কাতারের কোচ কার্লোস কুয়েইরোজ বলেছেন, ‘‘ম্যাচের কোনও মুহূর্তেই ভারতীয় খেলোয়াড়রা প্রেসিং ফুটবল খেলা বন্ধ করেনি। পুরো ৯০ মিনিট ধরে এই খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের অভিনন্দন। আমরা এই ধরণের খোলোয়াড়ি মানসিকতাকে সম্মান করি।’’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের থেকে বেশ অনেকটাই এগিয়ে কাতার। ভারত রয়েছে ১০২তম স্থানে। আর কাতারের অবস্থান ৬১তম স্থানে। ২০২২ ফিফা পুরুষ ফুটবল বিশ্বকাপ কাতারে হয়। আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বকাপেও অংশ নিয়ে ফেলেছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ।
মঙ্গলবার ওডিশার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ হয়। ধারে ও ভারে পিছিয়ে থাকলেও লড়াকু মানসিকতা নিয়ে ম্যাচে লড়াই চালান সুনীলরা। সুনীলের বাড়ানো পাস থেকে অল্পের জন্য গোল মিস করেন অনিরুদ্ধ থাপা। নইলে প্রথমার্ধেই কাতারের বিরুদ্ধে সমতা ফেরাতে পারত ভারত। দ্বিতীয়ার্ধেও একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করেন ভারতীয়রা।
নিজের টিমের খেলায় মোটের উপর সন্তুষ্ট ভারতীয় কোচ ইগর স্টিম্যাচও। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার দলের দায়বদ্ধতা প্রশংসনীয়’’।
ইগরের বক্তব্য, ‘‘ ম্যাচের একদম শুরুতে আমরা একটু নড়বড়ে ফুটবল খেলেছি। তখনই ১-০ গোলে আমরা পিছিয়ে যাই। কিন্তু প্রাথমিক জড়তা কাটার পরে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা শুরু করি। প্রথমার্ধেই গোল শোধের সুযোগ ছিল আমাদের সামনে। সেটা কাজে লাগাতে পারলে কাতার এত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাকি ম্যাচটা খেলতে পারত না। ফলাফল অন্যরকমও হতে পারত।’’
ইগর স্টিম্যাচ কাতারের খেলার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘‘ওঁদের পাসিং, স্কিল সহ মৌলিক বিষয়গুলির উপর দখল অনবদ্য।’’
তাঁর সংযোজন, ‘‘২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এএফসি এশিয়ান কাপে আমাদের খেলা রয়েছে। তার আগে একাধিক প্রশ্ন আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। কাতার ম্যাচের পরে আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গিয়েছি। আমি জানি, এশিয়ান কাপে কোন পজিশনে কাকে খেলাতে হবে।’’
বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্ব চলাকালীন ভারত সফরে এসেছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আর্সেনালের প্রাক্তন ম্যানেজার তথা ফুটবল কিংবদন্তী আর্সেন ওয়েঙ্গার।
আর্সেন ওয়েঙ্গার বর্তমানে ফিফার বিশ্ব ফুটবল উন্নয়ন প্রকল্পের অধিকর্তা। তিনি কাতার-ভারত ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘কাতার নিঃসন্দেহে যোগ্য দল হিসেবে জিতেছে। কিন্তু ভারতীয় ফটবলেও যে প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে, তাও স্পষ্ট হয়েছে। ভারতীয়রা তীব্র জয়ের খিদে নিয়ে ফুটবল খেলেছে। তাই ভারতে ফুটবল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হাওয়ার ইচ্ছা আরও তীব্র হয়েছে আমার।’’
ওয়েঙ্গার বলেন, ‘‘ভালো ফুটবলার হয়ে কেউ জন্মায় না। বিশ্বমানের কোচিং এবং পরিকাঠামো একজন শিশু কিংবা কিশোরকে আন্তর্জাতিক মানের ফুটবলারে পরিণত করে। ভারতে যথাযত ফুটবল পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেই পরিকাঠামোর মাধ্যমেই মুম্বই শহরের এক কিশোর আজ থেকে ২০ বছর পরে সাও পাওলো কিংবা প্যারিসের কোনও আন্তর্জাতিক মানের ফুটবলারের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে পারবে।’’
Comments :0