পিএইডি‘তে ভর্তির দাবিতে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কেন্দ্র অরবিন্দ ভবন অভিযান করবেন ছাত্রছাত্রীরা।
গত জুনে বিজ্ঞপ্তি বেরনোর পর ৬ মাস পার হয়ে গিয়েছে। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সম্পন্ন। কিন্তু এখনও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি এবং সংস্কৃত বিভাগে পিএইচডি মেধা তালিকা প্রকাশ করেনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে অনিশ্চয়তা এবং আশঙ্কাতে ভুগছে সমস্ত পিএইচডি আবেদনকারী।
কিছুদিন আগে কলা বিভাগে পিএইচডি’তে ভর্তি নিয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের এই আচরণের ফলে ওই তিন বিভাগের অনেক সম্ভাব্য গবেষক বিপাকে পড়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তি না হলে ফেলোশিপ বাতিলের মুখে পড়তে হবে। এমতাবস্থায় শুক্রবার দুপুর ১টায় আবেদনকারীরা উপাচার্যের কাছে গিয়ে জবাবদিহি চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, গবেষকদের ভর্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
কোনো ‘অজ্ঞাত কারণে’ এই ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে অস্থায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, পিএচডি কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে জোর করে ‘সুপার নিউমারিক’ নীতিকে মানছেন না অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। এমনকি ডক্টরাল কমিটির সুপারিশ নস্যাৎ করে দিয়ে তিনি একতরফা সিদ্ধান্তে আটকে রেখেছেন ভর্তি। যার জেরে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে অসংখ্য পড়ুয়ার।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিভাগের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ী গত ২৩ নভেম্বর অনশনে বসেন জুটা এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে। তালিকা তুলে নেওয়ার বিষয় এবং যাদবপুরের হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে এদিন অরবিন্দ ভবনের সামনে অনশনে বসেন অধ্যাপক ইমন কল্যাণ লাহিড়ী। তিনি জানিয়েছেন, ‘ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের উপস্থিতিতেই বৈঠক থেকে এই তালিকা অনুমোদন করা হয়। তারপর তা তুলে নেওয়া হয়। এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে একটা উৎকন্ঠা তৈরি হয়েছে।’ তাঁর কথায়, ‘এর ফলে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।‘
সেই সময় অস্থায়ী উপাচার্য এসে এই জট কাটিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দেন। অনশন তুলে নিলে ফের বেঁকে বসেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে জেআরএফ প্রাপ্ত স্কলাররা সংকটে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ পিএইচডিতে নাম নথিভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই ফেলোশিপের ভাতা চালু হবে না। শুধু তা‘ই নয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভর্তি না হলে এই ফেলোশিপ বাতিলও হয়ে যাবে। ফলে আবারও প্রতিযোগিতামূলক নেট পরীক্ষায় বসতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন অনৈতিক ভাবে পিএইচডির তালিকা আটকে রেখেছেন উপাচার্য। এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘উপাচার্যের সই করা পিএইডি’র তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনুমোদন করা হয়। তারপর কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয় যে ওই তালিকা বাতিল করা হচ্ছে।’’ উপাচার্যের এই তালিকা বাতিল সংক্রান্ত বিষয় পুরোপুরি বেআইনি বলে দাবি করা হচ্ছে। যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পর অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, ২১ নভেম্বর থেকে যাঁদের পিএইচডিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল তা বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছু বিভাগের মেধা তালিকা প্রকাশ হলেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সংস্কৃত এবং অর্থনীতি বিভাগের মেধা তালিকাই প্রকাশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে উপাচার্যের দিক থেকে অভিযোগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেই বিস্তর ভ্রান্তি হয়েছে মেধা তালিকা তৈরি করার সময়। বৃহস্পতিবার জট ছাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসলে সংস্কৃত এবং অর্থনীতি বিভাগের মেধা তালিকার জট খুলে গেলেও এখনো অনিশ্চিত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ।
JADAVPUR PhD
পিএইচডি’তে ভর্তি নিয়ে জটিলতা, উপাচার্যের জবাবদিহি দাবি
×
Comments :0