সরকারি পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগ। নিয়োগপত্র দিচ্ছেন ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হাতে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে মঞ্চ করে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রের মন্ত্রীদের পাঠিয়ে। ৭১ হাজার নিয়োগপত্র দেওয়ার অনুষ্ঠান প্রচার হয়েছে। দেখা যাচ্ছে কেবল কেন্দ্রীয় সরকারেরই বিভিন্ন পদে খালি রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ পদ। এর বাইরেও পদ খালি রয়েছে রেল বা ব্যাঙ্কের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে, নিয়োগের জন্য বরাবর যেখানে ভরসা করেন যুবরা।
এ বছরের আগস্টে লোকসভায় কেন্দ্রই জানিয়েছিল ফাঁকা পদের সংখ্যা ৯ লক্ষ ৭৯ হাজার। ফাঁকা ২৩ হাজার ৫৮৪ ‘গ্রুপ-এ’, ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮০১ ‘গ্রুপ-বি’ এবং ৮ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯৩৬ ‘গ্রুপ-সি’ পদ। কর্মীনিয়োগ, জন অভিযোগ এবং পেনশন প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছিলেন যে ২০২১’র মার্চ পর্যন্ত তথ্য রয়েছে সরকারের কাছে। কেন্দ্রের সব মন্ত্রক এবং ৩৮টি বিভাগের হিসেব জানান সিং, যিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীও। সরকারের নথিতেই দেখা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদীর আট বছরে পরপর কমেছে কেন্দ্রীয় পদে নিয়োগ।
মঙ্গলবার ‘রোজগার মেলা’ উদ্বোধন করে মোদী বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যুবদের নিয়োগ করছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতেও রোজগার মেলা হচ্ছে। বিজেপি এবং এনডিএ সরকার রয়েছে যে যে রাজ্যে, যেমন উত্তর প্রদেশ এবং গুজরাট, সেখানেও অনুষ্ঠান থেকে যুবদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে চাকরির নিয়োগপত্র।’’ গোয়া এবং জম্মু সরকারি পদে নিয়োগের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীদের নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার দরকারই পড়ে না। এসএসসি, রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড, ইউপিএসসি’র মতো প্রতিষ্ঠান পরীক্ষা নিয়ে মেধাতালিকা প্রকাশ করে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চিঠি পৌঁছায় সফল পরীক্ষার্থীদের কাছে।
কর্মহীনতার সঙ্কট ঢেকে রাখা যাচ্ছে না বলে রোজগার মেলার নামে প্রচার চলছে বলে মনে করছে বিভিন্ন অংশ। গত জুনে মোদী ঘোষণা করেন যে দেড় বছরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারি ১০ লক্ষ পদে নিয়োগ হবে। সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০২২’র মধ্যে আট বছরে বিভিন্ন চাকরির জন্য কেন্দ্রের কাছে জমা পড়েছে ২২ কোটি ৬ লক্ষ আবেদন। তার মধ্যে চাকরি পেয়েছেন ৭.২২ লক্ষ। তারপরও শূন্যপদ প্রায় ১০ লক্ষ। ২০১৪-১৫’তে কেন্দ্রের নিয়োগ হয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার পদে। ২০১৫-১৬’তে নিয়োগ হয়েছে ১ লক্ষ ১১ হাজার পদে। কিন্তু ২০১৭-১৮’তে নিয়োগ হয়েছে ৭৬ হাজার পদে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে নিয়োগ ৩৮ হাজার পদে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে নিয়োগ হয়েছে ৭৮ হাজার পদে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে নিয়োগ হয়েছে ৩৮ হাজার পদেই। মোদীর প্রথম বছরের তুলনায় বার্ষিক নিয়োগ কোনও কোনও বছরের চারভাগের একভাগে পর্যন্ত নেমে এসেছে।
Comments :0