

 

 বিরোধীরা একজোট হয়েই নির্বাচন কমিশনকে রাজ্য বিধানসভা ভোট করার দাবি জানিয়েছে। তার পরেও করতে নির্বাচনের কোনও উদ্যোগ নেই কমিশনের। আসলে কেন্দ্র রাজ্যের নির্বাচন করতে চাইছে না। তাই পিছিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন। তারা রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও অন্যান্য পৌরসভা নির্বাচন করতে চাইলেও বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে  পিছিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে লেফটেন্যান্ট গভর্নর ও তাঁর পরামর্শদাতার নির্দেশে  শাসন ব্যবস্থা চলছে। সেখানে জনপ্রতিনিধিদের কোনও কথা শোনা হয় না। এতে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখ দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হওয়ার পর তার ডিলিমিটেশনের পর জম্মু কাশ্মীরের বিধানসভা আসনের সংখ্যা হয়েছে ৯০। সম্প্রতি জম্মু কাশ্মীর ইউনিটের বিজেপি নেতা রবীন্দ্র রায়না অনন্তনাগে তাদের সভায় বলেছেন জম্মু কাশ্মীর এখন নির্বাচন হলে তারা ৫০টি আসন পাবেন এবং সরকার গঠন করবেন। আবদুল্লা রায়নার এই বক্তব্য উল্লেখ করেই বলেন, বিজেপি নেতারা ভোটে জেতার বিষয়ে এতো যখন নিশ্চিত তবে কেন রাজ্যে বিধানসভা ভোট করা হচ্ছে না তার জবাব দিক।

 


এদিন  রাজ্যে  সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে আবদুল্লা বলেন মোদী  সরকার সবসময় রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধির জন্য ৩৭০ ধারাকে দায়ী করে এসেছে। সেই ৩৭০ ধারা মোদী সরকার বাতিল করা পর  তিন বছর কেটে গেছে। তবু  কোথায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ কমলো? এখনো সন্ত্রাসবাসীরা যথেষ্ট তৎপর রয়েছে রাজ্যে। বা বলা যায় বর্তমানে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ  বেড়েই চলেছে।  
এদিকে সম্প্রতি হিন্দুত্ববাদীদের  দেশবিরোধী বলে তাকে দাগিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, সত্য হলো খুবই তিক্ত বিষয়। যখন সত্য তারা শুনতে চাইবে না তখন বুঝতে হবে তারা সব রকমের ছাপ তোমার গায়ে লাগিয়ে দেবে। তারা তোমায় তখন বলবে তুমি পাকিস্তানি। আমরা তাদের যখন সত্যটা বলি তখন হয় পাকিস্তানি বা  সাম্প্রদায়িক বলে দেয়। তারা এই ভাবেই কাজ করে। তারা কখনোই সত্যটা শুনতে চায় না।

 


এদিকে দেশে গণতন্ত্র বিপন্নের কথা উল্লেখ করে আবদুল্লা বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে এখন বিরোধী দল ও সংবাদ মাধ্যমের  কণ্ঠরোধে ব্যবহার করা হচ্ছে। আগেও তা ব্যবহার হতো। তবে মোদী সরকারের আমলে তার ব্যবহার ১০০ গুণ বেড়েছে বলে তিনি জানান। সংবাদমাদ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ভারতের স্থান ১৮০ দেশের মধ্যে ১৬১ স্থানে চলে গেছে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে একজোট হয়েই লড়তে হবে বলে তিনি জানান। বিজেপি-কে পরাস্ত করতে তার বিরুদ্ধে এক জোট হয়ে বিরোধী দলের প্রার্থী  একের বিরুদ্ধে একজন প্রার্থী দেওয়া উচিত বলে তিনি জানান।  
 

Comments :0

Login to leave a comment