DEBRAJ RAJGANJ

বাগানের বঞ্চনায় সরব প্রচার শ্রমিক সন্তান মায়ারও

জেলা

জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের শিকারপুর চা বাগানে দেবরাজ বর্মণের প্রচারে শ্রমিক পরিবারের যুবতী মায়া বেনীও।

দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি

চা বাগানে নতুন কাজ নেই। কেউ কাজ করতে যান ভুটানে, কোন চা শ্রমিকের পরিবারের ছেলেরা গ্যাংটকের হোটেলে কাজ করেন। কেউ আবার সিকিমে মাল টানা গাড়িতে খালাসির কাজ করেন। কেউ সকালে শিলিগুড়ি যান রাজমিস্ত্রির জোগানের কাজ করতে। 
বাগানের এমএ পাশ চা শ্রমিক ঘরের মেয়ে মায়া বেনী উচ্চশিক্ষিত হয়েও চাকরি পাননি। বাগানেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পড়ান। স্থানীয় হাইস্কুলে দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন। এই স্কুলও তৈরি হয়েছিল পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের মেয়াদে। 


এসএসসি নেই, প্রাথমিকে নিয়োগ বন্ধ তৃণমূল জমানায়। যেটুকু নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তীব্র। নিয়োগের জন্য টাকা নিয়েছে তৃণমূল, এই অভিযোগ যুব অংশে প্রায় সর্বত্র। কাজের দাবি অত্যন্ত বড় হয়েছে জলপাইগুড়িতে। 
বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মন নিজেই যুব অংশের। প্রচারে নিয়মিত কথা হচ্ছে যুবদের সঙ্গে। তাঁকে সমর্থন করেছে কংগ্রেসও। 
বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জের শিকারপুর চা বাগানের শ্রমিকদের মাঝে প্রচার করে এবারের ভোটে  কাস্তে হাতুড়ি তারা চিহ্নে বামফ্রন্ট প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার কথা প্রচার করলেন মায়া বেনীও। এই বাগানের চা শ্রমিক পরিবারের উচ্চশিক্ষিত সেই মায়া, স্থায়ী চাকরি মেলেনি যাঁর। যুবদের যন্ত্রণা, শ্রমিকদের মজুরি না পাওয়ার কথা বললেন প্রচারে। 
চা পাতা তুলতে তুলতে শ্রমিক সামির মুন্ডা, দিলু বরাইক, নারো ওঁরাও-রা জানান, ২৫০ টাকা দৈনিক হাজিরায় তাঁদের সংসার চলে না। আগে বাগান থেকে তারা আলাদা রেশন পেতেন। এখন রেশন বাবদ বাগান দেয় ৯ টাকা। আর সরকারি রেশন সকলে যা পান তাঁরাও তাই পান। বাগানে নতুন কাজ নেই তাই ঘরের ছেলেমেয়েরা বাইরে কাজে যান। 
শ্রমিকরাই বলেছেন, বামফ্রন্ট সরকার যখন ছিল, বামপন্থীরা যখন শক্তিশালী ছিল, তাঁরা এর চেয়ে ভালো ছিলেন। দিদি-মোদি কেউ কথা রাখেনি।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের মেয়াদে চা বাগানের হাল আরও খারাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভোটের প্রচারে এসেছেন, কিন্তু বন্ধ চা বাগান খোলেনি। এখন পাট্টার নামে ৫ ডেসিমেল মাত্র জমি দিয়ে বাগানের জমি দখল করতে চাইছে রাজ্য সরকার। জমি চলে যাবে জমি মাফিয়া আর কর্পোরেটদের হাতে। শ্রমিকরা বলেছেন তাঁরা তা হতে দেবেন না।
দেবরাজ বর্মন বলেন, কেন্দ্রে ইউপিএ-১ সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল বামপন্থীরা। সেই সময়েই একশো দিনের কাজের আইন এসেছিল। জনতার দাবিতে লোকসভায় সরব হয়েছেন বামপন্থীরাই। তাই কাস্তে হাতুড়ি তারা চিহ্নে ভোট দিন। 
রাজাগঞ্জের ফারাবাড়ি নেপালি বস্তি, ভুটকি হাট, লাল স্কুল, ভাঙ্গামালি সহ বিভিন্ন এলাকাতেও প্রচার করেন বামফ্রন্ট প্রার্থী। সঙ্গে ছিলেন সিপিআই(এম) নেতা রানা লাহিড়ী, জ্যোতি রঞ্জন রায়, এরিয়া সম্পাদক রতন রায়, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোক্তাল হোসেন, রাজ্য কমিটির সদস্য সায়নদীপ মিত্র।

Comments :0

Login to leave a comment