ELECTORAL BOND SANTIAGO MARTIN

কেন্দ্রের নোটিশের পর ‘লটারি কিং’ কিনেছেন ১৩০০ কোটি টাকার বন্ড

জাতীয়

ফিউচার গেমিং সংস্থার এই দপ্তরের ছবি ঘুরছে সোশাল মিডিয়ায়। এই সংস্থা কী করে সবচেয়ে বেশি টাকার বন্ড কিনল, উঠছে সে প্রশ্নও।

২০১৯’র ২৩ সেপ্টেম্বর সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্যে রাজ্যে চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার পর থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থাই সবচেয়ে বেশি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে। 
সংস্থার মালিক স্যান্টিয়াগো মার্টিন লটারি ব্যবসা মহলে ‘লটারি কিং’ বলে পরিচিত, বলছে একাংশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তখন চিঠি পাঠিয়েছিল পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গকেও। নতুন করে মার্টিন খবরে এসেছে নির্বাচনী বন্ডের অসম্পূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসার পর। 
বৃহস্পতিবার রাতে স্টেট ব্যাঙ্কের দেওয়া নির্বাচনী বন্ডের অসম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। কোন সংস্থা কত টাকার বন্ড পেয়েছে দেওয়া হয়েছে একটি তালিকায়। আরেকটি আলাদা তালিকায় দেওয়া হয়েছে কোন রাজনৈতিক দল কত বার কত টাকা পেয়েছে। কিন্তু দু’টি তালিকার কোনোটিতেই বন্ডের নম্বর উল্লেখ করা নেই। ফলে নির্দিষ্ট করা যাচ্ছে না ঠিক কোন সংস্থা কোন দলকে কত টাকা দিয়েছে।
অসম্পূর্ণ তথ্য দেওয়ায়,  শুক্রবার, ফের সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। পূর্ণ তথ্য দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু রাজনৈতিক দলের তহবিলে গোপন বন্ডে টাকা দিয়ে ব্যবসায়িক সুবিধা নেওয়ার ধরন ফাঁস হয়ে গিয়েছে অসম্পূর্ণ তালিকাতেই। তার অন্যতম নমুনা স্যান্টিয়াগো মার্টিনের ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’র লেনদেন। 
২০১৯’র ওই নির্দেশিকায় রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল যে লটারি ব্যবসা বিষয় আইন মেনে ব্যবসা করছে না এই সংস্থা। প্রতিটি টিকিটে আলাদা নম্বর দেওয়া নেই। জানানো হয় যে দীর্ঘ সময় কলকাতাতে ছিল এই ব্যবসায়ী, যার অবৈধ সম্পত্তির অঙ্ক ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যবসায়িক লেনদেন অস্বচ্ছ বলে সরকারের ঘরে জমা পড়ছে জিএসটি বাবদ অর্থ। কেরালায় সিকিম স্টেট লটারির ব্যবসাও চালিয়েছে অবৈধ কায়দায়। সিবিআই’র তদন্তের আওতায় রয়েছে মার্টিনের লেনদেন।
কিন্তু এত অভিযোগের পরও অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রক ব্যবসায়ীকে ধরপাকড় করেনি। সিবিআই বা ইডি হাত গুটিয়ে থেকেছে। আর এই পর্বেই, ২০১৯ থেকে ২০২৪’র মধ্যে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছে এই সংস্থা। 
লক্ষ্যণীয়, পশ্চিমবঙ্গে ডিয়ার লটারি কেলেঙ্কারি ঘিরে কেন্দ্রীয় সংস্থার তোলা অভিযোগের ধরনের সঙ্গে মার্টিনের বেনিয়ম ঘিরে অভিযোগের মিল রয়েছে। ডিয়ার লটারিতে ঘুরপথে কালো টাকা সাদা করা হয়েছিল পুরস্কার বিজয়ী দেখিয়ে। 
কমিশন প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী নির্বাচনে বন্ডে মোট ১২ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা কেনা হয়েছিল। তার ৪৭.৪৬ শতাংশ অর্থ গিয়েছে বিজেপি’র ঘরে। দ্বিতীয় সুবিধা প্রাপক রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্টে বারবার মামলা এবং রায়ের পরও যে দল মুখ খুলছে না। আগাগোড়া লড়েছে সিপিআই(এম)। তৃণমূল এক রাজ্যে সরকার চালিয়ে পেয়েছে ১২.৬০ শতাংশ অর্থ। আর সারা দেশে সরকার বা বিরোধী আসনে বসেও কংগ্রেস পেয়েছে তার চেয়ে কম ১১.১৩ শতাংশ।

Comments :0

Login to leave a comment