Minor raped at maldah

কালিয়াচকে বন্ধ স্কুলে ঢুকিয়ে মূক-বধির কিশোরীকে ধর্ষণ

জেলা

 ফের দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা। এবার মালদহের কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকে, মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের বিধানসভা এলাকায়। গরিব পরিবারের মূক ও বধির এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রামের একটি স্কুলের ভিতরে সারা রাত ধরে অত্যাচার করা হয়। পরের দিন সকালে স্কুলের একটি ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা।
গোটা ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এলাকায়। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামবাসীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিতর একটি ক্লাসরুমে ওই কিশোরীকে পড়ে থাকতে দেখেন। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জখম অবস্থায় চিকিৎসা চলছে, তার উপরে মূক ও বধির হওয়ায় ওই কিশোরী সেভাবে ঘটনার বিবরণ জানাতে পারেনি। তবে পরিবারের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আকার-ইঙ্গিতে সে বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে, তিন জন অত্যাচার চালিয়েছে তার উপর। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই কিশোরী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরপরেই পরিবারের তরফে মোথাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ঘটনাটি বুধবার রাতে ঘটলেও তা এদিন সকালে জানতে পারে সংবাদ মাধ্যম। পরে পুলিশও ঘটনাটির কথা স্বীকার করে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীকে বুধবার রাত থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বাড়ির সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতা কিশোরীর মা এদিন জানিয়েছেন, ‘‘বুধবার রাত থেকেই মেয়ের খোঁজ পাইনি আমরা। সারা রাত খুঁজেছি। মেয়ে তো কথাও বলতে পারে না। ফলে কোথায় গেছে, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। পরের দিন সকালে গ্রামের লোকজন প্রাইমারি স্কুলের ভিতর থেকে মেয়েকে খুঁজে পায়। আমার মেয়ের উপর তিন-চার জন অত্যাচার করেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই। আমার বোবা মেয়েটার উপরেও ওরা এভাবে অত্যাচার করেছে, ওরা মানুষ?’’ হাউহাউ করে কাঁদছেন দিনমজুর পরিবারের ওই জননী।
যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিতর থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার প্রধান শিক্ষক এদিন জানিয়েছেন, ‘‘আমরা তো স্কুল ছুটির পরে তালা বন্ধ করে চলে যাই। পরের দিন সকালে এসে জানতে পারি। দু’দিন ধরে স্কুলে পুলিশ এসেছে। স্কুলে তো পাঁচিল আছে। তালাও অক্ষত আছে। তার মানে ওই মেয়েটিকে জোর করে কেউ এখানে পাঁচিল টপকে হয়তো নিয়ে এসেছিল। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। বিডিওকে স্কুলের তরফে চিঠি দিয়েছি। মোথাবাড়ি চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককেও জানিয়েছি চিঠি দিয়ে।’’
গোটা ঘটনাকে তীব্র ধিক্কার জানিয়ে সিপিআই(এম)’র তরফে অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। এদিন রাতেই ডিওয়াইএফআই মালদহ জেলা সম্পাদক অরূপ পোদ্দার সহ যুবদের একটি প্রতিনিধিদল ওই কিশোরীর বাড়িতে যায়। যুব প্রতিনিধিরা মা-বাবাকে আশ্বস্ত করেন, অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়েছে। নিজের বিধানসভা এলাকাতেই এমন ঘটনা ঘটায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও ওই নির্যাতিতার বাড়িতে যান।
তবে ঘটনার পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও একজন অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করে উঠতে পারেনি পুলিশ। এক জনকে জেরার জন্য আটক করেছিল পুলিশ, যদিও পরে তাকে ছেড়ে দেয়। মোথাবাড়ি থানার পুলিশ উলটে জানিয়েছে, ‘‘গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। দলবদ্ধ ধর্ষণ কি না, তাও দেখা হচ্ছে।’’

 

Comments :0

Login to leave a comment