প্রতীম দে ও সৌরভ গোস্বামী
কী লুকাতে চাইছেন? কেন মৃতার পরিবারকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হলো মেয়ের দেহ দেখার জন্য? প্রমাণ লোপাট করতে চাইছেন? সন্তানের মুখ দেখতে গেলেও কী আরজি জানাতে হবে?
শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রশ্ন তুলল এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এবং সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি বলেছেন, ‘‘লড়াই জারি থাকবে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ বলছে দোষী ধরা পড়েছে, এই ঘটনায় কি কেউ একা দোষী? দোষীকে সামনে রেখে কেন দোষীদের আড়াল করা হচ্ছে। কেন পুলিশ এই কাজ করছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তো সামনে চলে এসেছে সেখানে তো বলছে একাধিক ব্যক্তি। তাহলে কেন বলছে দোষী। কে পরিবারকে বলেছে আত্মহত্যার খবর জানতে, কে নির্দেশ দিল এই খবর জানাতে?’’
এদিন ছাত্র-যুব মহিলা নেতৃবৃন্দ জানিয়েছে নিজাম প্যালেসে সিবিআই’র আঞ্চলিক দপ্তরের ওপরও এবার নজর রাখবে আন্দোলন। সিবিআই তদন্তে হাত দিয়েছে। তাকে খুঁজে বের করতে দোষীদের। ছাড়া হবে না কাউকে। সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন এসএফআই এবং সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে এবং কনীনিকা ঘোষ। তাঁরা বলেছেন, জনতা পথে, অপরাধীদের লুকানো যাবে না।
আন্দোলনরত সব অংশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মীনাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘মৃত্যুর খবর বেরনোর দিন থেকে আজ পর্যন্ত যে ভাবে সংবাদ মাধ্যম প্রচার করেছে তার জন্য অভিনন্দন। রাজ্যের মহিলারা, সব বয়সের পথে নেমেছেন, যে ভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তার জন্য অভিনন্দন। মহিলাদের ছাড়া এই লড়াই কেউ পারত না। যারা চিকিৎসা পরিষেবার সাথে যুক্ত তারা যে ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে তাদেরকেও অভিনন্দন, অভিনন্দন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের। যে ভাবে সন্দীপ ঘোষকে আটকেছেন তার জন্য অভিনন্দন।’’
চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ খুনের সময়ে আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ঘিরে ধিক্কার সরব্তর। তাঁকে ওই হাসপাতল থেকে সরিয়ে শাস্তির নামে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে অদ্যক্ষ করা হয়। ন্যাশনালের ছাত্ররাও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
ছাত্র-যুব-মহিলা নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা নিতে আসেন বহু নিম্নবিত্ত দরিদ্র মানুষ। সেখানে বেড পেতে সময় লাগে। মানুষের পরিষেবা যেন ব্যাহত না হয় তা-ও দেখতে হবে, এই আবেদন রাখছি। তবে, লড়াইয়ের মেজাজ জারি থাকবে।
মীনাক্ষী বলেন, ‘‘মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত তাই পথে নেমেছে। পরিবারকে কেন টাকা অফার করা হলো? কার নির্দেশে হলো এই কাজ? পুলিশ মন্ত্রী বলছে পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে, টাকা শেষ কথা বলবে সব অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া হবে? তাই মানুষ পথে নেমেছেন।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্ন তোলা হয় যে সিভিক যাকে গ্রেপ্তার করা হলো তাকে কে মদত দিল? সিভিকদের কাজ ঠিক কি? এদের কিভাবে হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, দোষও চাপানো হচ্ছে এদেরই ওপর। হাওড়ায় নিস খানের হত্যঅকাণ্ডেও একই ঘটনা দেখঅ গিয়েছিল। তাঁরা বলেন, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে সামনে রেখে মাফিয়া গিরি করার নমুনা আরজি কর। যারা এদের পাহারা দিচ্ছে, মদত দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই।’’
Comments :0