Supreme Court

সব ধর্মীয় কাঠামো, উদ্বাস্তুদের সম্পত্তি রক্ষা করতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট কমিটির

জাতীয়

supreme court


জাতি সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মণিপুরে সমস্ত ধর্মীয় কাঠামোকে রক্ষা করতে বলল সুপ্রিম কোর্টের কমিটি। একই সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে উদ্বাস্তু বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করতেও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালতের ওই কমিটি। বলা হয়েছে, জাতি সংঘর্ষে যে সমস্ত ধর্মীয় কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, এমনকি অন্য ধর্মের লোকজন দখল করে রেখেছে এমন মন্দির, মসজিদ, গির্জা নির্বিশেষে সমস্ত ধর্মীয় কাঠামোকে দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে।
শুক্রবার এই মর্মে রাজ্য সরকারকে নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন তিন বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত মণিপুর বিষয়ে কমিটি। সুপ্রিম কোর্টকে এই বিষয়ে সুপারশি করতে গিয়ে এই কমিটি বলেছে, এই সংক্রান্ত যে নির্দেশ তারা দেবে তা বাস্তবায়িত না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আদালতের অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করতে হবে।   
একই সঙ্গে এই কমিটি জাতি সংঘর্ষের জেরে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেত বাধ্য হওয়া বস্তুচ্যুত পরিবারগুলির সদস্যদের এবং তাঁদের সম্পত্তি রক্ষা করতে বলেছে। জাতি সংঘর্ষে জেরে ঘরবাড়ি আগুন পুড়ে যাওয়া, ধ্বংস হওয়া, কিংবা অন্যের দখলে চলে যাওয়া সম্পত্তিকে রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার করতেও রাজ্যের বিজেপি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কমিটি। রাজ্যের ধর্মীয় বা ব্যক্তিগত সম্পত্তিগুলি এখন কী অবস্থায় রয়েছে তা জানতে এই বিষয়ে সমীক্ষা করারও নির্দেশ দিয়েছে কমিটি।  
গত ৮ সেপ্টেম্বর এই কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মণিপুরের সরকারি শীর্ষ আধিকারিকদের বৈঠকেও দখল হওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত অথবা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া ধর্মীয় কাঠামো বা বাস্তুচ্যুতদের সম্পত্তিকে রক্ষার বিষয়টি উঠেছিল বলেও জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে। জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তালের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের এই কমিটির আছেন বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শালিনী পি জোশী এবং দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আশা মেনন। 
তবে এর আগে মণিপুরের পুলিশ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ৩ মে থেকে শুরু হওয়া জাতি সংঘর্ষের জেরে মোটি ৩৮৬টি ধর্মীয় কাঠামোর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ২৫৪টি গির্জা এবং ১৩২টি মন্দিরও আছে। এছাড়াও গত চার মাসে হিংসার জেরে ৪,৭৮৬টি বাড়ি দুষ্কৃতীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল। 
মণিপুরে মেইতি খ্রিস্টান চার্চেস কাউন্সিল সুপ্রিম কোর্টে করা মামলার আবেদনে উল্লেখ করেছে জাতি সংঘর্ষে ২৪০ থেকে ২৪৭টি গির্জা হামালায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু গির্জায় হামলা চালিয়ে তছনছ করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তারা গির্জা থেকে যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে গিয়েছে, কোথাও পুড়িয়ে দিয়েছে।  
সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলার আবেদনে ইম্ফলের আর্চ বিশপ ডমিনিক লুমন জানিয়েছেন, মণিপুরে জাতি সংঘর্ষ শুরু হওয়ার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে মেইতি খ্রিস্টানদের ২৪৯টি গির্জাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। এই দুটি মামলার আবেদন থেকে পাওয়া তথ্যগুলিও এদিন নির্দেশ দিতে গিয়ে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্টের মণিপুর বিষয়ে কমিটি।    
 

Comments :0

Login to leave a comment