Post Editorial Medicine

চাই কাজের নিশ্চয়তা,ওষুধের মূল্যনিয়ন্ত্রণও

জাতীয় উত্তর সম্পাদকীয়​

শান্তনু চট্টোপাধ্যায়


মেডিক্যাভল ও সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভরা ২০ ডিসেম্বর, তাদের আট দফা দাবির ভিত্তিতে একদিনের ধর্মঘটে শামিল হচ্ছেন। তাদের সর্বভারতীয় ফেডারেশন, এফ এম আর এ আই এর সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই ধর্মঘট। ধর্মঘটের আট দফা দাবির মধ্যে রিপ্রেজেন্টেটিভদের নিজস্ব দাবি দাওয়া ছাড়াও সাধারণ মানুষের স্বার্থে ওষুধের দাম কমানো এবং সমস্ত ধরনের ওষুধের ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ওপর থেকে জিএসটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করার দাবিটি জোরালো ভাবে রাখা হচ্ছে। এফএমআরএ আইএ’র হীরক জয়ন্তী বর্ষে সারা দেশজুড়ে যে লাগাতার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল তা শেষ হবে এই ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে।
ভারত এখন সারা বিশ্বে পণ্য উৎপাদনে প্রথম সারির দেশ। সমস্ত রকম ভোগ্য পণ্য ছাড়াও দেশের তথা বিদেশের মানুষের জন্য ওষুধ প্রচুর তৈরি হয় দেশে। এই প্রত্যেকটি জিনিসই উচ্চ মানের এবং উন্নত দেশগুলির পণ্যগুলিকে গুণগতভাবে টক্কর দিতে পারে এমনই। এই বিপুল পরিমাণ পণ্য কনজিউমারদের কাছে পৌঁছাতে গেলে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন যথেষ্ট নয়। মানুষের কাছে পৌঁছাতে গেলে মানুষকে লাগে। আবার ওষুধ সরাসরি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রোগীর কাছে বিক্রি করা আইন বিরুদ্ধ; চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে তা রোগীর কাছে পৌঁছায়। কোম্পানির তৈরি ওষুধের গুণাগুণ সম্বন্ধে একমাত্র চিকিৎসকেরাই বুঝতে পারেন। তাই তাদের কাছে ওষুধের গুণাবলী পৌঁছে দেওয়ার জন্যও মানুষের দরকার পড়ে। সেই মানুষেরাই হলো মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। ১৯৭৬ সালের সেলস প্রমোশান এমপ্লইজ (কন্ডিশন্স অব সার্ভিস) অ্যাক্ট এবং ১৯৫৪ সালের ড্রাগস অ্যান্ড ম্যাজিক রিমেডিজ (অবজেকশনেবল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট) অ্যাক্টের মাধ্যমে এই বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাজের বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বিপণনকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে কেন্দ্রীয় সরকার আজ পর্যন্ত এই ধারা প্রয়োগ থেকে বিরত থেকেছে, যার  সুবিধা কোম্পানির মালিকেরা  নিচ্ছে ,বিক্রয়ের দায় সম্পূর্ণভাবে বিপণন কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে।  সারা দেশে প্রায় তিন লক্ষাধিক বিপণন কর্মী কাজ করেন, যার পঁচানব্বই শতাংশই প্রাইভেট সেক্টরে। বিপণন কর্মীরা যেহেতু মুখ্যত প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করেন, তাদের ক্ষেত্রে শোষণ প্রায় লাগামহীন। এছাড়াও মোদী সরকারের ভ্রান্ত ও কর্পোরেট বান্ধব ওষুধ নীতির ফলে আজ দৈনন্দিন এবং আপৎকালীন ওষুধের দাম আকাশছোঁয়া, সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। এর বিরুদ্ধেও এই ধর্মঘট দেশ জুড়ে।  
