দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি
দশমীর সন্ধ্যায় মাল নদীর বিসর্জন ঘাটে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রার মধ্য দিয়ে প্রতিমার নিরঞ্জন করা হয়। কিন্তু গত বছরের বিসর্জনের রাতে মাল নদীতেই হড়পা বানের জলের স্রোতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
মাল নদীর নিরঞ্জন ঘাটের মেলা সরিয়ে এনে মালবাজার শহরের দমকল বিভাগের কার্যালয়ের পাশে থাকা ফাঁকা জায়গায় করা হচ্ছে। নিরঞ্জন ঘাটে সাধারণ নাগরিকরা কেউই প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে গত বছরের বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে পূজো কর্মকর্তারা তাঁদের প্রতিমা নিয়ে দমকল বিভাগের কার্যালয় পর্যন্ত এসে উপস্থিত হবে। এরপরই প্রশাসনিক উদ্যোগে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হবে মাল নদীর নিরঞ্জন ঘাটে। বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হবে। সেখানে প্রতিটি পুজো কমিটির তরফে পাঁচজন সদস্যের প্রবেশাধিকার থাকবে।
তবে শহরের ঘড়ি মোড়, সুভাষ মোড়, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর অনুষ্ঠিত হবে বিসর্জনের কার্নিভাল। গতবারের বিসর্জনের দিন, ৫ অক্টোবর বিপর্যয় ঘটেছিল। মালবাজারের পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও উঠেছিল। মঙ্গলবার স্বপন সাহার দাবি প্রশাসনিকস্তর থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য গত বছর হড়পা বানের পিছনে পেটোয়া ঠিকাদারকে দিয়ে নদীর মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল এই পৌরপ্রধানের বিরুদ্ধেই। নদীর বুকে বুলডোজার দিয়ে কৃত্রিম বাধ দিয়ে রীতিমতো মেলার আয়োজন করেছিলেন মাল পৌরসভার চেয়ারম্যান। আচমকা বানে ভেসে গিয়েছিলেন বিসর্জন দেখতে আসা ৮ জন।
মালবাজার শহরের পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত তপনকান্তি দে বললেন, ‘‘নদীর ঘাটে না যেতে পারার আক্ষেপ অবশ্যই থাকবে। তবে গতবারের বিসর্জনের ভয়াবহতা ভোলার নয়।’’
মালবাজার শহরে মানুষের মধ্যে এখনও আলোচনায় রয়েছে গত বছরের বিপর্যয়। এত বড় বিপর্যয়ের ঘটনার মূল অভিযুক্ত স্বপন সাহার বিরুদ্ধে এক বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সরকার বা শাসক দল। বরং, তাঁর পেটোয়া ঠিকাদার, যাকে ওই মাল নদীতে ওই খাতের বরাত দেওয়া হয়েছিল, তাঁকে ভালো ভূমিকার জন্য পুরস্কৃত করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
অক্টোবরের বিসর্জনের ভয়াবহতার ক্ষতে হতে প্রলেপ দিতেই কি সরকারি উদ্যোগে এবারের কার্নিভ্যাল? বিসর্জনের দিন এই প্রশ্ন রয়েছে জলপাইগুড়ির মালে।
Comments :0