KHARAGPUR WORKERS PROTEST

মৃত শ্রমিকের দেহ লোপাট, তুমুল বিক্ষোভে পালালো তৃণমূল-পুলিশ

জেলা

খড়্গপুরে রেশমি মেটালিক্সের শ্রমিকরা এভাবেই চালিয়েছেন বিক্ষোভ, যুঝেছেন তৃণমূল আর পুলিশের সঙ্গে।

চিন্ময় কর: খড়্গপুর

তৃণমূল কংগ্রেসের মস্তান ও পুলিশের প্রশাসনের যৌথ হামলাকে প্রতিহত করলেন শ্রমিকরা। জনরোষের চেহারা নিয়ে তুমুল শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল হলো খড়্গপুর গ্রামীণের গোকুলপুর মৌজায় রেশমি মেটালিক্সের ৪ নম্বর ইউনিট কারখানা। কারখানায় কর্মরত অবস্থায় মৃত ও আহত শ্রমিকদের গোপন জায়গায় লুকিয়ে ফেলার মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন শ্রমিকরা।
শ্রমিক নিরাপত্তার ন্যূনতম পোশাক পরিকাঠামো ছাড়াই ঝুঁকির কাজ করানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বুধবার রাতে কারখানায় কর্মরত অবস্থায় বয়লারের টাওয়ার ভেঙে পড়ায় একাধিক শ্রমিক আহত হন। এক জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা আড়াল করতে কারখানার কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ সরিয়ে ফেলতে নামে। আহতদের চিকিৎসা কোথায় হচ্ছে, তাও চেপে দেওয়া হয়। 
এর আগেও এমন ঘটনা গত কয়েক বছরে আট থেকে নয় বার হয়েছে। ফুটন্ত লোহার তরলের ট্যাঙ্ক, কখনো বয়লার ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে একাধিক। মাত্র দু’বার মৃতদের দেহ উদ্ধার হলেও বাকি ঘটনাগুলিতে দেহ বয়লারে ফেলে লোপাট করার অভিযোগ রয়েছে। তেমনি দেহ সরিয়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে।
এমন অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে শামিল হেন। দাবি ওঠে মৃতদেহ বের করতে হবে। আহতরা কোথায় জানাতে হবে। তিনটি শিফটে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত ধরনের পরিকাঠামো সহ সাজ সরঞ্জাম দিতে হবে।
এমন দাবিতে কারখানার মধ্যেই এই প্রথম হাজার হাজার শ্রমিক ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলের মস্তান বাহিনীর হুমকি রুখে দিয়ে আন্দোলনে শামিল হলেন।  এরপর পুলিশকে নিয়ে তৃণমূলের বাহিনী শ্রমিকদের সেই আন্দোলন স্তব্ধ করতে নামলে দফায় দফায় কারখানার মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ  চলে। আন্দোলনরত  তিন-চার জন শ্রমিক আহত হলে শুরু হয় শ্রমিকদের তুমুল বিক্ষোভ। পুলিশ ও দুষ্কৃতী বাহিনীকে ঘিরে ধরেন শ্রমিকরা। পালাতে হয় পুলিশ ও তৃণমূলের বাহিনীকে। 
শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষের থেকে মোটা টাকা তোলে তৃণমূল। তার বিনিময়ে শ্রমিকদের আন্দোলনকে দাবিয়ে দেওয়া হয়। এবার এই অন্যায় মেনে নিতে নারাজ শ্রমিকরা। শ্রমিকরা দাবি করেছিলেন মৃত শ্রমিকের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ এবং কারখানার কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কাজের জন্য সাজ সরঞ্জাম দিতে হবে। আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত প্রশসন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়। 
বুধবার রাতে কারখানায় এক চুক্তি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। মৃত শ্রমিকের নাম রাহুল কুমার ( ৩৭)। বাড়ি বিহারে। আহত হয়েছেন আরেও ৫ শ্রমিক। তাঁদের চিকিৎসা কোথায় হচ্ছে তা এখনো পর্যন্ত জানানো হয়নি।

Comments :0

Login to leave a comment