Salim

দক্ষিণপন্থার বিপদ দেখছে সংসদ, ২২ ডিসেম্বর প্রতিবাদ এ রাজ্যেও : সেলিম

জাতীয় রাজ্য

সংসদ থেকে বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে ২২ ডিসেম্বর এ রাজ্যেও হবে প্রতিবাদ। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানিয়ে দিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
এদিন কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া মঞ্চের বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ২২ তারিখ গোটা দেশ জুড়ে সাংসদদের সাসপেন্ড করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হবে। এ রাজ্যেও সিপিআই(এম) পাড়ায় মহল্লায় প্রতিবাদ কর্মসূচি করবে। ওই দিন ‘ইনসাফ যাত্রা’ যাদবপুরে শেষ হচ্ছে। সেখানে সমাবেশও হবে।’’সেলিম সংসদের ঘটনাক্রম প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘দক্ষিণপন্থার বিপদের চেহারা দেখছেন দেশের উগ্র দক্ষিণপন্থা কিভাবে সংবিধানকে, সাংবিধানিক কাঠামোকে আক্রমণ করে সংসদে প্রতিদিন স্পষ্ট হচ্ছে। এরা সংসদকে ভিতর থেকে এবং বাইরে থেকে দুই দিক থেকেই আক্রমণ করে।’’ 
সংসদে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করায় বিরোধী মোট ১৪৩ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেলিম বলেন, ‘‘আরএসএস এর ঘোষিত কর্মসূচি হচ্ছে সংসদীয় গণতন্ত্রকে ভেঙে দেওয়া। এরা সংবিধানকে মানে না। রাজনীতিকে বিরোধীশূন্য করতে চায় আরএসএস এবং বিজেপি। তাই তারা কেন্দ্রে মোদীকে ব্যবহার করছে বিরোধীশূন্য করার জন্য এবং রাজ্যে মমতাকে।’’
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ভোট এবং গণনাকেন্দ্রের লুটের অভিজ্ঞতা মনে করিয়ে দেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামসভা থেকে লোকসভা, সর্বত্র সংসদীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হচ্ছে।’’
এক প্রশ্নে সেলিম ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তৃণমূলের সঙ্গে বামপন্থীদের কোন জোট বা নির্বাচনী সমঝোতা হবে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকেই বলছি তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী যে কোনও শক্তির হাত ধরতে আমরা তৈরি। তৃণমূল আরএসএস’কে নিজেদের ‘ন্যাচরাল অ্যালি’ বা স্বাভাবিক মিত্র বলেছিল। আজ পর্যন্ত মমতা বলেননি তাঁর ওই অবস্থান ভুল ছিল। বরং গত বছরও তিনি বলেছিলেন ‘আরএসএস-কে খারাপ মনে করি না’। প্রকাশ্যে সেই ঘোষণা করেছিলেন।
সেলিম বলেন, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেয় এমন কোনও দল, কোনও বামপন্থী তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে না এই কারণেই। কারণ এরা শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য ভাঙে। 
}
উল্লেখ্য বুধবারই লোকসভায় পাশ হয়েছে ‘ন্যায় সংহিতা’। কার্যত বিরোধী শূন্য লোকসভায় পাশ হলো ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি বিচারবিধি এবং সাক্ষ্য আইন বদলের তিন বিল। এদিন লোকসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জঙ্গী দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে এই সংশোধনী বিল আনা হয়েছে।
সেলিম বলেন, ‘‘বিজেপি এবং আরএসএস জাতীয় নিরাপত্তাকে একমাত্র চিন্তার বিষয় করে তোলে সব সময়। সন্ত্রাসবাদ ঘিরে আতঙ্ক তৈরি করে রাজনৈতিক ফয়দা তুলতে চায়। অথচ গত নির্বাচনের আগের ঘটনা পুলওয়ামা বিস্ফোরণ নিয়ে তদন্ত শেষ হলো না আজও।’’ 
সেলিম বলেন, ‘‘আমরা বামপন্থীরা সামাজিক নিরাপত্তার দাবিকে প্রধান বিষয় করতে চাই। মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চাকরি, স্বাস্থ্য, বয়স্কদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার এই বিষয় নিয়ে বামপন্থীরা সরব হয়। সংসদে এই বিষয় কোন আলোচনা হয় না। সংসদ ভবন তৈরি নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। অথচ সংসদে মানুষের কথা কতটা হলো তা নিয়ে আলোচনা নেই। এখন আলোচনা কেন? কারণ হলুদ ধোঁয়া নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। আমরা বলছি বিক্ষোভ যাঁরা দেখিয়েছে তাঁদের আক্রমণের লক্ষ্য বানানো ঠিক নয়। তাঁরা বেকারির কথা বলছে। তা নিয়ে আলোচনা করুন। এ রাজ্যে যেমন পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি হয়নি, বিক্ষোভকারীদের একজন হরিয়ানায় তেমনই টেট পাশ করে চাকরি পাননি।’’
বিজেপি এবং আরএসএস’র প্রচারের, এই প্রসঙ্গেই, সমালোচনা করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের সোশাল মিডিয়া গ্রুপে ভগৎ সিং, সুভাষ বসুর নাম পাওয়া যাচ্ছে বলে কমিউননিস্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’
 

 

Comments :0

Login to leave a comment