Soumitra Chatterjee

বিকল্প হতে পারে একমাত্র বামপন্থাই লিখেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

জাতীয় রাজ্য

‘‘গোঁড়ামি তৈরি করতেই চালাকি করে ধর্ম আর রাজনীতি মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কে রামকে ভালোবাসেন কে রহিমকে তা কোন ব্যাপারই হতে পারে না। তাই বার বার মনে হয় এসবের বিকল্প হতে পারে একমাত্র বামপন্থাই।’’

২০২০’র ১৫ নভেম্বরই প্রয়াত হয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতা, কবি, নাট্যকর্মীর কথায় এবং লেখায় বারবার ফুটে উঠেছে গভীর সমাজভাবনা। ২০২০ সালের গণশক্তি’র শারদীয়া সংখ্যায় শেষবারের মতো কলম ধরে ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ‘এখনও বিশ্বাস করি বামপন্থাই বিকল্প’ প্রবন্ধের প্রতিটি ছত্রে তিনি ফুটিয়ে তুলে ছিলেন বামপন্থার প্রতি তাঁর বিশ্বাস, আবেগ এবং ভালোবাসা। সেই লেখায় ভারতবর্ষের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ৪৬’র দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে লিখেছিলেন যে সেই দাঙ্গার কোন প্রভাব তাঁর জেলা নদীয়া এবং কৃষ্ণনগরে পড়েনি। কিন্তু তাঁর ছোটবেলায় দেখা ভারত যেন ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। ক্রমশ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে গোটা ভারতবর্ষ। সেই অন্ধকার থেকে ভারত কোনদিন বেরিয়ে আসতে পারবে কি না নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে ছোটবেলার বন্ধু বেণু রহমান, বাড়ির দুর্গাপুজো আর সেই পুজোয় জাত ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের আনা গোনা সবই তিনি তুলে ধরেছিলেন গণশক্তিতে নিজের লেখায়।

২০২০ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যেই অন্ধকারের কথা বলেছিলেন আজ সেই অন্ধকার আরও গাঢ় হয়েছে। মানুষের জ্বালা যন্ত্রণা বেড়েছে। দারিদ্র বেড়েছে। কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির। বনবাসী রাম কি বিপুল বৈভবের মন্দিরে থাকে? সেই প্রশ্নও রেখে গিয়েছিলেন তিনি। রামের প্রসঙ্গ টেনে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘মজার বিষয় হলো যে রামের নামে মন্দির তৈরি হলো। সেই রামকে কিন্তু আমরা সকলেই ছেলেবলা থেকে চিনি, জানি। শত সহস্র বছর ধরে রাম একই রকম জনপ্রিয়। রাম আমাদের চোখের সামনেই থাকেন। ভালোবাসা, অনুপ্রেরনার জায়গায়। একটা কথা বলতে পারি যে রাম পিতৃসত্য পালনের জন্য বনবাসে যান, সেই রাম কি এই বিপুল বৈভবের মন্দিরে থাকতেন?’’

Comments :0

Login to leave a comment