BRITAIN GENERAL ELECTION

সরকার বদলের প্রত্যাশায় ভোটের লাইনে ব্রিটেন

আন্তর্জাতিক

BRITAIN ELECTION BENGALI NEWS

ব্রিটেনের হাউস অফ কমোন্‌সের ৬৫০টি আসনের নির্বাচন চলছে। জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী বিপুল ভোটে জিততে চলেছে লেবার পার্টি। সমীক্ষার রিপোর্ট সঠিক প্রমাণিত হলে ৪০০’র বেশি আসন নিয়ে ঋষি সুনক সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে কায়ার স্টার্মারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। 

ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, নির্বাচন শেষ হলে শুরু হবে ভোট গণনা। শুক্রবার সকালে জানা যাবে নির্বাচনের ফল। গত ১৪ বছর ধরে ব্রিটেনের ক্ষমতায় রয়েছেন রক্ষণশীল বা কনজারভেটিভ’রা। ধারাবাহিক রক্ষণশীল সরকারের আমলেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এসেছে ব্রিটেন। সামান্য ব্যবধানে গণভোটে জয়ী হয়েছিল কনজারভেটিভরা। তারফলে ‘ব্রেক্সিট’ সফল হয়। 

রক্ষণশীলদের শাসনকালে ব্রিটেনের অর্থনীতির দ্রুত গতিতে পতন হয়েছে। বিরোধীরা, বিশেষ করে লেবার পার্টি এরজন্য ব্রেক্সিটকে দায়ী করেছে। এর পাশাপাশি রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আমেরিকার সহযোগীর ভূমিকা নিয়ে রাশিয়া থেকে সস্তায় খনিজ জ্বালানীর আমদানি বন্ধ করেছে ব্রিটেনের সরকার। তারফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বাড়ির ভাড়া। তারফলে ক্রয়ক্ষমতা কয়েকগুণ কমেছে দেশের শ্রমজীবী অংশের মানুষের। 

ব্রিটেনের মানুষের বক্তব্য, ঋষি সুনকের পাশাপাশি প্রাক্তন রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের অর্থনৈতিক নীতির ফলে সমাজে বৈষম্য বেড়েছে। লাগামছাড়া হারে বেড়েছে বিদ্যুতের বিল। মূল্যবৃদ্ধির হার সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি নীতির ফলে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বা এনএইচএস’র বরাদ্দ কমিয়েছে রক্ষণশীল সরকার। তারফলেও সাধারণ মানুষ সঙ্কটে পড়েছেন। ভর্তুকি যুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা সঙ্কুচিত হয়ে আসায় সাধারণ মানুষের পকেটে টান পড়েছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লেবার পার্টির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ক্ষমতায় এলে এনএইচএসের বরাদ্দ বাড়ানো হবে। বেড়ে চলা বাড়ি ভাড়ার হারও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। জনমত সমীক্ষায় স্পষ্ট, সেই প্রচারে বিপুল সাড়া পড়েছে। 

এই নির্বাচনে লেবার পার্টির মূল স্লোগান হল, পরিবর্তনের জন্য ভোট দিন। বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে কায়ার স্টার্মার বলেছেন, ‘‘ব্রিটেনের ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখার নির্বাচন এটা।’’

অপরদিকে রক্ষণশীলদের তরফে জোর প্রচার চালানো হয়েছে, ‘‘ বিনামূল্য পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্ত ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি করবে লেবার সরকার। তাই তাদের ‘সুপার মেজরিটি’ বা নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাওয়া আটকাতে হবে।’’

ঋষি সুনক নিজে একাধিক সভায় বলেছেন, এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে না লেবার সরকার। আপনাদের কষ্টের অর্জিত টাকা দিয়ে বিনামূল্যের পরিষেবা বিলিয়ে বেড়ানো হবে। এটা আটকাতেই হবে।’’

লেবার এবং কনজারভেটিভ’দের পাশাপাশি নির্বাচনের দৌড়ে রয়েছেন লিবারাল ডেমোক্র্যাটরা। একাধিক সমীক্ষায় তাঁদের ৬০টি আসন দেখানো হয়েছে। এছাড়াও স্কটিশ ন্যশনাল পার্টি, গ্রীন পার্টি, রিফর্ম পার্টির দলগুলি নির্বাচনে লড়ছে। 

২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টিকে নেতৃত্ব দেন জেরেমি করবিন। ব্রিটেনের রাজনীতিতে তিনি বামমুখী বলেই পরিচিত। আভ্যন্তরীণ সঙ্কটে তিনি দল ছাড়লেও নিজের নীতি আঁকড়ে নির্দল হয়ে লন্ডনের আইলিংটন নর্থ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন করবিন। আশির দশকের গোড়া থেকে এই আসনে লেবারের টিকিটে জিতে আসছেন করবিন। এখন দেখার, নির্দল হয়ে লড়েও নিজের গড় রক্ষা করতে পারেন কিনা জেরেমি করবিন।

 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment