The danger of Deucha Panchami

দেওচা -পাঁচামী কয়লা খনির খোলা মুখের বিপদ

উত্তর সম্পাদকীয়​

The danger of Deucha Panchami


ভাস্করানন্দ রায় 
আবার তেতে উঠেছেন দেওচা পাঁচামীর মানুষ। ঐ এলাকার মাটি প্রাকৃতিক কারণে এমনিতেই গরম, সেই গরমের উপর আবার পরিবেশ গরম হতে শুরু করেছে। মানুষের প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হলেন প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা। জেলা প্রশাসন পুরোহিত সঙ্গে করে নিয়ে ভিত পুজো করে কয়লা খনির কাজ শুরু করতেই চাঁদা মৌজার হাজার হাজার আদিবাসী মহিলা ও পুরুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুরোহিত সহ  জেলাশাসক, এসপি ও তাদের সৈন্যবাহিনী পিছু হটতে  বাধ্য হয়। বিক্ষোভ আরও  দানা বাঁধছে, জমাট হচ্ছে ওখানকার আন্দোলন।
হঠাৎ দেওচা পাঁচামীতে কয়লা খনির খোলা মুখ বেছে নিলেন কেন কৃষক দরদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষক দরদির ভেক ধরে সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো প্রকল্প বন্ধ করে দিলেন, সেই তিনিই দেওচা পাঁচমীর সরলমতি আদিবাসীদের উৎখাত করতে চাইছেন কেন? কাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য তাঁর এই অদম্য প্রচেষ্টা? পাহাড়, শাল-মহুয়ার জঙ্গলঘেরা ভিটেতেই আদিবাসীদের পুরুষানুক্রমে বসবাস ও তাদের জীবন-জীবিকা। তাদের আশ্রয়স্থল ও ভরসার জায়গা হচ্ছে বনজঙ্গল।
স্বাধীন সত্তা ও তাদের অধিকার নিয়েই বাঁচতে চান সরলমতি আদিবাসীরা। বন-পাহাড় যাদের জীবন, সেই সাঁওতাল আদিবাসীদের আজ উৎখাত করার গভীর চক্রান্ত চলছে। আদিবাসীদের “বনাঞ্চলের অধিকার” রক্ষার জন্য বামপন্থীরা সংসদের ভিতরে ও বাইরে আন্দোলন শুরু করে। বামপন্থীদের তীব্র আন্দোলনের চাপে তৎকালীন ইউপিএ সরকার ২০০৬ সালে “বনাঞ্চলের অধিকার” আইন পাশ করতে বাধ্য হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইনের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে সবই জানেন। সব জেনেও গায়ের জোরে স্বৈরতান্ত্রিকভাবে দেওচা-পাঁচামী কয়লা খনির খোলামুখের প্রকল্প ঘোষণা করলেন। এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আদিবাসীদের সংঘাত শুরু হয়েছে।
২০০৬ সালের আইনে আদিবাসীদের বনাঞ্চলে জল-জঙ্গল-জমির অধিকার দেওয়া হয়েছে। আইন মোতাবেক বনাঞ্চলে কোনও শিল্প স্থাপন করতে হলে এবং আদিবাসীদের পুনর্বাসনের বিষয় থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মধ্যে গ্রাম সভার মিটিং ডেকে প্রকল্পের অনুমতি নিতেই হবে —একপ্রকার বাধ্যতামূলক।
সরকারের তরফে লিখিতভাবে ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের প্যাকেজ গ্রামসভাকে জানাতে হবে। পুনর্বাসনের সমস্ত ব্যবস্থা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না।
আদিবাসী সহ ওই এলাকার মানুষজন বৃহত্তর আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। আদিবাসীদের সংগঠনগুলি ও অন্যান্য সংগঠন, জনবিজ্ঞান সংগঠনগুলি আওয়াজ তুলেছে ২০০৬ সালের আইন মোতাবেক সরকারের কার্যক্রম ঠিক করতে হবে। ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যমণি হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একাই এই প্রকল্প করবেন বলে, আবেদন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবেদন মঞ্জুর করে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ছাড়পত্র পাওয়া মাত্রই মমতা  অগণতান্ত্রিকভাবে শুরু করে দিলেন দেওচা-পাঁচামী-দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙা কয়লা খনির খোলা মুখের  কাজ।
