মুক্তধারা
গল্প
শকুন্তলা
মৃদুল পাল
ছোটোবেলা থেকেই আনন্দ একটি কথা শুনে বড় হয়েছে,যে ধনী ঘরের ছেলেরা গরীব পরিবারের মেয়েদের বিয়ে করে উদ্ধার করে। কার খপ্পর থেকে উদ্ধার করে?সেদিন ওদের বাড়িতে পাড়া প্রতিবেশীরা অশ্রুলুপ্ত কন্ঠে আনন্দের মা এবং বাবাকে সমবেদনা জানাতে এসেছে। একটি এম্বুলেন্স ওদের বাড়ির সামনে এসে থামে।এম্বুলেন্সের ভেতর আনন্দের দিদি শকুন্তলা ঘুমাচ্ছে,ঘুমের মধ্যে তার প্রাণ-প্রদীপ নিভে গেছে। আনন্দ এবং ওর বন্ধুরা এম্বুলেন্সের দিকে ধেয়ে যায়।ওরা এম্বুলেন্সের পেছনের দর্জা খুলে সাদা কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত শকুন্তলার ঘুমন্ত শরীর চাংদোলা করে বারান্দায় নিয়ে আসে।
একজন শকুন্তলার মুখের ওপর থেকে সাদা কাপড়টি সড়িয়ে দেয়।আনন্দ বিষাদমাখা দৃষ্টিতে দিদির মুখের পানে তাকিয়ে রয়েছে।পুরুষ মানুষ আর কি কান্নাকাটি করবে?নীরবতাই সেখানে বাংময়।শকুন্তলার হাত থেকে মেহেন্দির দাগ এক্ষনো ঠিকমতন ঘুচেনি।বিয়ের ভিডিও এডিট হচ্ছে।এরমধ্যেই.... এরমধ্যেই ঘরের ভেতর থেকে শোকাতুর মা-বাবা বারান্দায় এসে মেয়েকে ঘুম থেকে তোলার চেষ্টা করছে,যেমনটা শকুন্তলার মাধ্যমিক পরীক্ষার দিন ভোরবেলা ওরা করেছিলো।গেটে দাঁড়িয়ে থাকা একজন জ্যোতিষী বললো,"খুব কম সময়েই চলে গেলো।"একজন দার্শনিক বললো,"মৃত্যুর আবার সময়জ্ঞান?"আনন্দ ঠিক তক্ষনো বুঝে উঠতে পারেনি সমুদ্র মহাজনের ছোটো ছেলে শুভংকর তার দিদিকে বিয়ে করে ঠিক কার থেকে উদ্ধার করেছে?সংসার থেকে?
Comments :0