পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর আরও ১০ দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর প্রার্থীদের সুরক্ষা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কারণেই এই নির্দেশ আদালতের। এদিকে রাজ্যের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে বাহিনী মোতায়েন নিয়ে আগেই কলকাতা হাইকোর্ট তার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ যৌথভাবে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে যাতে মোতায়েন করা হয় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। এব্যপারে বিএসএফ-এর ডিজি’র ওপর বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিসন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত মামলার শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নির্বাচনের আগে রাজ্যে পৌঁছানো নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। শনিবার নির্বাচন। একদিন বাকি রয়েছে ভোট শুরুর। তার আগে মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে নির্বাচনের দফা বাড়ানোর জন্য।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই ৪৮৫ কোম্পানি আধাসেনা কোন কোন জেলায় মোতায়েন করা হবে তা নিয়ে বিএসএফের ডিজি’র কাছে বার্তা পাঠিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দেওয়া স্পর্শকাতর জেলা এবং স্পর্শকাতর বুথের তালিকা বিএসএফ-এর কাছে পৌঁছেছে। সেই তালিকাকে ভিত্তি করে ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন নিয়ে একটি প্রাথমিক খসড়া তৈরি হয়েছে। সেই তালিকায় মুর্শিদাবাদ জেলাতে ৪৭ কোম্পানি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৫৮ কোম্পানি, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ৩৬ কোম্পানি, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৬ কোম্পানি,হুগলীতে ৩৮কোম্পানি বাহিনী রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু করে অন্যান্য জেলাগুলিতে এই আধাসেনা মোতায়েনের খসড়া প্রস্তুত রয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে যে বাহিনী এসে পৌঁছেছে তার বড় অংশই বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এদিন রাজভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কঠোর সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বলেছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য হিংসার মোকাবিলা করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। হিংসা রুখতে কমিশনারকে নিরপেক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনের আগে এত মানুষের মৃত্যুর দায় কে নেবে? মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নজরদারি বাড়াতে হবে। নকল ব্যালট ছাপানো হচ্ছে কীনা সেদিকে নজর রাখতে হবে। নির্বাচনে মানুষের কথা শুনেই নির্বাচন কমিশনারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
Comments :0