উনি শুরু করে দিলেন অথচ কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই অলাভজনক প্রকল্প বলে এই প্রকল্প থেকে সরে আসে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবেদন গ্রহণ করে এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডকে (WBPDCL) প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব দেয়। “এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগামী ১০০ বছরের জন্য রাজ্যকে আর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভাবতে হবে না”—বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন এবং বললেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ আত্মনির্ভর হবে”।এখন আত্মনির্ভর হবে না আত্মঘাতী হবে– তা ভবিষ্যৎ বলবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা খোলা মুখ কয়লা খনি, রূপায়ণের জন্য প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে জোরপূর্বক আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করছেন। লুটেরা পুঁজির স্বার্থ রক্ষার জন্য মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এই খনি প্রকল্প করার জন্য ছাড়পত্র নিলেন।
স্বাধীন ভারতে ১৯৫২ সালে অরণ্যনীতিতে অরণ্যবাসীদের অধিকারের বিষয়টিকে পাত্তাই দিলো না ভারত সরকার। ১৯৭২ সালে তৈরি হয় “বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন”। ১৯৮০ সালে তৈরি হলো “বন আইন (সংরক্ষণ)” এখানেও বনবাসী ও জঙ্গলবাসীদের কথা বাদ রয়েই গেল। আদিবাসীদের বিপদ আরও ঘনীভূত হলো, ১৯৮৮ সালের ‘‘রিজার্ভ ফরেস্ট অ্যাক্ট”এ। এই আইনের ফলে প্রায় এক কোটি আদিবাসী ও বনবাসী উচ্ছেদের কবলে পড়লেন।
২০০২ সালে বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পাকাপোক্তভাবেই আদিবাসী ও বনবাসীদের উচ্ছেদ অভিযানে নামলেন। দেশে সংবিধান আছে, সরকার আছে, আইন আছে—তা সত্ত্বেও বর্তমানে উচ্ছেদ হওয়া আদিবাসীদের সংখ্যা প্রায় দু’কোটি। আমরা স্বাধীন বলে গর্ব করি। এরাই আমাদের দেশের আদি ও অকৃত্রিম অধিবাসী। এরাই সম্পদের পাহাড় গড়ে, অথচ এরাই দেশের যাবতীয় সম্পদের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে। “আচ্ছে দিনের’’—সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রক গত ২০২২ সালের জুন মাসে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তি হলো, ‘‘বন সংরক্ষণ—২০২২’’। এই বিজ্ঞপ্তিতে আছে—
প্রথমত, সংবিধানের পঞ্চম তফসিল-এ আদিবাসীদের যা রক্ষাকবচ ছিল, সেটাকে কার্যত অস্বীকার করে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সংসদীয় রীতিনীতি ও গণতন্ত্রকে মান্যতা না দিয়ে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো। এর ফলে, গ্রামসভার অনুমতি ছাড়াই বন-জঙ্গল সহ ভূমিকে কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনও বেসরকারি কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দিতে পারবে। এই নিয়ম কার্যকর হলে, হাজারে হাজারে আদিবাসী বনবাসী উচ্ছেদ হবে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, নিউজ পোর্টাল, সরকারি সূত্রে যা জানা যাচ্ছে—  তা হলো, বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের ৩৪০০ একর এলাকা নিয়ে এই কয়লা ব্লক চিহ্নিত হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ১৯টি গ্রামের ৪,৩০০ টি পরিবারের ২১০০০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হবেন। ৫৩টি জনপদের ৭০,০০০ মানুষের জীবন জীবিকায়— এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। খনি প্রকল্পের জন্য যেগুলি স্বাভাবিক প্রয়োজন তা হলো, ওভার বার্ডেন ডাম্পিং ইয়ার্ড, বাফার জোন ও পুনর্বাসনের জন্য জমি। সব মিলিয়ে প্রায় ১১,২২৩ একর জমি লাগবে। এর মধ্যে সরকারি জমি আছে ২০০০ একর। প্রায় ৯০০০ একর জমি সরকারকে অধিগ্রহণ করতে হবে। তার মধ্যে আছে বনাঞ্চল, যা কিনা আদিবাসীদের অন্যতম জীবিকাস্থল। এই জমির বড় অংশ আদিবাসীদের। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, জোরপূর্বক জমি নেওয়া হবে না।
২০১৯-এ ডিসেম্বরে দেওচা -পাঁচমী কয়লা খনি প্রকল্পের উদ্বোধন হবার কথা ছিল রাজ্যের মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে। সেই সময়ে আদিবাসী সমাজের হাজার হাজার মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হয় প্রতিবাদ ও প্রবল বিক্ষোভ। তারই জেরে উদ্বোধন বাতিল হয়ে যায়। সমাজবিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ- যাঁরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাঁদেরকে ওখানে এখন যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে মিথ্যে মামলা দেওয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। এমনকি ইউএপিএ (রাষ্ট্রদ্রোহ আইন) এর ভয় দেখানো হচ্ছে। এককথায় বলা যায় –ধমকানো চমকানো রীতিমত চলছে। নবান্ন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে “শ্রেষ্ঠতম প্যাকেজ’’। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন পাওয়া মিডিয়াগুলি “উন্নয়নের পক্ষে” মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি বদান্যতা দেখানোর জন্য আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছে। এই উন্নয়ন কাদের স্বার্থ রক্ষা করবে! আদিবাসীদের বাস্তু, জমি, জীবিকা, পরিবেশ ও বনাঞ্চল রক্ষার জন্য ইতিমধ্যে রাজ্যের বিশিষ্ট জনেরা “দেওচা পাঁচামী প্রকল্প’’ বন্ধের ডাক দিয়েছেন।
সরকারি তথ্য ও হিসাব
দেওচা-পাচামী হলো বীরভূমের মহাম্মদবাজার হরিণসিং কোল ব্লক। দেওচা-পাঁচামী তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে গঠিত। হিংলো, ভাঁড়কাটা ও দেওচা গ্রাম পঞ্চায়েত। হিংলো জিপিতে ২১টি গ্রাম, ভাঁড়কাটা জিপিতে -৩৪টি এবং দেওচা জি পি তে ২৮টি গ্রাম আছে। মোট ৮৩টির মধ্যে দেওয়ানগঞ্জ ও হরিণসিং এলাকা থেকেই কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী এই এলাকায় আপাতত ১২টি গ্রামকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৪৩১৪ টি বাড়িতে ২১ হাজার বেশি মানুষ বসবাস করেন। তার মধ্যে ৩৬০০ জন তফসিলি জাতিভুক্ত এবং ৯০৩৪ জন উপজাতিভুক্ত। এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা পুনর্বাসন প্যাকেজে খরচ হবে। সরকারি ঘোষণা যা, তা হলো সরকারের নিজস্ব জমি (খাস) এক হাজার একর। এই জমি দেওয়ানগঞ্জ এলাকায়। প্রথম পর্যায়ে এখান থেকে কাজ শুরু হবে।
প্রশ্ন উঠেছে প্যাকেজে যা ঘোষণা করা হয়েছে, তা কি আদৌ কার্যকরী করা হবে? নানান  সংশয়-আশঙ্কা নিয়ে ঐ এলাকার মানুষজন আছেন। তারপর আছে “সিলোকোসিস”-এর মতো মারাত্মক মহামারী রোগের ভয়। “ঘরপোড়া গোরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরায়।’’ অতীতে যে সমস্ত প্রকল্প হয়েছে, সেখানে যে প্যাকেজ ছিল, তার কোনটারই পূর্ণাঙ্গ রূপায়ণ হয়নি। যেমন –
