DOMEKAL RALLY SALIM ADHIR

ডোমকলে ‘মিনি ব্রিগেড’, দহনজ্বালা সয়ে জনজমায়েত

রাজ্য জেলা লোকসভা ২০২৪

ডোমকলে মহম্মদ সেলিমের সমর্থনে জনপ্লাবনে ভাষণ অধীর চৌধুরীর।

অনির্বাণ দে

৪৩ ডিগ্রি। শনিবার ডোমকলে পারদ উঠেছে এতটাই। বাতাসে বয়েছে হলকা। তাকে টেক্কা দিল যুদ্ধ জয়ের মেজাজ। ডোমকল জনকল্যাণ ময়দানে তখন জনপ্লাবন। মানুষ মাঠ উপচে রাস্তায়, বাড়ির ছাদে ছাদে।
এই গণজমায়েতকে সাক্ষী রেখে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, এই সমাবেশ থেকে বুকে আগুন নিয়ে ফিরে যান। তৃণমূলকে উচ্ছেদ করতে হবেই।  আহ্বান জানিয়েছেন সাম্প্রদায়িক শক্তিকে হারানোর। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে প্রার্থী এবং সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, দিদি আর মোদী, সাধারণ মানুষের ওপর দুই লুটেরার বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। দেশকে, রাজ্যকে লুট করতে দেব না।
সমাবেশে অধীর বলেছেন, “মস্তান আর  পুলিশকে নিয়ে তৃণমূল খোয়াব দেখছে, বুথ লুঠ করবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস, সিপিএমের জোড়া লড়াইয়ে তৃণমূল পালানোর পথ পায়নি। পুলিশ বাঁচিয়েছিল। পুলিশকে আর বাঁচানোর রাস্তা দেবো না। নির্বাচন কমিশনের কাছে বারবার বলেছি। এখানেও বলছি,   পুলিশ আর তৃণমূল চক্রান্ত করলেও রিগিং করতে দেব না”।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, আমি বলেছিলেম, সেলিম ভাই দাঁড়ান। মুর্শিদাবাদের মানুষ মেহমানি করতে ভুল করে না। সেলিম জিতবেন” ।
এদিন অধীর স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে বোঝাপড়ার ছবি।
অধীর বলেছেন, “ যখন দেশে  মোদীর চিন্তা বাড়ছে। সেই রকম সময়ে মোদীকে চিন্তা মুক্ত করছে মমতা ব্যানার্জি। বলছে, সে ইন্ডিয়া জোটে থাকবো না। কেন ? খোকাবাবুকে বাঁচাতে হবে। ইডি, সিবিআই যাতে না ধরে।’’ ভুলে যাবেন না মুর্শিদাবাদের মানুষ। জানান দিয়েছে জমাতের কন্ঠস্বর।
মুর্শিদাবদের লড়াইয়ের সাথেই অধীর চৌধুরী জুড়েছেন দেশের লড়াইকে। তিনি বলেছেন, “ আজ প্রশ্ন দেশ বাঁচবে কিনা। মোদীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা  প্রতিরোধ। যে প্রতিরোধের নাম ধর্মনিরপেক্ষতা। কংগ্রেস, বামেরা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি। বামেদের সঙ্গে আমদের দোস্তি এইখানেই। বামেদের সাথে অনেক ঝঞ্ঝাট হয়েছে অস্বীকার করব না। কিন্তু দেশ বাচানর প্রশ্নে আমরা এককাট্টা।’’
এদিন সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সম্পাদক জামির মোল্লা, ডোমকলের প্রাক্তন বিধায়ক আনিসুর রহমান। সভা পরিচালনা করেন সিপিআই(এম) নেতা মোস্তাফিজুর রহমান।
সমাবেশে মহম্মদ সেলিম যখন বলতে এসেছেন, বিকেল নেমে এসেছে। সেলিম বলেছেন, “ রাজ্যজুড়ে  অনেক লুট হয়েছে।  চুরি, জোচ্চুরি, খুন জখম,  ডাকাতি, অনেক ভোট লুট হয়েছে।  তার জবাব হবে।  আজ লাল ঝান্ডা, তেরঙ্গা ঝান্ডা এককাট্টা হয়ে বলছে আর পশ্চিমবঙ্গকে লুট করতে দেব না।’’


সেলিম বলেছেন,  “এক দিকে দিদির লুট,আরেক দিকে মোদীর লুট।  দুই লুটেরার বিরুদ্ধে লড়াই। এই লড়াইয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের হকের কথা, অধিকারের কথা ,  ন্যায়ের কথা , ইনসাফের কথা বলতে হবে।’’
সেলিম বলেছেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা কেন বাইরে গিয়ে কাজ করবে?  রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সেই পরিকল্পনা হওয়া উচিত যাতে ছেলেমেয়েরা নিজের বুদ্ধি, বলকে ব্যবহার করে রাজ্যকে সাজাতে পারে। কেন নেই সেই পরিকল্পনা?”
সেলিম বলেছেন, “ দুই সরকার জিএসটি নিচ্ছে। আর সরকারি প্রকল্পে মানুষের করের টাকা খরচ করে সেটাকে দান হিসেবে দেখানো হচ্ছে। কোভিডের সময় কিচ্ছু করেনি সরকার। মোদী, মমতা বলেনি করোনায় কতো লোক মারা গিয়েছে । পিএম কেয়ারের নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রী দুর্নিতি করেছে।’’

সেলিম বলেছেন, “স্কুল সার্ভিস কমিশন, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন চুরি করেছে। যাদের জেলে থাকার কথা তাঁরা বাইরে”।
সেলিম এদিন বলেছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করতে হবে মুর্শিদাবাদকে। ডোমকল, করিমপুর, জলঙ্গীকে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে জুড়তে হবে। স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্কুল তৈরি করতে হবে। এই লড়াই শুধু ভোটের জন্য নয়। ভোটের পর জীবনের মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment