মার্কিন চাপের কাছে নতিস্বীকার করল না ভেনেজুয়েলা। সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট ঘোষিত মার্কিনপন্থী বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাডো’কে ১৫ বছরের জন্য নির্বাচনী ক্ষেত্র থেকে বহিষ্কার করেছে দুর্নীতির অভিযোগে। এর পালটা আমেরিকার তরফে চাপ দেওয়া হয়। ওয়াশিংটনের তরফে বলা হয়, বিরোধী নেত্রীকে নির্বাচনের ময়দান থেকে সরিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে ভেনেজুয়েলা। একইসঙ্গে ভেনেজুয়েলার একটি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব খনি সংস্থার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। হুমকি দেওয়া হয়েছে, মাচাডো’র শাস্তি প্রত্যাহার না করা হলে ভেনেজুয়েলার আরও একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
যদিও সেই হুমকিকে গুরুত্ব না দিয়ে বুধবার ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, জাতীয় সংসদের বা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতেই ২০২৪’র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সূচি প্রকাশিত হবে।
নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে মাদুরো লিখেছেন, ‘‘আমাদের দেশের জনপ্রতিনিধিরা আমেরিকার দেওয়া সমস্ত হুমকি উপেক্ষা করেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। আমরা ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক সংহতিকে যেকোনও মূল্যে রক্ষা করব।’’
ভেনেজুয়েলার তরফে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত নিকোলাস মাদুরো’র সমাজতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতচ্যুৎ করতে প্রকাশ্যে একাধিকবার মার্কিন ও পশ্চিমী হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন মাচাডো। ২০১৭ সালে ভেনেজুয়েলার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও, নিষেধাজ্ঞার ফলে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির কয়েকশো বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। সামরিক হস্তক্ষেপের পাশাপাশি আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চালিয়ে যাওয়ার জন্যও সওয়াল করেন মাচাডো।
মাদুরো প্রশাসনের বক্তব্য, আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে কেউ রাশিয়া, চীন কিংবা উত্তর কোরিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপ চাইলে তাঁকে হয় মৃত্যদণ্ড দেওয়া হবে, নইলে দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড দেওয়া হবে। ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানির মত পশ্চিমী দেশেও একই ছবি। তারপরেও মাচাডো’কে ক্ষমা করা হয়েছে। তিনি কেবলমাত্র ভোটে লড়তে পারবেন না। এরপরেও যদি আমেরিকা মনে করে গণতন্ত্র ধ্বংস করা হচ্ছে, তাহলে ওয়াশিংটন ডিসির উচিত সবার আগে নিজেদের দেশের সংবিধান সংশোধন করা।
Comments :0