ফের এটিএম লুটের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ভক্তিনগর থানার আশিঘর আউটপোষ্টের লোকনাথ বাজারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের এটিএম লুট করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। রাত প্রায় তিনটা নাগাদ টাটা সুমো করে দুষ্কৃতীরা এটিএমের মেশিন গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়।
জানা গেছে, এটিএম লুটের সময় পাশের একটি ফাঁকা জায়গায় টাটা সুমো গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিলো। গোটা লুটের বিষয়টি যাতে প্রকাশ্যে না আসে সেকারনে সিসি টিভিতে কালো স্প্রে করে দুষ্কৃতীরা এটিএম লুটের কাজ শুরু করে। গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম মেশিন কাটার ফলে আগুন লেগে যায় এটিএমে। এটিএম লুট করে পালানোর সময় আশিঘর আউটপোষ্টের পুলিশ ভ্যানের নজরে আসে টাটা সুমো গাড়িটি। টাটা সুমো গাড়িটির পিছু ধাওয়া করে পুলিশ। কিন্তু শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস হয়ে আশিঘর মোড়, ঘোগোমালির দিকে দ্রুত গতিতে টাটা সুমো গাড়িটি ছুটতে থাকে। অনেকটা দূর পিছু ধাওয়া করেও টাটা সুমো গাড়িটিকে ধরতে পারেনি পুলিশ। দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপরেই আশিঘর আউট পোষ্টের পুলিশের তরফে সমস্ত থানাগুলোকে সতর্ক করা হয়। পরে ভক্তিনগর থানার পুলিশ ডন বসকো মোড় থেকে টাটা সুমোর পিছু নেয়। কিন্তু টাটা সুমো গাড়িটিকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
এদিকে গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম মেশিন কাটার সময় এটিএমে আগুন লেগে গেলে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকে খবর দেয় আশিঘর আউট পোষ্টের পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি দমকল কেন্দ্র থেকেদমকলের একটি ইঞ্জিন। বেশ কিছু সময়ের প্রচষ্টায় দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ব্যাঙ্কের এক কর্মীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা লুট হয়েছে এটিএম কাউন্টার থেকে। খবর পেয়ে এদিন ঘটনাস্থলে আসেন আইসি ভক্তিনগর, এসিপি রবীন থাপা, ডিসিপি ইস্ট রাকেশ সিং। রাতেই এটিএম লুটের ঘটনার খবর পাবার পরেই শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি থানাকে সতর্ক করার পাশাপাশি জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তরদিনাজপুর জেলা পুলিশকে সতর্ক করা হয়। জানা গেছে, এটিএম লুটের ঘটনায় ব্যবহৃত টাটা সুমো গাড়িটি নিউ জলপাইগুড়ি থানার অম্বিকানগর থেকে চুরি করা হয়েছিলো। ঘটনার পর সেই গাড়িটি মাটিগাড়া থানা এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
যদিও এটিএম লুটের ঘটনায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে থানায় লিখিতভাবে কোন অভিযোগ জমা পড়েনি। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি ইস্ট রাকেশ সিং বলেন, পুলিশ দুষ্কৃতীদের পিছু ধাওয়া করেছিলো। দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে। এসিপি ইস্ট রবীন থাপা বলেন, সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। আশিঘর আউটপোষ্ট থেকে মাত্র ১কিমি দূরত্বে এটিএম লুটের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের ১৩ জুন ময়নাগুড়িতে এটিএম লুটের ঘটনা ঘটে। প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপর গত জুন মাসের ১৮ তারিখে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধাননগর থানা এলাকায় এটিএম লুটের ঘটনায় প্রায় ১১ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ২২জুন শিলিগুড়ি বিধান জুয়েলারিতে প্রায় ২২কোটি টাকার স্বর্নালঙ্কার লুটের ঘটনায় শহর জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের এটিএম লুটের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
Siliguri ATM
শিলিগুড়িতে ফের এটিএম লুট, খোয়া গেল প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা

×
Comments :0