SAME SEX MARRIAGE SC

বিশেষ বিবাহ আইনেই সুপ্রিম কোর্ট বিচার করবে সমলিঙ্গ বিয়ের আরজি

জাতীয়

জননাঙ্গের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে নারী ও পুরুষকে চিহ্নিত করা যায় না, সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি বৈধতা দেওয়ার আবেদন নিয়ে শুনানির শুরুতেই এই অভিমত জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। মঙ্গলবার এই শুনানি শুরু হলো। এদিন একইসঙ্গে সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেছে, আদালত এই শুনানিতে কোনও ধর্মের বিবাহ সংক্রান্ত ব্যক্তিগত আইন নিয়ে আলোচনায় যাবে না। শুধুমাত্র বিশেষ বিবাহ আইনের প্রেক্ষাপটে এই আবেদনের বিচার করবে। এই মামলায় বিভিন্ন পক্ষের আইনজীবীদেরও ওই আইনের উপরেই সওয়াল করতে বলেছে সাংবিধানিক বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এই বেঞ্চের বাকি চার বিচারপতি হলেন পি এস নরসিমহা, হিমা কোহলি, এস কে কাউল এবং এস রবীন্দ্র ভাট। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে মামলায় আইনজীবী রয়েছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী রয়েছেন অভিষেক মনু সিংভি, মুকুল রোহতগী প্রমুখ।


এর আগে গত ১২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে সমলিঙ্গ বিয়েতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে কেন্দ্রের বর্তমান সরকার। সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি শুরুর এক দিন আগেও সলিসিটর জেনারেল কেন্দ্রের তরফে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চকে বলেছেন, সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি বৈধতা দেওয়ার আবেদনটি আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্যই হতে পারে না। কেবলমাত্র আইনসভাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মঙ্গলবার সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি শুরুর মুহূর্তেও তিনি এই গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি আগে বিবেচনা করতে বলেন। উত্তরে প্রধান বিচারপতি সলিসিটর জেনারেলকে বলেন, ‘‘দুঃখিত, মিস্টার সলিসিটর, দায়িত্বে আমরা আছি। কীভাবে আমরা শুনানি পরিচালনা করব, আপনি তার নির্দেশ দিতে পারেন না। আমি আমার আদালতে কখনও এর অনুমতি দেইনি। আদালত মামলার আবেদনকারীদের বক্তব্যই আগে শুনবে।’’ 


এরপরে সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি বৈধতা দেওয়ার আরজির পক্ষে সওয়াল শুরু করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, লিঙ্গ এবং যৌনতা দু’টি ভিন্ন বিষয়। এক জন পুরুষের শরীরে নারীসুলভ মনস্তাত্ত্বিক প্রবণতা থাকতে পারে এবং উলটোটাও হতে পারে। সুতরাং সমলিঙ্গ বিয়ে বলতে একই যৌনতার দুই ব্যক্তির মধ্যে বিয়ের কথা বলা হচ্ছে না। সেই বোঝাপড়া থেকেই শারীরিক লিঙ্গ ও যৌনতার সাপেক্ষে দু’জন ইচ্ছুক প্রাপ্তবয়স্কর মধ্যে বিয়েকে বৈধতা দেওয়া উচিত। আবেদনকারীদের পক্ষে আরেক আইনজীবী মুকুল রোহতগী বলেন, যৌনতার উপাদানগুলির উৎস হলো লিঙ্গ এবং জৈবিক বৈশিষ্ট্য। তাই যৌনতার বহিঃপ্রকাশ মানে শুধু নারী বা পুরুষের জৈবিক যৌনতা নয়। বরং যাঁরা নিজেদের নারী বা পুরুষ কোনওটিই মনে করেন না, যৌনতার বহিঃপ্রকাশ বললে তাঁদের কথাও চলে আসে। পালটা বক্তব্যে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‍জৈবিক পুরুষ মানে পুরুষের জৈবিক জননাঙ্গ সহ ব্যক্তি। নারীদের ক্ষেত্রেও তা-ই। বিশেষ বিবাহ আইনেও এক জন জৈবিক পুরুষ ও এক জন জৈবিক নারীর মধ্যে সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, নারী বা পুরুষ বলে কোনও চূড়ান্ত ধারণা হয় না। এটি শুধু জননাঙ্গের বিষয় নয়। তার থেকে অনেক বেশি জটিল। এমনকী বিশেষ বিবাহ আইনেও যে নারী ও পুরুষের কথা বলা হয়েছে, সেখানেও নারী ও পুরুষ বলতে জননাঙ্গভিত্তিক চূড়ান্ত কোনও ধারণার কথা বলা হয়নি। উল্লেখ্য, বিশেষ বিবাহ আইন হলো ধর্ম ও জাত নির্বিশেষে বিয়ের আইন। বুধবারও এই মামলার শুনানি চলবে। —পিটিআই  

  
 

Comments :0

Login to leave a comment