দেশের অন্নদাতাদের দিন দিন পরিস্থিতি ভয়ানক হচ্ছে। কৃষিপণ্যের লাভজনক দাম চাইলে, সার বীজ কীটনাশক ডিজেলের দাম কমানোর দাবি তুললে, পুলিশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়। মিছিলের রাস্তা বন্ধ করা হয়। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়, লাঠিপেটা করা হয় কৃষকদের।
রবিবার ধূপগুড়িতে আলুচাষীদের কনভেনশনে এভাবেই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রাদেশিক কৃষকসভার নেতৃবৃন্দ। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলার আলুচাষীদের নিয়ে কনভেনশন হয়েছে। রাজ্যে একের পর এক আলুচাষীকে আত্মঘাতী হতে হয়েছে দেনার দায়ে।
কৃষক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, কৃষি প্রধান দেশে কৃষকদের সঙ্গে একই আচরণ করছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবং কেন্দ্রের বিজেপি। সব কৃষি পণ্যকে কর্পোরেট মালিকদের হাতে তুলে দিয়ে দেদার মুনাফা করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ উৎপাদক কৃষক নিজের রক্ত ঘামের ফসলের দাম নিজে চাইতে পারছেন না। তাঁকে সেই অধিকারও দেওয়া হচ্ছে না। আলু অর্থকরি ফসল হলেও কেন্দ্র এবং রাজ্য, দুই সরকারের নীতির কারণে আলুচাষীদের আজ কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। সারা ভারত কৃষক সভার লাগাতার আন্দোলনের পথেই রয়েছে।
কনভেনশন উদ্বোধন করেন কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক আশিস সরকার। জেলা সভাপতি প্রাণগোপাল ভাওয়াল আলুচাষীদের সমস্যা এবং দাবি নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই সভা পরিচালনা করেন জিতেন দাস প্রাণগোপাল ভাওয়াল আকিক হাসান বিপিন শীলকে নিয়ে গঠিত সভাপতি মন্ডলী। তিন জেলা থেকে দু’শোর বেশি আলু চাষি অংশ নেন।
প্রতিনিধিরা বলেছেন, আলু চাষের সরকারি ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা। ব্লকের কৃষি আধিকারিকরা সেসব তৃণমূলের নেতা ও পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দেন। কিন্তু তা কৃষকদের বিলি করা হয় না।
কৃষকসভা প্রস্তাবে বলেছে, বামফ্রন্ট সরকার নীতি নিয়েছিল উৎপাদিত আলু হিমঘরে সংরক্ষণের জন্য কৃষক ৮০ শতাংশ, আপৎকালীন মজুতের জন্য সরকার ১৫ শতাংশ এবং হিমঘর মালিক ৫ ভাগ পাবেন। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে সব ব্যবস্থা তুলে দিয়ে ফাটকাবাজি করার সুযোগ দিয়েছে ফড়েদের। আলুর দাম পড়ে গেলে বামফ্রন্ট সরকার পরিবহণে ভর্তুকি দিয়ে ভিন রাজ্যে পাঠানোর উদ্যোগ নিত। এখন ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ।
কৃষকসভার রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক পরেশ পাল তাঁর বক্তব্যে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কৃষকবিরোধী ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন।
সভা থেকে আট দফা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় আলুচাষীদের পক্ষে লড়াইয়ের অভিমুখে।
Comments :0