Gurgaon Arrest Editor

ঘৃণাভাষণের মুখপত্র ‘সুদর্শন নিউজ’-র সম্পাদক গ্রেপ্তার গুরগাঁওয়ে

জাতীয়

নুহতে হিংসায় এভাবেই আগুন জ্বলেছিল।

টুইটে লিখেছিলেন কাতারের ‘আল জাজিরা’ সংবাদ প্রতিষ্ঠানের চাপে কাজ করছেন গুরগাঁয়ের পুলিশ কমিশনার। চাপে পড়েই নুহতে হিংসার দায়ে হিন্দুত্ববাদীদের গ্রেপ্তার করছেন। জানা গিয়েছে, উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রচারের অভ্যস্ত ‘সুদর্শন নিউজ’-র গুরগাঁওয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

এর আগে সুদর্শন টিভি প্রচার করেছিল যে রেসিডেন্ট এডিটর মুকেশ কুমার নিখোঁজ। শনিবার বলা হয়েছে যে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে গুরগাঁও পুলিশ। সুদর্শন টিভি’র তরফে গুরগাঁয়ের পুলিশ কমিশনার কলা রামচন্দ্রনকে নিশানা করে আক্রমণ করা হয়েছে। 

ঘৃণা ভাষণ ছড়ানোর জন্য বারবার বিভিন্ন অংশের ক্ষোভের মুখে পড়েছে ‘সুদর্শন নিউজ’। কিন্তু উগ্র হিন্দুত্ববাদী শক্তির মুখপত্রের কাজ করায় হরিয়ানার বিজেপি সরকার বা কেন্দ্র কোনও ব্যবস্থা কোনওদিন নেয়নি। ফলে গ্রেপ্তারি আদৌ হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও রয়েছে। ঘৃণা ভাষণ এবং ধর্মের নামে বিদ্বেষের রাজনীতির বিপক্ষে থাকা বহু অংশ বিস্মিতও হয়েছে গুরগাঁও পুলিশের এমন তৎপরতায়।  

গুরগাঁও পুলিশ গ্রেপ্তারির খবর স্বীকার করেনি। তবে ‘আল জাজিরা’-র চাপে পড়ে হিন্দুত্ববাদীদের গ্রেপ্তারির খবরের প্রতিবাদ করেছে বিবৃতি দিয়ে। পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কারও চাপে পড়ে কোনও অংশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা একেবারের ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।  

মুকেশ কুমার এবং সুদর্শনটিভি’র প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয় যে কাতারের আল জাজিরা টিভি সরাসরি পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে চাপ দিচ্ছে। তার জেরে উগ্র হিন্দুত্বাবাদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। 

হরিয়ানার নুহতে সাম্প্রদায়িক হিংসায় নিহত হয়েছেন ৬ জন। গুরগাঁও লাগোয়া এই জেলায় হিংসা ছড়ানো হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দলের মিছিল থেকে। বিভিন্ন অংশের আশঙ্কা সত্ত্বেও মিছিল আটকায়নি পুলিশ। অস্ত্র হাতে মিছিল থেকে মুসলিম সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে হুমকি চলতে থাকে। মুসলিম প্রধান নুহ সহ রাজস্থান সীমান্তবর্তী মেওয়াত অঞ্চলে একের পর এক খুন হয়েছে গোরক্ষার নামে। পুলিশ খুনিদের ধরেনি। একাধিক হত্যায় অভিযুক্ত মনু মানেসর ওই মিছিল ঘিরে মারাত্মক উসকানি ছড়ায়। কিছু ছবিও ছড়িয়ে পড়ে যেখানে অস্ত্র হাতে মনু এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দেখা গিয়েছে। ফলে গোটা ঘটনা ঘিরে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ রয়েছে বড় অংশে। সাম্প্রদায়িক হিংসা রোখার নামে গত কয়েকদিন গরিবের বস্তি বুলডোজার চালিয়ে উচ্ছেদ করছে হরিয়ানা সরকার।

সুদর্শন টিভি’র প্রধান সম্পাদক সুরেশ চবহানকে বলেছেন, ‘‘উর্দি পরে পুলিশ মুকেশ কুমারকে গ্রেপ্তার করতে পারল না কেন? এক আধিকারিকের ইচ্ছার কাছে কী গুরগাঁও পুলিশ মাথা ঝুঁকিয়ে দেবে?’’

এই চবহানকের বিরুদ্ধেই গত মে’তে মহারাষ্ট্রে এফআইআর দায়ের করেছিলেন সমাজকর্মীরা। ‘হিন্দু হুঙ্কার’ নাম দিয়ে ডাকা সভায় মুসলিমদের লক্ষ্য করে তীব্র ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।  

Comments :0

Login to leave a comment