Corruption

আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

জেলা

তপন বিশ্বাস - ইসলামপুর


ইসলামপুর স্টেট ফার্ম কলোনি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি অভিযোগ উঠে আসায় চাঞ্চল্য ছড়ালো এলাকায় । সম্প্রতি বিদ্যালয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় যে বিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনের বিষয়গুলো আভ্যন্তরীণ অডিট করে সেই হিসাব গার্জেন ফোরামের সামনে পেশ করা হবে। সেই সভা মঙ্গলবার বিকেলে স্কুলে বসে। সেখানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনেক ভুয়ো বিল ভাউচার পেশ করেন বলে অভিযোগ। সেখানে বিরাট অঙ্কের আর্থিক গরমিল ধরা পড়ে। সেখানে চাপের মুখে আর্থিক দুর্নীতির কথা স্বীকার করে নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাইলাল কর্মকার। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ৮ লক্ষ ৯১ হাজার ১২৩ টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাঙ্ক একাউন্টে প্রধান শিক্ষককে জমা করতে হবে। এ বিষয়ে ওই প্রধান শিক্ষককে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রং নাম্বার বলে ফোন কেটে দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে শহরের স্টেট ফার্ম কলোনি হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন কানাইলাল কর্মকার। তারপর থেকে তিনি বিদ্যালয়ের সমস্ত খরচ বিভিন্ন কমিটিকে অন্ধকারে রেখে করতেন বলে অভিযোগএবং নানান অজুহাতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায় করা হতো। সেই টাকা তিনি বিদ্যালয়ের উন্নয়নকল্পে খরচ করতেন না বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ প্রথমে প্রতিবাদে মুখর হন। তারপর বিদ্যালয়ের গার্জেন ফোরাম বিষয়টি জানতে পেরে আন্দোলনে নামে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তথা গার্জেন ফোরামের সদস্যরা বলেন, গতকালের বৈঠকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমন কিছু বিল ভাউচার পেশ করেন যার সাথে কাজের কোন মিল নেই। এমনকি এমন সবগুলি ভাউচার করেছেন  সেসব কাজ বিদ্যালয় হয়নি। চাপের মুখে প্রধান শিক্ষক দোষ কবুল করে নেন। সেখানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রায় ছয় লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ের একাউন্টে জমা না করে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন দীর্ঘদিন থেকে। গার্জেন ফোরামের দাবি , বিদ্যালয়ের কোন টাকা প্রধান শিক্ষক এভাবে কাছে রাখতে পারেন না। বিরাট গরমমিল ধরা পড়ায় শোরগোল পড়ে যায়। সেখানেই জরিমানা বাবদ ও টাকা অন্যায় ভাবে কাছে রাখার সুদ বাবদ প্রায় চার লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ের একাউন্টে জমা করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান শিক্ষক তা মেনে নেন বলে দাবি করেন  ওই ফোরামের সদস্যরা। বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি প্রেম কমল রায় চৌধুরী জানান, একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কোন খাতে কত টাকা রয়েছে তা জানাতে বলা হলেও -তিনি তা বলেন নি। বিদ্যালয়ের একটা ঐতিহ্য রয়েছে সেই ঐতিহ্যকে তিনি ক্ষুন্ন করেছেন এবং পদের অপব্যবহার করেছেন। অবিলম্বে ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এবিটিএ ইসলামপুর জোনাল সম্পাদক জয়ন্ত দে বলেন ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রথমে তোলেন শিক্ষকরাই। সেই সময় অভিযোগ স্বীকার করা তো দূরে থাক শিক্ষকদের তিনি অসম্মান করেছেন। তারপর শিক্ষকরা বিষয়টি এলাকার অভিভাবকদের জানাই। এখন পরিষ্কার হয়ে গেল ওই প্রধান শিক্ষক কতটা দুর্নীতিবাজ। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।
এ বিষয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক মাধ্যমিক মুরারি মোহন মন্ডলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।
 

Comments :0

Login to leave a comment