তৃণমূল-পুলিশের যৌথ চক্রান্তে দাসপুর-২ ব্লকের চকসুলতান মেহনতি কিষাণ সমবায় সমিতির নির্বাচন স্থগিত করার ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে রবিবার এলাকার ৫টি গ্রামের আটটি মৌজার সাত কিলোমিটার পথে বিক্ষোভ মিছিল হলো। অবিলম্বে নির্বাচন করার দাবিতে সমবায়ীদের বিশাল প্রতিবাদ মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে, ‘সমবায় বাঁচাও-চোর তৃণমূল হঠাও’। এদিনের বিক্ষোভ মিছিলে মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল নজরকাড়া। 
প্রসঙ্গত, রবিবারই এই সমবায়ের নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষিত হয়েছিল সকাল সাতটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।  হঠাৎ করেই শনিবার বিকাল তিনটার সময় সমবায় দপ্তরে এসে নির্বাচন স্থগিতের নোটিশ লাগাতে আসেন ঘাটাল মহকুমা সমবায় দপ্তরের এক আধিকারিক। সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। সমবায়কে তৃণমূলী চক্রান্ত থেকে রক্ষা করতে জনরোষ ছড়িয়ে পড়ে সঙ্গে সঙ্গে। শত শত মহিলা সহ সমবায় উপভোক্তাদের তুমুল বিক্ষোভ, পথ অবরোধ শুরু হয়। মহকুমা সমবায় আধিকারিক এআরও’কে ঘেরাও করে রেখে নির্দিষ্ট নির্ঘন্ট অনুয়ায়ী সমবায় পরিচালন কমিটির নির্বাচনের দাবিতে সরব হন উপভোক্তারা। দাসপুরের চকসুলতানে ঘাটালগামী রাজ্য সড়ক অবরোধে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিশাল পুলিশবাহিনী র্যাচফ নামিয়ে আন্দোলনকারীদের হঠাতে গেলে সংঘর্ষ হয়। রাত পর্যন্ত চলে সেই বিক্ষোভ। স্বতঃস্ফূর্ত ওই বিক্ষোভে শোরগোল পড়ে যায় দাসপুর জুড়ে। 

সমবায় বাঁচাও মঞ্চের জেলা সম্পাদক গণেশ সামন্ত এদিন বলেন, নির্বাচন স্থগিত করে তৃণমূল প্রশাসক বসিয়ে লুটে খাওয়ার মতলবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, এখানে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে সমবায় বাঁচাও মঞ্চের ৪১ জন প্রতিনিধি জয়লাভ করে। এরপর ২০২০ সালে ভোট বন্ধ করায় উপভোক্তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট ভোটের নির্ঘন্ট বেঁধে দেওয়ায় তৃণমূল সেই নির্বাচনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। এবারের প্রতিনিধি নির্বাচনেও সমবায় বাঁচাও মঞ্চের পক্ষে ৪১টি আসনের সবগুলোতে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল ৭টি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। তিনি বলেন, এই জেলায় তৃণমূলের লুটের কারণে ৭২টি সমবায় বন্ধ হওয়ায় আমানতকারীরা তাঁদের টাকা দীর্ঘ ৫-৭ বছর ধরে ফেরত পাচ্ছে না। সেই লুটের পরিমাণ জেলায় ২৫৯ কোটি টাকার বেশি। সবচেয়ে বেশি লুঠ ডেবরা ব্লকের পাটনা সমবায়ে, যা ৩৫ কোটি টাকারও বেশি।
শনিবারের ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে জনহিতকর এই সমবায়কে রক্ষা করার দাবিতে এদিন সমবায় দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল হয়। সেই মিছিল চকসুলতান, সিংহচক, জোতভগবান, চককিশোর, জোতগোবর্ধন ইত্যাদি ৫টি গ্রামের আটটি মৌজার মধ্যদিয়ে সংগঠিত হয়।