সর্দার সরোবর বাঁধ, স্ট্যাচু অব ইউনিটি নির্মাণে, নর্মদা বাঁধ, ডিভিসি বাঁধ, ইত্যাদি প্রায় সবই কয়েক শত করে আদিবাসী এবং তাঁদের পরিবার ও অন্যান্যদের উৎখাত করা এবং তাঁদের জীবন-জীবিকা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ কিছুই তারা পাননি এরকম আরও অনেক উদাহরণ আছে। আদিবাসীদের শিক্ষা, কাজ, জমি, স্বাস্থ্য, মাথার উপর ছাদ—  এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের বঞ্চনা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা বিষয়গুলি ঐ এলাকার আদিবাসীদের ভাবাচ্ছে। যার জন্যই তারা এখনও কোনও মতামত দেননি কয়লাখনি প্রকল্পে জমি দেবার প্রশ্নে।
আর একটি প্রশ্ন প্রকল্প এলাকায় উঠেছে এবং রাজনীতিকদের মধ্যেও আলোচিত হচ্ছে, তা হলো প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে শিল্প সম্মেলন হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন ও বিধানসভাতে ঘোষণা করেছেন, রাজ্যে শিল্প তালুক হতে চলেছে দেউচা–পাঁচামী খনি প্রকল্প। তাঁর ঘোষণা, প্রতিশ্রুতি ও প্রকাশিত শ্বেতপত্রের মধ্যে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া এই শিল্পতালুকে কর্মসংস্থান কত হবে তাও নিশ্চিত করে রাজ্য সরকার বলছে না।
বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদদের অভিমত
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। গণশুনানি না করেই প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে এবং প্রকল্পের কাজ চলছে। খোলামুখ কয়লা খনি প্রকল্পে পরিবেশ দূষণের ব্যাপকতা বেশি হবে, ফলে বাস্তুতন্ত্র আঘাতপ্রাপ্ত হবে। কয়লা উত্তোলন কোনও শিল্প নয়, বরং এটি যন্ত্রনির্ভর কাজ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানে অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে। প্রকল্পের এখনো পর্যন্ত কোনও টেকনোলজি পার্টনার নেই। এই প্রকল্প বাস্তবে রূপ দিতে গেলে যে ধরনের প্রযুক্তিগত দক্ষতা দরকার, তা আমাদের দেশে নেই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনও সংস্থার সাথে এখনো রাজ্য সরকার যোগাযোগ করেনি। দেওচা -পাঁচামী কয়লাখনি প্রকল্পের খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর “পরিবেশ দূষণে মারাত্মক প্রভাব’’ —এই বলে ইংল্যান্ড ও জার্মানি ভারতে তাদের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। 
প্রকল্পটি আদৌ লাভজনক নয়। প্রকল্পটি কি আদৌ বিজ্ঞানসম্মত, লাভজনক এবং এই প্রকল্পে রাজ্যের হাজার হাজার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান হবে কি? হবে না এটা নিশ্চিত। তাই তাঁরা এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তীব্র করবার প্রস্তুতিও  নিচ্ছেন। তাঁদের পাশে বাম, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে দাঁড়াতে হবে এবং তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ বিষয়ে সিপিআই (এম) পশ্চিমবঙ্গ ২৭ তম রাজ্য সম্মেলনে গৃহীত কর্মসূচি– “প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীবন-জীবিকাকে সমন্বিত করে বিচার করতে হবে। ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে যুক্ত করে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলনের কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের রাজ্যে দেওচা-পাঁচামী’র মতো সমস্যা সামনে এসেছে—যা লুটেরা পুঁজিবাদের নেতৃত্বে পরিবেশের উপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ।’’ একে রূপায়ণ করতেই হবে। আসুন, এই ভয়ঙ্কর আক্রমণকে রুখে দেবার জন্য দেউচা-পাঁচামীর আদিবাসীদের রক্ষার লড়াইয়ে আমরা সকলে শামিল হই।

Comments :0

Login to leave a comment