Sandeshkhali

সন্দেশখালি কান্ডে সিট গঠনের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট

রাজ্য

সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করলো কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে নিয়ে এই সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন আদালত তার নির্দেশে বলেছে, সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের এসপি পদ মর্যাদার একজন করে অফিসার এই সিটের দায়িত্বে থাকবেন। আদালত বলেছে বসিরহাট পুলিশ জেলার ন্যাজাট থানার কোন পুলিশ আধিকারিক এই তদন্তের মধ্যে থাকবে না। গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া চলবে আদালতের পর্যবেক্ষণে। 
এদিনই রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে সিটের দায়িত্বে থাকবেন এসপি জসপ্রীত সিংহ। সিবিআই এখনও কোনও অফিসারের নাম জানায়নি। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনার ১৩দিন পরেও পুলিশ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বুধবারও বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন, এই মামলায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। 
এদিন মামলার শুনানির সময় বিচারপতি মন্তব্য করেছেন, ঘটনার পর বেশ কিছুদিন কেটে গেছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত তদন্তের কী অগ্রগতি হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে সন্দেশখালির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট শাহজাহানের বাড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি লাগানোর যে নির্দেশ দিয়েছিল তা কার্যকরী হয়েছে। শাহজাহানের বাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি সিসিটিভি লাগিয়েছে পুলিশ। মনিটর লাগিয়ে পুলিশ কর্মীরা তা নজরে রেখেছেন বলে জানানো হয়েছে। 
আইনজীবীরা মনে করছেন, শাহজাহানকে ধরার ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি আদালত। তাই এই মামলার তদন্ত শুধু রাজ্য পুলিশের হাতে রাখা হয়নি। মামলার তদন্তের সঙ্গে সিবিআই-কে যুক্ত করা হয়েছে। ৫জানুয়ারি ঘটনার পর থানায় তিনটি এফআইআর জমা পড়েছিল। একটি এফআইআর দায়ের করেছিল শাহজাহানের কেয়ারটেকার। এছাড়া পুলিশ একটি এফআইআর করেছে ইডি একটি এফআইআর করেছে। শাহজাহানের কেয়ারটেকারের করা এফআইআরের ওপর কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। তদন্তে সেই এফআইআর কার্যকরী হবে না বলে বুধবারও আদালত জানিয়েছে। আপাতত দু’টি এফআইআর-কে সামনে রেখে সিট তদন্ত করবে। এদিনই বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দিয়েছেন এখন পর্যন্ত যে সমস্ত তথ্য পুলিশ সংগ্রহ করেছে তা সিটের হাতে হস্তান্তর করতে হবে। 
রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় তৃণমূলের নেতা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকরা ঢুকতে পারেননি। শাহজাহান বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। শাহজাহানকে বাড়ির সামনে থেকে ফোন করেও কথা বলতে পারেনি ইডি আধিকারিকরা। আদালতকে ইডি আগেই জানিয়েছিল। শাহজাহান বাড়িতেই ছিলেন। বাড়িতে বসেই তিনি ২৮টি ফোন করেছিলেন। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে জানা গেছে এই সময় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। মানুষ জড়ো হয়ে যখন ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায় তখনই শাহজাহান বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এই হামলায় তিনজন ইডি আধিকারিক গুরুতর আহত হয়েছিলেন। 
রেশন দুর্নীতি জড়িত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর সহযোগী বাকাবুর রহমান এবং শঙ্কর আঢ্য জেলে আছেন। রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহানের যোগ খুঁজে পেয়েছে ইডি। বুধবার মামলার শুনানির সময় ইডি’র আইনজীবী বিচারপতিকে জানান, শাহজাহান তার দলেরকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ‘‘ওসামা বিন লাদেনের মতো ভয়েস মেসেজে’’ কথা বলছেন। কিন্তু পুলিশ তার হদিশ করতে পারছে না। এদিনও ইডি’র তরফে সন্দেশখালির ঘটনায় সিবিআই অথবা নিরপেক্ষ কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত তার নির্দেশে জানান, গোটা তদন্ত আদালতের পর্যবেক্ষণেই হবে। আদালত সিট গঠন করে দ্রুত তদন্ত শেষ করার কথা বলেছে।

Comments :0

Login to leave a comment