Nakasipara

আবাস দুর্নীতি: নাকাশিপাড়া, নবদ্বীপে ঘেরাও বিডিও অফিস

রাজ্য

আবাস যোজনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে উত্তাল গোটা রাজ্য। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সেই বিক্ষোভের অংশ হিসাবে বুধবার সারা ভারত কৃষক সভার নেতৃত্বে নাকাশিপাড়া বিডিও অফিস ঘেরাও করলেন হাজারও মানুষ। দাবি, সব গরীবের নাম থাকতে হবে আবাসের তালিকায়। বাদ দিতে হবে পাকা বাড়ির মালিকদের নাম। 

বুধবার নাকাশিপাড়ায় সমাবেশের আগে বিশাল মিছিল বেথুয়াডহরি হাসপাতালের সামনে থেকে বিডিও অফিস অভিমুখে রওনা দেয়। মিছিলে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ পা মেলান। জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে এই বিশাল মিছিল যায়। মিছিলের জন্য জাতীয় সড়ক কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বিডিও অফিসের সামনে পুলিশ বাহিনী ব্যারিকেড করলেও মানুষ সে ব্যারিকেড অতিক্রম করে বিডিও অফিসে প্রবেশ করে।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা বাড়ির তৈরিতে অর্থ দেওয়ার কথা। শর্তও রয়েছে এই প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে। আর্থ সামাজিক জাতভিত্তিক সমীক্ষার ভিত্তিতে তালিকা হওয়ার কথা। এ রাজ্যে যদিও সমীক্ষার নামে প্রবল কারচুপি দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। 

২০১১ সালের পর ২০১৮ সালে শেষ সমীক্ষা হয় আবাস যোজনার। তারপর আর নতুন করে কোনও সমীক্ষা হয়নি। ২০১৮ সালের ওই সমীক্ষার ভিত্তিতেই তৈরি করা হয়েছে আবাস যোজনার তালিকা। 

আর সেই তালিকাতেই রয়েছে চমক। তিন তলা বাড়ি। বাড়ির নিচে বাইক, এমন লোকের নাম রয়েছে তালিকায়। দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী, নেতা বা পঞ্চায়েত সদস্যের আত্মীয়রা জায়গা করে নিয়েছে তালিকায়। গ্রামবাসীরা বলছেন, যাঁর বাড়িতে বর্ষায় জল পড়ে, টালি ভাঙা, দেওয়াল দরমার, তাঁর নাম নেই তালিকায়। শুধু নাকাশি পাড়া নয় উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা, মুর্শিদাবাদ সব জায়গায় এই একই ছবি।

এদিন সমাবেশে মূল দাবি সনদ পেশ করেন কৃষকসভার নাকাশিপাড়া ব্লক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। বিডিও’কে ডেপুটেশন দেন জেলার কৃষক নেতা রেজ্জাক আহমেদ, চরণ হালদার, আসরাফ উজ্জামান মল্লিক প্রমুখ। সমাবেশে দাবিগুলির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন যুব নেতা ভাস্কর বর্মন।

বুধবার নাকাশিপাড়ার পাশাপাশি নবদ্বীপেও আবাসে কারচুপির প্রতিবাদে বিডিও দপ্তর ঘেরাও করার ডাক দেয় সিপিআই(এম)।  এদিন সেখানেও বিডিও অফিস ঘেরাও করেন গ্রামবাসীরা।

আবাস যোজনার দুর্নীতির সঙ্গে যে শাসকদল জড়িত গোড়া থেকেই সেই অভিযোগে সরব বামপন্থীরা। একের পর এক গ্রামে তার প্রমাণও মিলছে। কোথাও কোথাও প্রধান সহ ইস্তফা দিতে শুরু করেছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের সদস্যরা।

তৃণমূলের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। মঙ্গলবার দেগঙ্গাব পুলিশ মোতায়েন করেও ঠেকানো যায়নি মানুষের ক্ষোভ। দরজা ভেঙে পঞ্চায়েত অফিসের ভিতর ঢুকে পড়েন গ্রামবাসীরা। একই ছবি ধরা পড়েছে বসিরহাটেও। 

তালিকায় দুর্নীতি যদি একটা দিক হয়। তবে একটু ঘুরলে চোখে পড়বে আবাস যোজনায় তৈরি হওয়া বাড়িতে রমরমিয়ে চলছে তৃণমূলের দপ্তর। যেমনটা হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কাঠুরিয়া পাড়া জামালপুর ২ পঞ্চায়েত অফিসের কাছে। বাড়িটি তৈরি হয়েছে আবাস যোজনা প্রকল্পের আওতায়। আর সেই বাড়িতেই বড় করে টাঙানো হয়েছে মমতা ব্যানার্জির ছবি।          

Comments :0

Login to leave a comment