TMC Clash

ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে উত্তপ্ত ধূপগুড়ি

জেলা

বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে দলীয় বৈঠক শেষে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ৷ দোকান ভাঙচুর গোষ্ঠী কোন্দলে বিধ্বস্ত ধূপগুড়ি উপ নির্বাচন ঘোষণা পরই মারামারি দুই গোষ্ঠীর আতঙ্কে দোকান বন্ধ করে দিল ব্যবসায়ীরা নামল র‍্যাফ। ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের আগে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতিতে আতঙ্কিত শহরের মানুষ। দীর্ঘ সময় যান চলাচল স্তব্ধ হল জাতীয় সড়কে। থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অধীনে থাকা র‍্যাফ সহ অফ ডিউটিতে থাকা সাধারণ  পোশাকের পুলিশ কর্মীদের লাঠি হাতে আসরে নামতে হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষের ফলে দোকান, বাজার তরিঘরি বন্ধ করে দিতে হয়। তৃণমূল সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যায় জেলা সভা নেত্রীর উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিনেমা হল পাড়ায় এক বেসরকারি লজে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভা হয়। সেখানে দলের বাহুবলি নেতা প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান জেলার সম্পাদক অরুপ দের কিছু মন্তব্য করেন। তাতে পৌরপ্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপারসন ভারতী বর্মন কেঁদে ফেলেন। এরপর বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জেলার আরেক সম্পাদক রাজেশ সিং প্রতিবাদ করলে দুই পক্ষের বিবাদ চরমে ওঠে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ এই দুই নেতার মাঝে মধ্যেই ঝামেলা বাঁধে। সেই থেকে বিবাদ এসে পড়ে রাজপথে। দফায় দফায় হাতাহাতি অশ্লীল  গালিগালাজ চলতে থাকে। সেই বিবাদ থামাতে ধূপগুড়ি থানার আইসি পুলিশ বাহিনী নিয়ে এসে হিমশিম খান। অনেক রাতে বিবাদ চলে আসে শহরের চৌপথির ট্রাফিক পয়েন্টের পাশে এশিয়ান হাইওয়ের ধারে রাজেশ সিং এর বাড়ির সামনে। বৃহস্পতিবার রাতের পর ফের শুক্রবার সকালে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল শুরু হয়। 

একাধিক বিষয় নিয়ে শুরু হয়ে যায় অরূপ দে গোষ্ঠী এবং রাজেশ কুমার সিং এর গোষ্ঠীর মধ্যে বাদানুবাদ। শেষে এক প্রস্থ হাতাহাতি হয়ে যায় সেখানে। পরবর্তীতে অরূপ দে তার দলবল নিয়ে রাজেশ কুমার সিংহের বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই রাজেশ কুমার সিং এর অনুগামী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে অরূপ দের দলবল ব্লকের প্রাক্তন যুব সভাপতি বৈদ্যনাথ কুন্ডুকে ধরে বেদম প্রহার দেয়। অভিযোগ বৈদ্যনাথ কুন্ডু, চাকু নিয়ে হামলা চালায়। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ধুপগুড়ি থানার আইসির নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র‍্যাফ মোতায়েন করা হয়। রাজেশ কুমার সিংয়ের অনুগামীরা জানায় রাজনৈতিক বিষয়ের কথা পার্টি অফিসে হবে কেন অরূপদের অনুগামীরা এইভাবে বাড়িতে চড়াও হল, তাই আমরা প্রতিরোধ করেছি। যদিও অরূপ দে এই বিষয়ে জানিয়েছেন, রাজেশ কুমার সিংয়ের বাড়িতে চড়াও হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। একটি বৈঠকে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর পরবর্তী সময়ে রাজেশ কুমার সিংহের ভাই ফোন করে বৈদ্যনাথ কুন্ডুকে দেখা করতে বলে। বৈদ্যনাথ কুন্ডু দেখা করতে তার বাড়িতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এখানে গোষ্ঠী কোন দলের কোন বিষয় নেই পরবর্তীতে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ সভাপতি পদ নিয়ে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীকন্দোল প্রকাশ্যে। ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি বোর্ড গঠন ঘিরেও ক্ষোভ বিক্ষোভ। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজেশ কুমার সিংয়ের ব্যক্তিগত অফিসের বাইরে জমায়েত তৃণমূল কর্মীদের। আইপ্যাক এর হস্তক্ষেপ নিয়ে তীব্রক্ষোভ প্রকাশ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের। জেলা সম্পাদকের কাছে সমস্ত ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং দলীয় কর্মীরা। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য জাহাঙ্গীর কবিরের অভিযোগ একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে তৃণমূল। আই প্যাক একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে দমিয়ে রেখে সমস্ত অঞ্চলগুলি গঠন করেছে। তার অভিযোগ একই গ্রাম থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সহ-সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে এমনকি তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকেই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি করা হয়েছে। অনান্য গ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে করা হলো না। যেখানে খামবন্দি নাম আসার কথা সেখানে মেসেজে নাম এল। আমাদের সঙ্গে অন্যায় অবিচার করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে যদি সুবিচার না করে দল তবে আগামীতে বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের চরিত্র কি  সেটা তুলে ধরব এবং তৃণমূল কি করছে সব প্রকাশ্যে আনবো। পুরাতন কর্মীদের গুরুত্ব দিচ্ছে না ধাক্কা দিয়ে বের করার চেষ্টা হচ্ছে।

তৃণমূল ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতি একক ভাবে বোর্ড গঠন করে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অর্চনা সুত্রধর এবং সহ সভাপতি হয়েছেন দীপু রায়। এই দুজনেই  বারঘরিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা। ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ২৭ টি আসনের মধ্যে ১৮ টিতে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল এবং নয়টিতে বিজেপি।

Comments :0

Login to leave a comment