পৃথিবীজুড়ে ভারতের সুনাম তার ওষুধ শিল্পের স্বনির্ভরতা এবং উচ্চ গুণমানের ওষুধ তৈরি করার ক্ষমতার জন্য। ভারতীয় পেটেন্ট অ্যাক্ট ১৯৭০-এর ওপরে নির্ভর করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশজ ওষুধ শিল্প গড়ে ওঠে। এতে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত  ওষুধ কোম্পানিগুলির বিরাট অবদান ছিল।  আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের বেঙ্গল কেমিক্যাল, তৎকালীন  সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় তৈরি আই ডি পি এল, দেশের প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ব ওষুধ কোম্পানি হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিকস লিমিটেড ইত্যাদি সরকারি কোম্পানিগুলি উচ্চ গুণমান সম্পন্ন ওষুধ ভারতের মানুষের জন্য কম দামে তৈরি এবং সরবরাহ করার গুরুদায়িত্ব একসময় যত্নের সাথে পালন করেছে। এর পাশাপাশি ওষুধের ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরের বিকাশও ভালোরকম হয়েছে। ওষুধের দাম ততদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের মোটামুটি আওতার মধ্যেই ছিল। ভারতের ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার বা ডিপিসিও ছিল মজবুত। যার ফলে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিরা এবং দেশজ একচেটিয়া ওষুধ কোম্পানি (Indian Monopoly House) গুলি ইচ্ছা থাকলেও খুশি মতো দাম বাড়াতে পারত না। ১৯৯০-এর পরে একদিকে উদারীকরণের আদর্শ মেনে সরকারি ওষুধ কোম্পানিগুলিকে দুর্বল করা শুরু হলো, অন্যদিকে পেটেন্ট আইনের পরিবর্তন ঘটিয়ে মাল্টিন্যাশনালদের একচেটিয়া মুনাফার রাস্তা খুলে দেওয়া হলো। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওষুধের দাম বাড়তে শুরু করল। মোদী সরকার মূল্য নিয়ন্ত্রণের অন্তর্গত ওষুধগুলির দাম নিয়মিত বাজারদর অনুযায়ী বাড়ানোর যথেচ্ছ অনুমতি দেওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে। 
মোদী সরকারের রাজস্বনীতির ফলেও ওষুধের দাম ভীষণভাবে বেড়ে গেছে আগের থেকে। ভারতের মতো পিছিয়ে পড়া দেশে যেখানে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্রসীমা বা তার নিচে বসবাস করেন, এবং যেখানে প্রতি বছর ওষুধ কিনতে গিয়ে মানুষকে জেরবার হতে হয়, সেখানে এই সরকার তিন পর্যায়ে জিএসটি ধার্য করেছে ওষুধের এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের ওপর; ৫%, ১২% এবং ১৮%। ওষুধে বা চিকিৎসা সরঞ্জামের ওপর ধার্য জিএসটি, অন্য অনেক পণ্য যা কিনা অত জরুরি নয়, তার থেকে অনেক বেশি। সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে ওষুধ কিনতে গিয়ে অন্যদিকে সরকারি কোষাগার ফুলে উঠছে ওষুধের রাজস্বের টাকায়। এই দুইয়ের বিষময় ফল জনগণ হাতেনাতে পাচ্ছে। ওষুধের দাম ভয়ঙ্কর রকমের উর্ধ্বমূখী। কোনও গুরুতর অসুখে পড়লে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে মানুষকে।
দেশে নব্বইয়ের দশক থেকে চেষ্টা চলেছে শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য যে আইন কানুন আছে তা পালটে ফেলার।  শিল্পবিরোধ আইনকে পরিবর্তন করার জন্য অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে দ্বিতীয় জাতীয় শ্রম কমিশন তৈরি করা হয়েছিল। ২০০৪ সালে ইউ পি এ-১ এর সরকার গঠনের পর তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু শ্রমিকদের কোণঠাসা করার আর কর্পোরেটদের সুবিধা করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ক্রমাগত চলেছে। মাঝখানে ইউপিএ সরকার বামপন্থীদের অভ্যন্তরীণ চাপে এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদী সরকার প্রথম দিন থেকেই এই অপচেষ্টায় মত্ত। তাদের কর্পোরেট ভজনার প্রথম অর্ঘ্য হিসাবে কোভিড সময়কালে প্রায় বিরোধী শূন্য পার্লামেন্টে লেবার কোডগুলি পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। এতে মালিকদের শোষণের সুযোগ এবং সুবিধা দুইই ভয়ঙ্কর বেড়ে গেছে। বিপণন কর্মীরাও এর বাইরে নন। 
