Post Editorial

গাজা নিয়েও সঙ্ঘ ব্যস্ত হিন্দুত্ববাদ প্রচারেই

উত্তর সম্পাদকীয়​


সুশোভন
প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেমার বিখ্যাত ইন্টারভিউর দৃশ্য। প্রটাগনিস্ট ধৃতিমান চ্যাটার্জি, ওরফে সিদ্ধার্থ চৌধুরি। তিনজন ইন্টারভিউয়ার। কোট, প্যান্ট, টাই, চোখে মোটা গ্লাসের চশমা, মুখের বলি রেখা, ঠোঁটে চুরুটের পরতে পরতে গাম্ভীর্য। উলটো দিকে চাকরি প্রত্যাশী সাদামাটা সিদ্ধার্থ চৌধুরি। কিছু স্বাভাবিক অ্যাকাডেমিক প্রশ্ন পেরিয়ে ইন্টারভিউয়ার সিদ্ধার্থ জিজ্ঞেস করেন, গত দশকে মানব সভ্যতার সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘটনা কোনটা বলে সে মনে করে! সিদ্ধার্থ জবাব দিয়েছিল, “ওয়ার ইন ভিয়েতনাম।” ইন্টারভিউয়ারদের তখন চক্ষু চড়ক গাছ। সদ্য তখন চাঁদের মাটিতে পা দিয়েছেন নীল আমস্ট্রংরা। “ওয়ান স্মল স্টেপ ফর অ্যা ম্যান, অ্যা জায়েন্ট স্টেপ ফর ম্যানকাইন্ড” তখন ভাইরাল। আর এই ছোঁড়া কিনা বলছে “ওয়ার ইন ভিয়েতনাম”? 
উত্তরে অবিচল থেকে ব্যাখা দেয় সিদ্ধার্থ। মুন ল্যান্ডিং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং মানব সভ্যতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ঘটনা হলেও সেটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু আমেরিকা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ভিয়েতনামবাসীদের প্রতিরোধ এবং জয় অপ্রত্যাশিত, অভাবনীয় এবং অদম্য ইচ্ছা শক্তির গৌরব গাথা। ব্যাখা শুনে ইন্টারভিউয়ার সিদ্ধার্থকে জিজ্ঞেস করেছিলেন “আর ইউ অ্যা কমিউনিস্ট?” স্মার্টলি সিদ্ধার্থ বলেছিল, ভিয়েতনামবাসীর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে কমিউনিস্ট হতেই হবে এমন তো কোনও মানে নেই!
সত্যজিৎ রায়ের প্রাসঙ্গিকতা এখানেই যে ঐ সিদ্ধার্থর উত্তরটা আজও হুবহু ব্যবহার করা যায় অবলীলায়। প্যালেস্তাইনে যে গণহত্যা বিগত প্রায় ৩৭ দিন ধরে চলছে, সেটার বিপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য কমিউনিস্ট হতেই হবে এমন তো কোনও মানে নেই, মানবিক হলেই যথেষ্ট। গাজাতে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের তালিকায় সিংহভাগ শিশু এবং মহিলা।
যারা ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের যুদ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা আসলে রাস্তার ট্রাফিক লাইটকে ডিস্কো লাইট ভাবছেন। কোনও যুদ্ধ হচ্ছে না। যেটা হচ্ছে সেটা প্যালেস্তাইনের সাধারণ মানুষের গণহত্যা। মাইলের মাইল ধ্বংসস্তূপে, জল নেই, বিদ্যুৎ নেই, জ্বালানি নেই! হাসপাতালে পর্যন্ত বোমাবর্ষণ হয়েছে! কমিউনিস্টরা তো বটেই যে কোনও মানবিক মানুষই এই নৃশংসতার প্রতিবাদ করবে। সেটাই স্বাভাবিক। 
ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন ফ্যাসিবাদ 
প্যালেস্তাইনে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে, তার ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব এসব বহুল চর্চিত। রাষ্ট্রসঙ্ঘ কেন আজ অবধি প্যালেস্তাইনের জনগণের স্বভূমির বৈধ অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে পারল না? প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলের অবৈধ বসতি এবং ভূমি কেন দখল প্রত্যাহার হলো না? দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব আজ অবধি কেন বাস্তবায়ন হলো না? পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো না? এসব প্রশ্নের উত্তরেই তো লুকিয়ে সমস্যার এপিসেন্টার। বহু গবেষক, ইতিহাসবিদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই কথা বহুদিন ধরে বলছেন। গত ৩৭ দিনে বহু পেটা বাইট ডেটা আর ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন প্রিন্ট খরচা হয়েছে এই সরল প্রশ্নগুলির কঠিন উত্তর খুঁজতে! 
