রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত সামনে আসতেই বেশ কিছু আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভূমি রাজস্ব দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১এ, ১বি, ১সি, ১ডি, ২বি, ২ই এবং অ্যাকশন এরিয়া ৩’র কিছু অংশকে জ্যাংড়া হাতিয়াড়া-২ পঞ্চায়েতের অংশ বানানো হয়েছে। বর্তমানে নিউ টাউনের ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে নিউটাউনে ১২টি বুথ, এবং সেই বুথ সংখ্যার নিরিখে নিউটাউন এলাকার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৮টি গ্রাম সংসদ আসন।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, মাত্র ১৩ হাজার ভোটারের জন্য আলাদা পৌরসভা তৈরি করা সহজ কাজ নয়। এছাড়া সেই ক্ষুদ্র পৌরসভার ক্ষেত্রে সরকারি বরাদ্দও বেশি হওয়ার কথা নয়, যা নিউটাউনের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। রাজ্যের তরফেও এই বিষয়ে স্পষ্ট কোনও দিশা দেখানো হয়নি।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, নিউটাউনের নিজস্ব কিছু চাহিদা রয়েছে, যা আর পাঁচটা ছোট পুরসভার থেকে আলাদা। আগের সরকার নিউটাউনকে বিশ্বমানের শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিল। বর্তমান সরকার একে পৌর এলাকার মর্যাদা দিতে চায়, ভালো কথা। কিন্তু সেটা কী ভাবে দেবে? রাজ্য প্রশাসন যদি কেবলমাত্র হিডকো অঞ্চলকে নিয়ে পৌর এলাকা গড়ে, সেটা ভালো বিষয়। কিন্তু বর্তমান সরকার সাধারণত উন্নয়নের নামে পৌর এলাকার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ এলাকাকে মিশিয়ে দেয়। এক্ষেত্রেও সেটা করলে তার ফল হবে ভয়ঙ্কর। কারণ, দুই এলাকার মানুষের নাগরিক পরিষেবার চাহিদার চরিত্রই তো আলাদা। সেই চাহিদার তারতম্য ঘোচানো কঠিন। বরং রাজ্য সরকারের উচিত নিউটাউনকে স্বতন্ত্র রেখে স্পেশাল প্যাকেজের মাধ্যমে এই অঞ্চলের উন্নয়নের কথা ভাবা।
এপ্রসঙ্গে সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কমিটির সদস্য সপ্তর্ষী দেব জানিয়েছেন, আমরা প্রথম থেকেই নিউটাউন এলাকাকে নির্বাচিত কাঠামোর অংশ বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিউটাউনের নিজস্ব কিছু চাহিদা রয়েছে।হিডকো অঞ্চলকে নিয়ে প্রস্তাবিত পৌর এলাকা গড়ে উঠলে সমস্যা নেই। কিন্তু হিডকো এলাকার বাইরের এলাকাকেও যদি এরসঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক বিপদ ডেকে আনবে। নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন নিউটাউনের বাসিন্দারা।
Comments :0