এফএমআরএআই-এর বহুদিনের দাবি বিপণন কর্মীদের জন্য কাজের নিয়মাবলী তৈরি করতে হবে এবং তা হতে হবে আইনসিদ্ধ। এই বিধিবদ্ধ কাজের নিয়মাবলী বা Statutory Working Rules না থাকার দরুন বিভিন্ন মালিক বিভিন্ন রকম কাজের নিয়ম ইচ্ছামত তৈরি করে সেই অনুযায়ী বিপণন কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করছে। সে কাজ বাস্তবে করা না গেলেও দিনের শেষে তার হিসাব কড়ায় গন্ডায় চুকিয়ে দিতে হচ্ছে। আর না করতে পারলেই, ধমকি এবং হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, লিখিত এবং মৌখিক। কথায় কথায় কাজের রিপোর্ট করার ওয়েব পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া, বেতন কেটে নেওয়া বা আটকে দেওয়া, ভাতা আটকে দেওয়া, ইত্যাদি এই পেশায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর প্রতিবাদ করলেই ট্রান্সফার, ছাঁটাই ও অন্যান্য শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। 
সেলস বা বিক্রয় একটি শিল্প। সব শিল্পের মতই এতেও শ্রমিকদের ভূমিকা নির্দিষ্ট এবং পরিমিত। উৎপাদনের জন্য তাকে যতটুকু দরকার শ্রমিকের ভূমিকাও সেটুকুই। মাসের শেষে বিক্রি যাতে হয় তার জন্য সমস্ত কোম্পানিতেই অনেক মানুষ থাকেন। অনেক বিভাগ বা ডিপার্টমেন্ট থাকে, তাতে অনেক ম্যানেজারও থাকেন। কোম্পানির পণ্যের সরবরাহ, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ইত্যাদি সমস্ত কিছুই বিক্রয়ের সাথে জড়িত। বিক্রয় শিল্পের ক্ষেত্রেও বিপণন কর্মীদের যে কাজটুকু করার কথা তা নিয়ে তার দায় থাকতেই পারে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে মাসের শেষে সেলস ক্লোজিং নামক একটি বিষম ব্যাপারের মাধ্যমে যদি টার্গেটটি না হয় তাহলে সমস্ত দায়ভার হতভাগ্য বিপণন কর্মীটির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবং তার জন্য অসহনীয় মানসিক উৎপীড়ন তো চলেই, চাকরিও আকছার খোয়াতে হচ্ছে শ্রমিককে।  সেলস ক্লোজিং-এর দিনগুলিতে প্রচণ্ড মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বাইক দুর্ঘটনায় পড়তে হতে হচ্ছে, বিশেষ করে নবীন কর্মীদের। সাম্প্রতিককালে আত্মহত্যার রাস্তাও বেছে নিচ্ছে এই তরুণ কর্মীরা সেলস টার্গেট না করতে পেরে। মোদ্দা কথা সেলস যা কিনা বহুরকম বিষয়ের ওপর নির্ভর করে তা বিপণন কর্মীদের পেশাগত শর্তাবলি বা সার্ভিস কন্ডিশনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একথা সর্বজনবিদিত যে মোদী সরকার ভারতবর্ষকে একটি নজরদারি রাষ্ট্রে পরিণত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। আধার কার্ডের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ফোন নাম্বার, প্রভিডেন্ট ফান্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদির জুড়ে দেওয়ার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে করা জনস্বার্থ মামলায় যে রায় দেওয়া হয় (Puttuswamy Judgement) তাকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে সরকার তার ব্যক্তি গোপনীয়তা (Privacy) হরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারতের কর্পোরেট শক্তিও তাদের বিপণন কর্মীদের নজরদারির নাগপাশে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতে উদ্যত হয়ে পড়েছে। আর এই কাজে হাতিয়ার হয়েছে ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন ডিজিটাল গ্যাজেট, বিশেষত মোবাইল ফোন, আই প্যাড ইত্যাদি। জিও ট্যাগিং-এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত লাইভ লোকেশন মালিককে পাঠাতে হচ্ছে, কটি কাস্টমারের সাথে দেখা করা গেল, কটি অর্ডার পাওয়া গেল, কতক্ষণ একটি কাস্টমারের কাছে সময় কাটানো হলো সমস্ত তথ্য মালিকের লাছে নিমেষের মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছে আর তার ভিত্তিতে বিপণন কর্মীর কাজের মূল্যায়ন হয়ে যাচ্ছে। ফিল্ডে বা বাইরের জগতে কাজ করার সুবিধে অসুবিধে, রাস্তাঘাটের সমস্যা কোনও কিছুই ধর্তব্যের মধ্যে আনা হচ্ছে না। মেডিক্যারল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও জটিল। 
আরেজকটি বিষয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সেখানে যাতায়াত এবং বিপণনের কাজ করার আইনি অধিকার ভারতের পার্লামেন্টে প্রণীত আইনে স্বীকৃত। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে সরকারের করা এই আইনকে ভাঙ্গতে সরকার নিজেই উদ্যত হয়ে মেডিক্যাবল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা দান করে চলেছে। ইতিমধ্যে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিকর্তা (Director General of Health Services) কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ সমস্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিকূলতা তৃণমূল পরিচালিত সরকারও সৃষ্টি করেছে। এ ব্যাপারে এফএমআরএআই তথা রাজ্যে ডব্লিউবিএমএসআরইউ বারবার এর নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে। 
ফার্মাসিউটিক্যাল বা ভোগ্যপণ্যের বড় কোম্পানিগুলিতে বিপণন কর্মীদের ক্ষেত্রে আইনি যে সব সুযোগ- সুবিধে রয়েছে তা মেনে চলার কথা বললেই মালিকের ভয়ঙ্কর গোঁসা হয়। শ্রম আইন তো তারা মানবেই না, উলটে বিপণন কর্মীদের মধ্যে ক্রমাগত বিভিন্ন বৈষম্যের সৃষ্টি করে যত বেশি পারা যায় আইনকে বেপরোয়াভাবে লঙ্ঘিত করে চলেছে মালিকেরা। সেলস প্রমোশন অ্যাক্ট অনুযায়ী নিয়োগপত্র তারা দেয় না, কাজের কোনও সময় সীমা নেই, অন্যান্য যে সমস্ত আইন কানুন যা এই কর্মীদের ন্যায্য পাওনা তা থেকে বছরের পর বছর বঞ্চিত করে চলে এদের। এমনকি মাতৃত্বকালীন যে ছুটি মহিলা বিপণন কর্মীদের প্রাপ্য তা থেকেও তাদের নির্লজ্জের মতো হামেশাই বঞ্চিত করা হয়ে থাকে। আর এই সমস্ত কিছুতে এই মালিকদের সমস্ত বেআইনি কাজের সাকরেদ (Partner in Crime) হলো কেন্দ্রের তথা রাজ্যের সরকার।
১৯৬৩ সালে এফএমআরআই’র প্রতিষ্ঠার পর থেকে চব্বিশটি ধর্মঘট করেছে ভারতের ফিল্ডকর্মীরা। আগামি ২০ ডিসেম্বরের ধর্মঘট ২৫তম সর্বভারতীয় পূর্ণ দিবস ধর্মঘট। আগে যে চব্বিশ বার ধর্মঘটে গেছে বিপণন কর্মীরা তাতে লাগাতার দুই দিন, তিন দিনের ধর্মঘট ছিল। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে রিলে ধর্মঘটও করা হয়েছে আইনি অধিকার সহ জনমুখী স্বাস্থ্য ও ওষুধ নীতির দাবিতে। এমনকি পাঁচ দিনের লাগাতার ধর্মঘটও পালন করেছে বিপণন কর্মীরা। কেন্দ্রীয় সরকারের হেলদোল নেই, মালিকপক্ষের শোষণ ও লাঞ্ছনা তাই বিরামহীন। বর্তমান সরকারের প্রকাশ্য কর্পোরেট ভজনা আর শ্রমিক বিরোধী নীতিতে তারা আরও বলীয়ান হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল দুনিয়ায় কাজের বোঝা সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। সংগঠনের ষাটতম বছরে তাই আবার পথে নামতে হচ্ছে পথের কর্মচারীদের।

Comments :0

Login to leave a comment