রামশংকর চক্রবর্তী- তমলুক
পাঁচ বছর ধরে চেম্বার করে রোগী দেখছে চিকিৎসক। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা, এগরা, হেঁড়িয়া, নরঘাট, তমলুক ও রাধামনিতে ডাক্তার সি দাস নামে বিভিন্ন ওষুধ দোকানে রমরমিয়ে চলছিল চিকিৎসকের চেম্বার। বোঝা গেল সি দাস আসলে এক ভুয়ো চিকিৎসক।
তিনি উড়িশার এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নকল করে মেডিসিন, সুগার, থাইরয়েড ও নার্ভ বিশেষজ্ঞের পরিচয় দিয়ে প্র্যাকটিস করতেন। নয়মাস আগে খেজুরি থানার প্রিয়ানগর এলাকার এক ব্যক্তি বিহারীলাল সেন নামে এক শিক্ষক ওই ডাক্তারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার পর থেকে ওই শিক্ষকের ছেলে ও ছাত্রদের সন্দেহ হয়। ওই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার যাচাই করে দেখা যায় সি দাস মানে চন্দন দাস উড়িশার চিকিৎসক। তার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নকল করে চিকিৎসা করতেন পূর্ব মেদিনীপুরের এই ব্যক্তি। কোন সার্টিফিকেট নেই ওই চিকিৎসকের। মৃত শিক্ষকের ছেলে ও ছাত্ররা স্থানীয় বিডিও ও বিএমওএইচ কে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কোনও সুরাহা হয়নি। ছাত্ররা ওই ডাক্তারের খোঁজ চালায় এগরা, দিঘার চেম্বার গুলিতে। কিন্তু সেখানে খোঁজ মেলেনি। পরে জানতে পারে নন্দকুমারের নরঘাটে গুচ্ছাইত মেডিক্যালে হলে প্র্যাকটিস করে প্রতি শনিবার। শনিবার রাতে ওই ডাক্তারের কাছে ছাত্ররা রুগির পরিচয় দিয়ে নাম লেখান। চিকিৎসককে তার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নকল বলেন দাবি করেন। এই কথা চাউর হতেই চিকিৎসা করাতে আসা রুগী ও স্থানীয়রা চিকিৎসককে ঘিরে রেখেই বিক্ষোভ দেখান। চিকিৎসক হাতযোড় করে ক্ষমা চান আর করবে না এবার ছেড়ে দিন। চিকিৎসকের অনুরোধ না শুনে বিক্ষোভকারীরা নরঘাটের ওই ওষুধ দোকান বন্ধ করে দেয়। নন্দকুমার থানার পুলিশ খবর পেয়ে ওই নকল ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পয়ে গ্রেপ্তার করে।
এরপর অভিযুক্ত চিকিৎসক পুলিশি জেরায় জানায় তার আসল নাম চন্দন দাস। বাড়ি নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া গ্রামে। গ্রামে হাতুরে ডাক্তারের প্র্যাকটিস করত। লাগাতার পাঁচবছর ধরে অন্য চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নকল করে রোগী দেখত। পুলিশ জানায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Comments :0