MUKUL ROY

মুকুলের দিল্লি যাত্রায় ফের
সামনে নীতিহীনতার রাজনীতি

রাজ্য

MUKUL ROY সংগৃহীত পুরনো ছবি।

মুকুল রায়ের দিল্লিযাত্রা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রীও। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা ব্যানার্জির ঘোষণা, মুকুল রায় বিজেপি’রই বিধায়ক। সেই সঙ্গেই প্রশ্ন উঠছে, তা’হলে ২০২১’র নির্বাচনের পর উত্তরীয় দিয়ে তৃণমূলের সাংবাদিক সম্মেলনে সপুত্র বরণ করে নেওয়া হয়েছিল কাকে? সেই ‘প্রত্যাবর্তন’ অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো এবং তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি নিজে। 

মুখ্যমন্ত্রীকে এদিন আরেকটি প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে তৃণমূলেরই আরেক প্রাক্তনী, অধুনা বিজেপি নেতা এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ নিয়ে ছিল সেই প্রশ্ন। 

শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, জাতীয় দলের স্বীকৃতি খোয়ানোর পর তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি একাধিক ফোন করেছেন বিজেপি’র ‘দু নম্বর’ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে। মমতা পালটা বলেছেন, ‘‘এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেব।’’ অমিত শাহের প্রতিক্রিয়া যদিও বুধবার বিকেল পর্যন্ত মেলেনি। 

সোমবার দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন একসময়ে তৃণমূলের দু’নম্বর মুকুল রায়। নারদ কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছিল তৃণমূলের যে নেতাদের, তাঁদের অন্যতম মুকুল ২০১৭’তে দল ছেড়ে বিজেপি’তে যোগ দেন। ২০২০’তে মুকুলকে জাতীয় সহ সভাপতি ঘোষণা করে বিজেপি। ২০২১’র নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে মুকুল রায় বিধায়ক পদে জয়ী হলেও বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যায়। বিধানসভা নির্বাচনের কিছু পরেই মিডিয়া আলোকিত প্রত্যাবর্তনও হয় তৃণমূলে। 

মুকুল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে কেউ দিল্লি যেতে পারেন। তা ছাড়া মুকুল বিজেপি বিধায়কও। তিনি কোথায় যাবেন তাঁর ব্যাপার। 

ঘটনা হলো, বিজেপি ছাড়লেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি মুকুল রায়। তৃণমূল ছাড়তে বলেনি, বরং, বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে তাঁকে চেয়ারম্যান করা হয় ‘বিজেপি বিধায়ক’ আখ্যা দিয়ে। ২০২২-এ সেই পদ ছাড়েন তিনি। 

বামপন্থীরা বিভিন্ন সময়েই বলেছেন যে রাজনীতিতে নীতিহীনতার একের পর এক নজির এ রাজ্য দেখেছে তৃণমূলের মেয়াদে। তার অন্যতম মুকুল রায় কাণ্ড। বিরোধী দলের বিধায়ক কিন্তু তৃণমূলে যোগ দিয়েছে এমন কাউকেই বেছে নেওয়া হচ্ছে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে। এর আগে, তৎকালীন, কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইঞার ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে। দলত্যাগ চলছে, নিজেদের দলে টেনে আনা হচ্ছে, কিন্তু অন্য দলের বিধায়ক পদ ছাড়তে বলা হচ্ছে না! 

বুধবার সংবাদমাধ্যমে মুকুলকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্তিত্ব খানিক বাড়িয়েছেন দলেরই কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তবে বামপন্থীদের বক্তব্য, তৃণমূলের এসবে হেলদোল নেই। নীতিহুীনতার রাজনীতিতে অভ্যস্ত এই দল। রাজ্যে অবাধ দুর্নীতির পিছনেও নীতিহীনতার রাজনীতির ভূমিকা রয়েছে। অবাধ দলত্যাগের এই নীতিহীনতায় ইন্ধন দিয়ে চলেছে বিজেপি। 

মুকুল রায় জানিয়েছেন যে তিনি বিজেপি’তে যোগ দিচ্ছেন। তাঁর মানসিক স্থিতিশীলতা ঠিক নেই বলে দাবি করেছে পরিবার। অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। 

Comments :0

Login to leave a comment