কিন্তু তাত্ত্বিক আলোচনাতেও একটা বিষয় চর্চার মধ্যে প্রয়োজনের তুলনায় কম আসছে সেটা সঠিক রাজনৈতিক বোঝাপড়ার জন্য প্রয়োজন শুধু না জরুরি। সাফ কথা সহজে, এই ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন দ্বন্দ্বে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছিল নাৎসি জার্মানিতে ইহুদিদের এথনিক ক্লিন্সেনিং। পরবর্তীকালে ইহুদিদের দলে দলে প্যালেস্তাইনের জমিতে চলে আসা আরবদের হটিয়ে দিতে থাকে।  পুঁজিবাদের ব্যর্থতা, অর্থনৈতিক মন্দা, তার রিপেল এফেক্টে হিটলারের উত্থান এবং অতঃপর ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন ফ্যাসিবাদ– এমন গভীর ও সদূরপ্রসারী ক্ষত তৈরি করে গেছে যে আজও তার খেসারত দিতে হচ্ছে প্যালেস্তাইনের মতো একটা নিরপরাধ রাষ্ট্রকে। ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন বর্তমান সময়েও একইরকম ভাবে প্রতিভাত। শুধু ইজরায়েল বা আমেরিকা জুড়ে নয় তাঁর ব্যাপ্তি আমাদের দেশেও ছড়িয়ে এমনকি ছড়িয়ে টেকনিক্যল দুনিয়াতেও!    
পক্ষপাত দুষ্ট অ্যালগরিদম  
সম্প্রতি ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে প্যালেস্তাইন দরদি যে কোনও পোস্টের ইচ্ছাকৃত ভিজিবিলিটি কমিয়ে দিচ্ছে মেটা। এর আগেও এই অভিযোগ উঠেছে ব্রেক্সিটের সময়, অ্যামাজন অরণ্যের ধ্বংসের সময় কিংবা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সময়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, এটা কি টেকনিক্যালি সম্ভব? সহজ উত্তর হলো একেবারেই সম্ভব এবং এটা বাস্তবে হচ্ছেও। 
প্রতিটা রান্নার যেমন নির্দিষ্ট একটা রেসিপি আছে; যেমন আপনি শুক্তোতে শুকনো লঙ্কা, আদাবাটা পাঁচ-ফোড়ন ব্যবহার করেন, ভিনিগার তো ঢালেন না, চিলি চিকেনে ক্যাপ্সিকাম ব্যবহার করেন কাঁচকলা তো দেন না; ঠিক সেরকমই যেকোনও কম্পিউটার গত বিষয়েও একটা রেসিপি আছে– টেকনিক্যাল টার্মে, অ্যালগরিদম। রেসিপি যেমন ধাপে ধাপে আপনাকে বলে দেয় কোন তেল ব্যবহার করবেন, কোন রান্নার শেষ চিনি মেশাবেন, কোনটায় কসুরি মেথি তড়কা মারবেন; ফেসবুকের অ্যালগরিদমও তেমন ঠিক করে দেয় কোন পেজের পোস্ট লোকে বেশি দেখবে, কার পোস্ট না চাইলেও টাইমলাইনে ভেসে উঠবে, কোনটা হালকা চেপে যাবে, কি করলে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভায়োলেট হবে, কোন ক্ষেত্রে প্রোফাইল রিপোর্ট খাবে। 
আচ্ছা, এই অ্যালগরিদম কি নিজে নিজেই রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে? না! কিন্তু অ্যালগরিদম লেখার কিংবা ব্যবহার করার মানুষটা তো রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট হতেই পারে, তাই না? আর সেরকমই গুরুতর অভিযোগ ফেসবুকের বিরুদ্ধে। 
বছর খানেক আগে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল একটি আর্টিকেলে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে লিখেছে যে, ভারতে ফেসবুকের পলিসি মেকাররা ব্যাপকভাবে বিজেপি’র পক্ষে রাজনৈতিক পক্ষপাত দুষ্ট। কেমন?
