‘মহাগঠবন্ধন’ ভেঙে বিজেপি’র সঙ্গে রবিবারই নতুন সরকার গড়তে পারেন নীতীশ কুমার। দেশের রাজনীতি তেতে রয়েছে এই আলোচনায়। শনিবার এই আবহেই দলের জরুরির বৈঠক করল আরজেডি। দলের নেতা এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বক্তব্য, ‘সহজে ভাঙতে দেব না সরকার’।
আরজেডি সূত্র জানাচ্ছে যে শনিবারের বৈঠকে তেজস্বী একদিকে নীতীশের প্রতি সম্মান ধরে রাখারই বার্তা দিয়েছেন। কম সময়ের মধ্যে এই সরকার জাতভিত্তিক সমীক্ষা এবং সরকারি পদে নিয়োগের সাফল্যকেও মনে করিয়েছেন। তেজস্বীর বক্তব্য, অনেক বিষয় নীতীশের নিয়ন্ত্রণে নেই। এমন চাপের জন্যই তাঁকে অন্যকিছু ভাবতে হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী হলেও নীতীশ কুমারের নিজর দল জনতা দল (ইউ)’র বিধায়ক ৪৫। ২৪৩ আসনের বিধানসভায় তেজস্বীর রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)’র বিধায়ক ৭৯। সংখ্যার বিচারে সবচেয়ে বড় দল আরজেডি। ‘মহাগঠবন্ধন’ বা মহাজোটে শরিক কংগ্রেসের ১৯, সিপিআই (এম-এল)’র বিধায়ক ১২, সিপিআই(এম) এবং সিপিআই’র ২ জন করে বিধায়ক। এই দলগুলির বিধায়কের সংখ্যা ১১৪। গরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন অন্তত ১২২ বিধায়কের সমর্থন। ফলে নীতীশ ছেড়ে গেলে মহাজোটকে আরও অন্তত ৮ বিধায়কের সমর্থন পেতে হবে।
এর বাইরে এআইএমআইএম’র ১ এবং জিতন রাম মানঝির হিন্দুস্তানি আওয়ামি মোর্চা (সেকুলার)’র ৪ বিধায়কের সমর্থন তেজস্বীর জোটে থেকে। জিতন রাম যদিও স্পষ্ট করেননি তিনি কোন দিকে থাকতে চাইছেন।
বিজেপি’র বিধায়ক ৭৮। ২০২০’র বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমার বিজেপি’র সঙ্গেই ছিলেন। কয়েক আসনের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল মহাজোট। বিজেপি’র সঙ্গে সরকার গড়লেও মাঝে ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নীতীশ কুমার। মুখ্যমন্ত্রী পদে রেখেও তাঁর গুরুত্ব একেবারেই ছেঁটে দিয়েছিল বিজেপি।
আরজেডি সূত্র জানাচ্ছে, তেজস্বী ভাষণে নীতীশের প্রতি সম্মান বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার শ্রদ্ধেয়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা বজায় থাকবে। কিন্তু অনেক বিষয় তাঁর নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই।’’
২০০৫ থেকে দফায় দফায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতীশ কুমার। বিশেষত ২০১৩’র পর থেকে বারবার বদলেছেন জোট। তেজস্বী বলেছেন, ‘‘মাত্র কয়েকমাসে এমন অনেককিছুই হয়েছে যা গত ২০ বছরে হয়নি। জাতভিত্তিক সমীক্ষা করানো গিয়েছে। সংরক্ষণের সীমা বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষক সহ সরকারি পদে লক্ষাধিক স্থায়ী নিয়োগ হয়েছে কম সময়ের মধ্যেই।’’
সূত্র জানিয়েছে যে তেজস্বী সেই সঙ্গেই বলেছেন, ‘‘এত সহজে সরকার ভাঙতে দেব না। খেলা সবে শুরু।’’
শনিবারই রেলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের পুরনো মামলায় দিল্লির আদালত সমন পাঠিয়েছে তেজস্বীর মা এবং প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের স্ত্রী রাবরি দেবীকে। ইডি’র দায়ের করা মামলায় ৃাকা হয়েছে তেজস্বীর দিদি মিশা ভারতীকেও।
Comments :0