অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন ১০ বছরে ৩ কোটি কাছাকাছি নতুন বাড়ি বানানোর অর্থ দিয়েছে কেন্দ্র। ১ ফেব্রুয়ারি ভাষণ দিয়েছিলেন সীতারামন। চার দিন বাদে, সোমবার, লোকসভায় মোদীর দাবি ৪ কোটি বাড়ি বানানো হয়ে গিয়েছে!
মোদী যদিও আবাস প্রকল্পে এই সংখ্যারই উল্লেখ করেছেন আগেও। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কার তথ্য সঠিক। মোদী সোমবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ সূচক ভাষণে বলেছেন কংগ্রেসের এই সংখ্যায় বাড়ি বানাতে ১০০ বছর লেগে যেত। এদিনও ‘মোদী কী গ্যারান্টি’-র উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশকে বিশ্বের ৩ নম্বর অর্থনীতিতে তুলে নেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি।
আগামী অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বরাদ্দ হয়েছে ৮০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। ২০২৩’র বাজেটে সীতারামন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৭৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছিলেন। ২০২২’র তুলনায় বরাদ্দ বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৬৬ শতাংশ। মোদী এবং সীতারামনকে সমস্যায় ফেলেছে সংশোধিত বাজেট।
চলতি অর্থবর্ষে বরাদ্দের কতটা খরচ হলো তার হিসেব দেয় সংশোধিত বাজেট। দেখা যাচ্ছে, আগের বাজেটে ৭৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা হলেও বাস্তবে মাত্র ৫৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা কম খরচ করেও লক্ষ্যে পৌঁছানো যাচ্ছে কী ক’রে এই ধাঁধার জবাব দেননি মোদী বা সীতারামন।
কেবল বিরোধী নন, সামাজিক আন্দোলনেরও বিভিন্ন অংশের বক্তব্য তথ্য গরমিল আছে বলেই জনগণনা করাননি মোদী। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর প্রতি দশ দশ বছর অন্তর জনগণনার রীতি এবারই প্রথম ভাঙা হয়েছে। কোভিড মহামারীর যুক্তিতে প্রথমে সমীক্ষা পিছিয়ে দেওবা হয়। তারপর আর জনগণনা করার সময়ও ঠিক করা হয়নি। জণগণনা বা সেন্সাস কেবল জনসংখ্যারই হিসেব দেয় না। কতজনের পাকা বাড়ি রয়েছে, কাঁচা বাড়ির বাসিন্দা কত, পানীয় জলের সুবিধা কত পরিবারে আছে, এ সবেরই হিসেব উঠে আসে সেন্সাসে।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, এতই সাফল্য হলে জনগণনা বা অন্যান্য সরকারি সমীক্ষা বন্ধ করে রখা হয়েছে কেন। বামপন্থীরা দেখিয়েছেন যে দারিদ্র, ক্ষুধার মাপকাঠিতে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত পিছনে চলে গিয়েছে। ফলে বিশ্বের তিন নম্বর কেন, এক নম্বর অর্থনীতি হলেও এই বিপুল অংশের জীবনমানের হেরফের হবে না।
Comments :0