Brigade Rally

লক্ষ্য ‘২৬, আরও লড়াইয়ের বার্তা ব্রিগেড থেকে

রাজ্য ব্রিগেড

প্রতীম দে

রাজ্যকে রক্ষা করতে গড়ে তুলতে হবে শ্রেণি ঐক্য। রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে এমনই বার্তা দিল নেতৃত্ব। বার্তা ব্রিগেড থেকেই নতুন লড়াই শুরুর। বিধানসভা নির্বাচনে জাতের লড়াইকে ভাতের লড়াইয়ে পরিণত করার বার্তাও দিল ব্রিগেড।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "গরিবের লড়াই গরিব লড়বে। আমরা জাত-পাত, মন্দির-মসজিদে যদি ভাগ না হই, তা’হলে লড়তে পারব। দেশ স্বাধীন করার লড়াই এভাবেই হয়েছিল। জমির লড়াই এভাবেই হয়েছিল। শরীরে যতক্ষণ এক বিন্দু রক্ত থাকবে এই দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে লড়াই লড়ে যেতে হবে। আমাদের লড়াই শিক্ষার জন্য, কাজের জন্য। মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির জন্য। লালঝাণ্ডার বাইরেও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে একজোট করতে হবে।"
সেলিমের কথায় গরিব মানুষ যখন নিজেদের হক বুঝে নিতে এক হচ্ছে তখন ঐক্য ভাঙতে ধর্মের নামে ভাগ করছে বিজেপি ও তৃণমূল।
তিনি বলেন, লড়াই আসলে হিন্দু মুসলমানের লড়াই না। গরিবের হয়ে লড়াই করতে হবে। শিক্ষার দাবিতে লড়াই করতে হবে। ২৬ এর লড়াই এখন থেকে শুরু হোক। গ্রামে গ্রামে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।  
কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদারের কথায় উঠে আসে তেভাগা আন্দোলনের কথা। তিনি বলেন, ২৭ বছর আগে তেভাগার বর্ষপুরণ উপলক্ষে কৃষক সমাবেশ হয়েছিল। ওই তেভাগা আন্দোলন দাঙ্গা আটকে ছিল, আজকে যেই অবস্থা চলছে তাতে রাজ্যের কৃষক সমাজ সঙ্কটের মুখে। কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছে না। তাদের অবস্থা কঠিন। মাইক্রো ফাইন্যান্সের কবলে পড়েছেন তাঁরা। একদিকে ফসলের দাম পাচ্ছে না অন্যদিকে পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ছে, এবার বলছে স্মাট মিটার বসানো হবে। বামপন্থী নেতারা বলেছিল রাজ্য কাঁপিয়ে দিতে হবে, তারপর লাল ঝান্ডা নিয়ে কৃষকরা লড়াই করেছিল, জমি আন্দোলন হয়েছিল। মজুরি আন্দোলন হয়েছিল। জোতদারদের থেকে নেওয়া জমি আবার জোতদারদের কাছে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার ভারতে আসছেন মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি। এর ফলে অবাধে মার্কিন কৃষি পণ্য দেশে ঢুকবে। এমনি কৃষকরা দাম পাচ্ছে না। এর ফলে কি হবে? আরো সঙ্কট বাড়বে। আগামীকাল দেশ জুড়ে কৃষক সভা ভ্যান্স গো ব্যাক স্লোগান তুলবে।
বন্যা টুডুর কথায় উঠে আসে গ্রামের প্রান্তিক মানুষের সংকটের কথা। তিনি বলেন, আমাদের কথা শহরের মানুষরা জানে না আমরা রোজ ১৫০ টাকা পাই আর ২ কেজি চাল।
২০১১ সালের বামফ্রন্ট সরকারের দেওয়া জমি লুঠ করা হচ্ছে। ভোট বাক্স আলাদা আর রুটি রুজির লড়াই আলাদা। খেতে খাওয়া মানুষের টাকায় এই মঞ্চ।
সিআইটিইউ’র রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন,উদার অর্থনীতির আক্রমণের পাশাপাশি চলছে সাম্প্রদায়িক বিভাজন। এর পরিণতি মেরুকরণের রাজনীতি। মুর্শিদাবাদ এই রাজনীতির ফলাফল। তৃণমূল গোটা রাজ্যে এর সাথে ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরি করছে, এর জন্য এই বাংলায় দাঙ্গা হচ্ছে। দেশের সংবিধান আক্রান্ত। বহুত্ববাদী সংস্কৃতি আক্রান্ত। সাহু বলেন, এই দেশ যখন ব্রিটিশ সরকার ছিল তখনকার শ্রম আইন বদলে ওরা শ্রমিকের ইউনিয়ন করার অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। লকডাউনের সময় চোরের মত শ্রম কোড চালু করেছে এর বিরুদ্ধে ২০ মে ধর্মঘট হবে। আমরা শ্রমিক শ্রেণির অধিকার ছাড়ব না। এই শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেবে শ্রম কোড। এই আইন চালু হলে আমাদের দেশের ৭৫ ভাগ শ্রমিক শ্রম আইনের বাইরে চলে যাবে, কোন সামাজিক সুরক্ষা থাকবে না মমতার দুর্নীতির জন্য রেগার কাজ বন্ধ। রাজ্যের এই দুই বিভেদকারী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই। 

Comments :0

Login to leave a comment