দুই কোচই দল বদলেছে। পুরানো দ্বৈরথটা রয়ে গিয়েছে। কার্লেস কুয়াদ্রাত বনাম সের্জিও লোবেরা। দ্বৈরথে এগিয়ে কুয়াদ্রাত। চারবার লোবেরাকে হারিয়েছে কুয়াদ্রাত। এই শুক্রবার যুবভারতী স্টেডিয়ামে কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি লোবেরার ওডিশা। এবারও কি কুয়াদ্রাত, লোবেরার বিরুদ্ধে জয়ের ধারা বজায় রাখতে পারবেন? অতীতে ওডিশার বিপক্ষে ইস্টবেঙ্গলের পরিসংখ্যান ভালো নয়। কুয়াদ্রাতের ছোঁয়াই বছরের শেষে ম্যাচে (ঘরের মাঠে) ওডিশার বিরুদ্ধে জয়ের মুখ দেখবে ইস্টবেঙ্গল? এই দু’টি প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে মাঠে যাবেন সমর্থকরা। তবে ইস্টবেঙ্গল শেষ চারটি ম্যাচে অপরাজিত। ক্লিনশিটের হ্যাটট্রিক। যদিও জয় পেয়েছে মোটে একটি ম্যাচে। রক্ষণ জমাট। কিন্তু আক্রমণভাগ ধারাবাহিক নয়। শেষ দু’টি ম্যাচে গোল করতে পারেনি ক্লেটন সিলভা, নাওরেম মহেশ সিংরা। ওডিশার বিরুদ্ধে গোল করতে না পারলে জয়ে ফেরা সম্ভব নয়। তাই এদিনের অনুশীলনে বাড়তি পরিশ্রম করলেন তাঁরা দু’জন। এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট এলে ফের পয়েন্ট তালিকায় ছয়ে ওঠার হাতছানি লাল হলুদের সামনে।
এদিন নিশু কুমারকে পাশে নিয়ে কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত জানিয়েছেন, ‘ঘরের মাঠে তিন পয়েন্ট নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা নামব। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের রক্ষণ ভালো খেলেছে বলা হচ্ছে। যা এতদিনের পরিশ্রমের ফসল। আগামীতে আরও ভালো ফুটবল দেখতে পারবেন।’ সাংবাদিক সম্মেলনে আইএসএলের রেফারিং নিয়ে প্রশ্ন উঠল। মোহনবাগান সুপারজায়ান্ট বনাম মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচে সাতটি লাল কার্ড দেখানোর ঘটনায় ভারতীয় ফুটবল তোলপাড়। রেফারিং নিয়ে সরব কুয়াদ্রাতও। বলছেন, ‘আপনারা যদি ইউরোপের ফুটবলের দিকে লক্ষ্য করেন তাহলে ভার প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমাদের এখানে তা নেই। প্রতিটি দল খারাপ রেফারিংয়ের শিকার হচ্ছে। বলা হচ্ছে ভার প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হতে আরও বছর দুয়েক লাগবে। ততদিন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।’ ইস্টবেঙ্গল ওডিশার বিরুদ্ধে রক্ষণে জমাট রেখে প্রতি আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টাই করবে। রক্ষণের ফাঁকফোকর থাকলে, সেখান থেকে সুবিধে তুলতে ওস্তাদ। রয় কৃষ্ণ, দিয়েগো মৌরোসিও, জাহুর মতো ফুটবলাররা। এছাড়াও ওডিশার সেটপিস থেকে গোল করা আটকাতে আলাদা পরিকল্পনা করতেই হবে। যদিও ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে লম্বা চওড়া দুই ডিফেন্ডারের উপস্থিতি ভরসা দেবে কোচকে। গত ম্যাচে হিজাজী মাহের নিখুঁত পারফরম্যান্স ইতিবাচক দিক। ১৪ বার বল ক্লিয়ারেন্স করেছেন তিনি। সঙ্গে পার্দো কার্ড সমস্যায় কাটিয়ে ফিরছেন। পার্দো-হিজাজীকে একসঙ্গে খেলাবেন কুয়াদ্রাত? খেলালে তাঁর দল উপকৃত হবে। ওডিশার বিরুদ্ধেও নন্দকুমারের পরিবর্তে শুরু করবেন পিভি বিষ্ণু।
অন্যদিকে, যুবভারতীতে লোবেরার রেকর্ড ঈর্ষণীয়। এখানে শেষ দু’টি ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মতো দলকে তাঁর দল সাত গোল দিয়েছে। ফের যুবভারতীতে ফিরে আসতে পেরে যথেষ্ট খুশি তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে হুঙ্কারের সুরে বলে গেলেন, ‘ইস্টবেঙ্গলের থেকে ব্যবধানটা অন্তত দশ পয়েন্ট করে নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা মাঠে নামব। আমরা দাঁড়িয়ে ১৭ পয়েন্টে। ইস্টবেঙ্গল দশ পয়েন্টে।’ তাঁর কথাতেই বোঝা যাচ্ছে লোবেরো জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছেন না। ওডিশা এফসির দাপুটে ফুটবলের নেপথ্যে রয়েছেন জাহ,মুর্তাদা ফল,এলগার্ডো,জেরির মত ছন্দে থাকা ফুটবলার। এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে উঠেছে তাঁরা। সমস্ত প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ আট ম্যাচে অপরাজিত তাঁরা। আইএসএলে পাঁচ নম্বরে রয়েছে। ইস্টবেঙ্গলকে হারালে একলাফে দ্বিতীয় স্থানে ওঠার সুযোগ ওডিশার সামনে। তাই ওডিশা যেন একটু বেশিই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।প্রতিপক্ষের চেয়ে ইস্টবেঙ্গল অনেক বেশি শান্ত।
ইস্টবেঙ্গল: ওডিশা
(ম্যাচ শুরু রাত আটটা)
Comments :0