Resistance

লুঠের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ছেন সাধারণ মানুষ

রাজ্য পঞ্চায়েত ২০২৩

তৃণমূল ভোট লুঠ করেছে। ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দিল সাধারণ মানুষ। বীরভূমের ময়ুরেশ্বরে এই ঘটনা ঘটেছে। ময়ুরেশ্বরের বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই বুথ দখল করে ভোট লুঠ করে শাসক দলের বাহিনী। কিন্তু সেই কাজ কয়েকটা জায়গায় করতে পারলেও বিভিন্ন জায়গায় মানুষের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হলো তাদের। রামপুরহাটের একাধিক বুথে সকালে ভোট লুঠ করতে এলে সিপিআই(এম) কর্মীরা গ্রামের মানুষদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মানুষের রোষের মুখে পড়ে প্রান বাঁচাতে বুথ ছেড়ে ছাপ্পা দেওয়ার কাজ অসমাপ্ত রেখে পালায় তৃণমূলের বাহিনী। 


উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে ভোট লুঠে করতে এলে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে তৃণমূলের বাহিনী। পূর্ব বর্ধমানের একাধিক জায়গায় মানুষের প্রতিরোধের কাছে পিছু হটতে হয়েছে তৃণমূলকে। 


মেমারি ২০০ টি বুথের মধ্যে ১০ টি বুথ সকালে দখল করে তৃণমূল কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকদের পাল্টা প্রতিরোধে বুথ ছেড়ে পালায় তারা। ওই একই জেলার কাঁকসা, জেমুয়াতে একই ছবি দেখা গিয়েছে। মানুষকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ছে সিপিআই(এম)।


রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল ভোট লুঠ করলেও পাল্টা প্রতিরোধের মুখে তাদের পড়তে হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদীয়া, বর্ধমান , দক্ষিণ ২৪ পরগনার এবং উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় মানুষকে সাথে নিয়ে তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনীর মোকাবিলা করছে সিপিআই(এম) কর্মীরা। রাজারহাটের ড্যাংড়ায় ভোট লুঠের ব্যালট বাক্স ড্রেনে ফেলে দিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।


উল্লেখ্য পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম থেকেই মহম্মদ সেলিম দাবি করে এসেছিলেন যে মানুষ ঐক্যবদ্ধ তৃণমূলকে হারাতে। তাঁর সেই কথার প্রতিছবি বিভিন্ন জেলায় দেখা যাচ্ছে। তবে যেই সব জায়গায় মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলছে সেখানে পুলিশের সাহায্য নয়। মানুষ নিজেরা তৃণমূলের মোকাবিলা করছে। আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট পরিচালনা করার নির্দেশ দিলেও একাধিক জেলায়, বুথে কোন বাহিনী বা রাজ্য পুলিশের দেখা নেই। উল্টে সিভিক পুলিশকে ভোটের কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে।

নারায়ণগড় ব্লকের কুনারপুর অঞ্চলের ৫নং মাধবপুর বুথে বুথ দখল করতে আসা দুষ্কৃতীদের তাড়িয়ে দিল সিপিআই(এম) কর্মীরা।

নেই সিভিক পুলিশ। নেই কেন্দ্রীয় বাহিনী। জনতাই ভোটের অধিকার রাখতে অবরোধ করেছেন রাস্তা। 
বারাসতের কদমগাছি এলাকায় অবরোধে বসা মহিলা দেখোচ্ছেন ভোটার কার্ড। বসিরহাট মেন রোডের কাছে সকাল থেকেই শামিল হয়েছেন তাঁরা।
মহিলারা জানাচ্ছেন, শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয়েছে হুমকি। হামলা করেছে গ্রামে। বলেছে ভোট দিতে দেওয়া হবে না। তাঁরাই জানাচ্ছেন, রাতেই রাস্তায় বোমা ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।


কিন্তু তাতে দমে যাননি বারাসতের এই এলাকার মানুষ। সকাল থেকে দল বেঁধে রাস্তায় অবরোধ করেছেন। তাঁরাই জানাচ্ছেন পুলিশ বা কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথাও নেই। নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। শুক্রবার সে কথা মনে করিয়ে পূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসফ নেতৃবৃন্দ। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর খোঁজ নেই। রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। 
শনিবার দেগঙ্গার গম্ভীরগাছি প্রাথমিক স্কুলে পৌঁছে দেখা গিয়েছে ভোটদাতাদের দীর্ঘ লাইন। ভোট পড়ার হার কম। এখানেও সিভিক পুলিশ দিয়ে ভোট করানোয় ক্ষোভ রয়েছে মানুষের। 
দেগঙ্গাতেও অশান্তির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। প্রচার পর্বে তৃণমূল বাধা দিয়েছে বারবার। কিন্তু মানুষ তারপরও ভোট দিতে বেরিয়েছেন।

 

ছবি : রবীন গোলদার

Comments :0

Login to leave a comment