অ্যালগরিদম অনুযায়ী ফেসবুকে ঘৃণা ছড়ানোর পোস্ট করা যায় না। এই বিষয়ে নজরদারির জন্য ভারতে ফেসবুকের যে টিম রয়েছে, সেই টিমই তেলেঙ্গানার বিজেপি নেতা টি রাজা সিং-র “মুসলিমরা বিশ্বাসঘাতক এবং রোহিঙ্গা মুসলিমদের গুলি করে মারা উচিত” –সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্টটি ডিলিট করার এবং তাঁকে ‘বিপজ্জনক ব্যক্তি’ হিসাবে চিহ্নিত করে অ্যাকাউন্টটি স্থায়ীভাবে ব্যান করার প্রস্তাব পাঠায় টিম-লিড অফিসারের কাছে। তালিকায় ছিল দিল্লির দাঙ্গার আগে কপিল মিশ্রর উসকানি মূলক ভিডিও, অনন্ত হেগড়ের সাম্প্রদায়িক মন্তব্যও। 
কিন্তু সর্ষের মধ্যেই ভূত। টিম লিড, সাউথ এশিয়ান জোনের ফেসবুকের পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ অফিসার আঁখি দাস বিজেপির নেতাদের পোস্ট ডিলিট কিম্বা অ্যাকাউন্ট ব্যান তো দুরস্ত, ‘ব্যবসার ও শাসক পক্ষের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতি হবে’ -অজুহাতে একের পর এক সাম্প্রদায়িক পোস্ট অনুমোদন করতে থাকেন। ফলে মুদ্রার অপর পিঠে শাসকদের অঙ্গুলিহেলন প্যালেস্তাইনের সমর্থনে পোস্টের রিচ যে কমিয়ে দেওয়া হতেই পারে এ এতে তো অবাক হওয়ার কিছুই নেই। 
আই টি সেলের প্রোপাগান্ডা    
টেকনোলজিকে ব্যবহার করে ঘৃণা ছড়ানো প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে বিজেপি। আমাদের দেশের গোদী মিডিয়া তো আছেই। এরা এমন প্রজাতি যারা দেশের ভেতরে মণিপুরের খবর পায় না কিন্তু ইজরায়েল পৌঁছে গ্রাউন্ড জিরো থেকে ক্ষয়ক্ষতির দস্তাবেজ পেশ করে। আর এই গোদের উপর বিষফোঁড়া বিজেপি’র আইটি সেল। যারা ইজারায়েল ও প্যালেস্তাইনের রাজনৈতিক অবস্থাকে ব্যবহার করছে নিজেদের সাম্প্রদায়িক প্রচারকে শক্তিশালী করতে।   
দি ওয়ারের একটি প্রতিবেদন বলছে, ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউণ্ডেশেনের পলিসি ডাইরেক্টরে প্রতীক ওয়াঘরে গত একমাসে ১৩টি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের চ্যাটের বিষয় বস্তু অ্যানালাইসিস করেছেন। এই গ্রুপ গুলির বিশেষত্ব বিজেপি’র আইটি সেলের তৈরি প্রোপাগান্ডা গ্রুপ। প্রতিটি গ্রুপের নামই হয় মোদীর বা যোগীর নামে। গ্রুপগুলিতে যে ধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে তার টার্গেটেড উদ্দেশ্য হল ইসলামোফবিয়া ছড়ানো। 
হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ থেকে প্রচারের বিষয় বস্তুগুলো দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন মোডাস অপারেন্ডিটা। প্রথমত, এই ঘটনার জন্য দায়ী হামাস। আর বৃহত্তর অর্থে প্যালেস্তাইন এবং মুসলিমরা। অর্থাৎ সমস্যার মূল কারণ ধর্মীয়। কোনও জিও পলিটিক্যাল সমস্যা এটা নয়। দ্বিতীয়ত, এই মুসলিম উগ্রপন্থীদের আক্রমণের শিকার ইহুদিরা। ঠিক যেমন ভারতে হিন্দুরা। ভারতের ছত্রে ছত্রে একরম গাজা স্ট্রিপ ছড়িয়ে আছে। সে বিষয়ে আমাদের সাবধান থাকা উচিত। এবং এই বিপদ থেকে আমাদের বাঁচতে নরেন্দ্র মোদীকেই সমর্থন করা উচিত। তৃতীয়ত, ইজরায়েলের একটি পরিবারের মহিলাদের ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে, এদের হোস্টেজ করে রেখেছে হামাসরা। আর ঠিক এই কারণেই হিন্দু (পড়ুন রাজপুত) দের মধ্যে মোঘল আমলে প্রচলিত ‘জাউহার’ প্রথা কতটা যথাযথ। পাঠকদের স্বার্থে বলা, জাউহার হলো সেই প্রথা যখন রাজপুত রাজারা মোঘল-বাদশাদের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হলে