MONDA MITHI | MASTERDA SURYA SEN | RISHIRAJ DASS | NATUNPATA | 2025 MARCH 22

মণ্ডা মিঠাই | অগ্নিপুরুষ মাস্টারদা সূর্য সেন | নীল সরকার | নতুন বন্ধু | নতুনপাতা | ২০২৫ মার্চ ২২

ছোটদের বিভাগ

MONDA MITHI  MASTERDA SURYA SEN  RISHIRAJ DASS  NATUNPATA  2025 MARCH 22

মণ্ডা মিঠাই | নতুন বন্ধু | নতুনপাতা

অগ্নিপুরুষ মাস্টারদা সূর্য সেন

নীল সরকার

                     

    চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অগ্নিপুরুষ সূর্য সেন ১৮৯৪ সালে ২২শে মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় দক্ষিণ রাঢ়ী কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম রাজমনি সেন এবং মায়ের নাম শশী বালা সেন শৈশবে পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন কাকা গৌর মনি সেন এর কাছে মানুষ হয়েছে। সূর্য সেনের ভালো নাম সূর্য কুমার সেন যিনি মাস্টারদা নামে সমধিক পরিচিতি এবং তার ডাকনাম ছিল কালু। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নেতা হিসাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। ১৯৩০ সালে ১৮ই এপ্রিল সংঘটিত মাস্টার সূর্য সেন এর নেতৃত্বে কয়েকজন স্বাধীনতা কামি বিপ্লবীর ব্রিটিশ পুলিশ এবং সহায়ক বাহিনীর চট্টগ্রামে অবস্থিত অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের প্রয়াস। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের সাথে জড়িত ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনে অধীন পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা কামি অসীম সাহসী বিপ্লবীরা। আর সেই বিপ্লবীদের নেতৃত্বে ছিলেন মাস্টারদা সূর্যসেন। সূর্য সেন ছাড়াও এই দলে আরো ছিলেন গণেশ ঘোষ , লোকনাথ বল, নির্মল সেন, অনন্ত সিং, অপূর্ব সেন, অম্বিকা চক্রবর্তী, নরেশ -রায়, ত্রিপুরা সেনগুপ্ত, বিধু -ভূষণ ভট্টাচার্য, শশাঙ্ক শেখর দত্ত, অর্ধেন্দু দস্তিদার, হরি -গোপাল বল, প্রভাত চন্দ্র বল, তারকেশ্বর দস্তিদার, মতিলাল -কানুনগো, জীবন ঘোষাল, আনন্দ গুপ্ত, নির্মল লালা, জিতেন দাশগুপ্ত, মধুসূদন দত্ত, পুলিন চন্দ্র ঘোষ, সুবোধ দে, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, এবং কল্পনা দত্ত। এদের সাথে সুবোধ রায় নামক ১৪ বছরের এক বালক ও ছিলেন।                                        

    সূর্য সেনের পরিকল্পনা ছিল চট্টগ্রাম শহরের অস্ত্রাগার দুটো লুট করা তারপর টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ অফিস ধ্বংস করা আর তারপর সরকারি ও সামরিক বাহিনীর অফিসারদের ক্লাব ইউরোপিয়ান ক্লাবে হামলা চালানো। সেই অভিযানে উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশদের অস্ত্রশস্ত্র লুট করা এবং রেল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। অভিযান শুরু হয় ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল আনুমানিক রাত দশটায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গণেশ ঘোষের নেতৃত্বে একদল বিপ্লবী পুলিশ অস্ত্রাগারএবং লোকনাথ বাউলের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি দল সাহায্যকারী বাহিনীর অস্ত্রাগার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তারা গোলাবারুদের অবস্থান সনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। বিপ্লবীরা সফলভাবে টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ বন্ধ করে দেন। ইন্ডিয়া রিপাবলিকান আর্মি চট্টগ্রাম শাখা এই নামের অধীনে সর্বমোট ৬৫ জন বিপ্লবী সেই বিপ্লবের অংশ নিয়েছিলেন। সফল বিপ্লবের পর বিপ্লবী দলটি পুলিশ অস্ত্রাগারে সমবেত হন এবং সেখানে মাস্টারদা সূর্য সেনকে মিলিটারি স্যালুট প্রদান করা হয়। সূর্য সেন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার ঘোষণা করেন। রাত ভোর হবার পূর্বেই বিপ্লবীরা চট্টগ্রাম শহর ত্যাগ করেন এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে যাত্রা করেন। অল্প কিছুদিন পড়ে পুলিশ বিপ্লবীদের অবস্থান চিহ্নিত করেন। চট্টগ্রাম সেনানিবাস সংলগ্ন জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া বিপ্লবীদের কয়েক হাজার সৈন্য ঘিরে ফেলে ১৯৩০ সালে ২২শে এপ্রিল।  দুই ঘন্টার প্রচন্ড যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর ৭০ থেকে ১০০ জন এবং বিপ্লবী বাহিনীর ১২ জন শহীদ হন। তারা হলেন নরেশ রায়, ত্রিপুরা সেনগুপ্ত, শশাঙ্ক শেখর দত্ত, বিধু ভূষণ দাশগুপ্ত, হরি গোপাল বল, মতিলাল কানুনগো, প্রভাস চন্দ্র বল, নির্মল লালা, জিতেন দাশগুপ্ত, মধুসূদন দত্ত, পুলিন চন্দ্র ঘোষ এবং অর্ধেন্দু দস্তিদার। জালালাবাদ পাহাড়ের যুদ্ধে অংশ নিয়ে পলায়ন করতে সক্ষম হলেও পরবর্তীকালে পুলিশের আক্রমণে দুজন শহীদ হয়েছিলেন আর তারা হলেন অপূর্ব সেন এবং জীবন ঘোষাল।              

সপ্তম শ্রেণী / কল্যাণ নগর বিদ্যাপীঠ ‍‌‌‍

Comments :0

Login to leave a comment