মুক্তধারা
গল্প
বন্ধু
মৃদুল পাল
টাটকা এবং পাকা দুই বন্ধু। লোহা-টিন-প্লাষ্টিকের ভগ্নাবশেষ কুড়িয়ে বিক্রি করে পেটে তালা দেয়।দুজনের বয়স আনুমানিক চোদ্দ কিম্বা পোনেরো।
সেদিন দুজনেই রোজনামচার কাজ সেড়ে বিজয়া সন্মিলনীর অনুষ্ঠান দেখতে গেছে।রাস্তায় লোকে লোকারণ্য,খেলনা বন্দুকের ধাস ধাস শব্দ,বাঁশির শব্দ,সিভিক ভল্টিয়ারের হুইসেলের আওয়াজ সব মিলে সন্ধেটাকে জাকযমক করে তুলেছিল। দূরে সাংস্কৃতিক মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে বাংলা গান।এরেই মধ্যে পাকা এবং টাটকা দুজনেই গিয়ে দাঁড়ালো একটি অস্থায়ী মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে।দোকানের সামনে কিছু পাত্রে জিলাপি,খুরমা,ভূজিয়া,খাস্তা গজা সাজানো রয়েছে।টাটকা দোকানীকে একটি
জিলাপি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলো।কিন্ত দোকানী একপিস জিলাপি বিক্রি করবে না।তার পাশে পাকা গিয়ে দাঁড়ায়।উপায়ন্তর হয়ে টাটকাকে আঢ়াইশো গ্রাম জিলাপি
নিতে হলো।জিলাপির পেকেটটি হাতে নিয়ে টাটকা ইষদুষ্ণ জিলাপিতে এক কামড় দেয়।অন্য খদ্দের আসাতে দোকানীর ধ্যান নতুন খদ্দেরদের দিকে যায়।পাকা সে যায়গায় দাঁড়িয়েই জিলাপি চিবোচ্ছে।হঠাৎ দোকানীর চোখে পড়লো যে টাটকা তার দোকানের সামনে থেকে জিলাপির মূল্য না চুকিয়ে উধাও হয়ে গেছে।গলা ডিঙিয়ে এদিক ওদিক তাকানোর সময় সে টাটকাকে দেখতে পায়।দোকান থেকে হরিণী দৌড় দিয়ে দোকানী পেছন থেকে টাটকার গলায় থাবা মেরে ধরে।
-এই খানকির ছেলে,জিলাপির টাকা না দিয়ে কোথায় পালাচ্ছিস?
দোকানী টাটকাকে প্রহার করার জন্য উদ্যত হয়।তখনেই পেছন থেকে দোকানীর স্যান্ডো গেন্জি টান দিয়ে পাকা বলে,"ওকে মারছো কেন?আমিতো রয়েছি তোমার টাকা দেওয়ার জন্য।ছেড়ে দাও ওকে।"
দোকানী পেছন দিকে ঘুরে তাকায়।সে পাকাকে দেখতে পায়।আর আমি এক বন্ধুকে।
Comments :0