রানিরা আগুনে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করতেন। চতুর্থত, কিছু ম্যাসেজে গান্ধীজীকে কুৎসিত ব্যঙ্গ করে নাথুরাম গডসেকে গ্লোরিফাই করে বলা হচ্ছে, গডসে না থাকলে পাকিস্তান থেকে উত্তর প্রদেশ হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত গাজা স্ট্রিপ হয়ে যেত। বা ইজরায়েলের সাথে আজ যা হচ্ছে সেটাই ১৯৯০-র আসলে কাশ্মীরি হিন্দুদের সাথে হয়েছিল। এই সমস্ত প্রচারের অভিমুখ যে ইসলামোফবিয়া ছড়ানো এটা তো দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। 
আইটি সেলের প্রচারের টিকি বাঁধা বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের আদর্শগত অবস্থানেই। সঙ্ঘ পরিবার আদর্শগতভাবেই ফ্যাসিবাদের পক্ষে। হিটলারের জার্মানিতে যখন ইহুদিদের এথনিক ক্লিন্সেলিং হয়েছিল তখন সঙ্ঘ হিটলারের পক্ষেই ছিল, এখন সেই সঙ্ঘই উগ্র হিন্দুত্ববাদী আদর্শের স্বার্থে ইজরায়েলকে সমর্থন করছে। এমননি ভারত সরকারের অবস্থানও ক্রমশ সঙ্ঘ পরিবারের আদর্শগত অবস্থানের দিকে ন্যক্কারজনকভাবে ঝুঁকে যাচ্ছে।   
একটা সময় ছিল যখন ভারত প্যালেস্তাইনের পক্ষে সংহতি জানাতো। ইয়াসের আরাফতকে গোটা বিশ্বে ভারতের এই বিদেশ নীতি, শান্তির পক্ষে অবস্থান সমাদৃত হতো। সেসব অবশ্য এখন অতীত। প্রায় ১৮০ ডিগ্রি বিপরীতে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে গত ২৭অক্টোবর রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে যে প্রস্তাব পাশ হয়েছে সেখানে ভারত ভোট দানে বিরত থেকেছে। ২০১৭ সালে প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী তিনদিনের ইজরায়েল সফর করেছিলেন। আর তারপর প্যালেস্তাইনের রামাল্লায় মাত্র তিন ঘণ্টার সফর রেখে তিনি বুঝিয়ে দেন যে ভারত এখন ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন ইস্যুতে ব্যালেন্স করে চলার চেষ্টা করছে না বরং ঘোষিত ভাবেই থাকছে ইজরায়েলের পক্ষে। 
এছাড়াও ভারত বর্তমানে ইজরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। ইজরায়েলের তৈরি সামরিক অস্ত্রের বৃহত্তম ক্রেতা, পেগাসাসের মতো নজরদারি প্রযুক্তির পার্টনার। আর বিদেশ নীতির এই পরিবর্তনের মূল কারণ হলো এই দুই দেশ, ভারত এবং ইজরায়েলের উপর জিও পলিটিক্যাল কারণেই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে সাম্রাজ্যবাদের বাদশা আমেরিকা। 
সূর্যকান্ত মিশ্রর একটা বিশ্লেষণ দিয়ে শেষ করব। উনি বলেছিলেন, কিছু সময় বিশ্ব রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় এরকম একটা অবস্থা থাকে যে, কোন পক্ষে অবস্থান করব বোঝা কঠিন হয়ে যায়। তখন দেখতে হবে আমেরিকা কী বলছে, আমেরিকা কোন পক্ষে আছে, আমেরিকার মিত্র শক্তি কারা আছে, ঠিক তাঁর উলটো অবস্থানে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে কারণ ওটাই সঠিক অবস্থান, ওটাই সঠিক পক্ষ। 
ঠিক তেমনই, ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের বিষয়ে কারও যদি পক্ষ চিনতে অসুবিধা হচ্ছে তাহলে বুঝে নেওয়া ভালো আমেরিকাই ইজরায়েলের মুখ্য মদতদাতা। ভারত সরকার যদি আমেরিকার পক্ষ নিয়ে, নিজেদের হিন্দুত্ববাদী প্রোপাগান্ডার বিষ ছড়াতে চায় তাহলে এটাও বুঝে নেওয়ার দরকার ভারতের সাধারণ মানুষ ভারত সরকারের এই অবস্থানের বিপক্ষে, ভারতের সাধারণ মানুষ শান্তির পক্ষে! 
               
                      
 

Comments :0

Login to leave a comment