অন্যকথা — মুক্তধারা, বর্ষ ২
এরাটোস্থিনিসের চালুনি
তপন কুমার বৈরাগ্য
চালে বড় বড় কাঁকড় মেশানো থাকলে চালুনি দিয়ে কাঁকড় ও
চাল আলাদা করা হয়। বহুবিদ্যা বিশারদ এরাটোস্থিনিসের
চালুনি দিয়ে এক থেকে একশো পর্যন্ত মৌলিক যৌগিক সংখ্যাগুলো আলাদা করে দেখানো যায় ।তিনি দেখান মৌলিক
সংখ্যাগুলোর গুণিতক সবসময় যৌগিক সংখ্যা।
এরাটোস্থিনিসের চালুনি একটি প্রাচীন অ্যালগরিদম যা একটি
নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে মৌলিক সংখ্যা খুঁজে বের করতে
সাহায্য করে।মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ের একে অ্যালগরিদমের
ধাপ বলে উল্লেখ করা হয়।খুব সহজেই ছাত্রছাত্রীরা এই
চালুনীর মাধ্যমে মৌলিক সংখ্যা নির্ণয় করতে পারে।
এরাটোস্থিনিস ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের একজন বহুবিশারদবিদ।যিনি গণিত,ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান,সংগীত বিভিন্ন বিষয়ে অবদান
রেখে গেছেন।২৭৬খ্রিস্টপূর্বাব্দে তাঁর জন্ম সাইরিন লিবিয়ায়।
মৃত্যু ১৯৪খ্রিস্ট পূর্বাব্দে।তিনিই সেই মানুষটি যিনি অঙ্ক কষে
পৃথিবীর ব্যাসার্ধ ও পরিধি নির্ণয় করেন। তিনি অঙ্ক কষে দেখান
যে পৃথিবীর পরিধি৪০০০০কিমি এবং ব্যাসার্ধ ৬৩৬৬.১৮ কিমি
প্রায়। তাঁর লেখা বিখ্যাত বইয়ের নাম জিওগ্রাফিকা।যাতে
ভূগোল সম্পর্কে অনেক খুঁটিনাটি বিষয় উল্লেখ করেছেন।
আজ থেকে প্রায় সাড়ে বাইশশো বছর আগের এই বই আজো
সমানভাবে প্রযোজ্য। সেই সময় তিনি আলেকজান্দ্রিয়ার
গ্রন্থাগারের প্রধান গ্রন্থাগারিক ছিলেন। গ্রন্থাগারকে সাজিয়েছিলেন
নানারকম বই দিয়ে।
তিনি একজন কবিও ছিলেন।বেশ কিছু কবিতাও তিনি লিখে
গেছেন। তিনিই প্রথম পৃথিবীকে ৫টি জলবায়ু ভিত্তিক
অঞ্চলে ভাগ করেন। তাঁর একটা আশ্চর্য গুণ ছিলো।
তিনি সব রকম বাদ্যযন্ত্র সুন্দরভাবে বাজাতে পারতেন।
তাছাড়া তিনি তাঁর সুকন্ঠে অপূর্ব সুন্দর সংগীত পরিবেশন
করতে পারতেন।শুনা যায় সেইসময়ে তাঁর মতন একজনও
সংগীতজ্ঞ গ্রিসে ছিলেন না।এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব
কমই জন্মগ্রহণ করেছেন।
Comments :0