গল্প | মুক্তধারা
একটা রাত
রাহুল চট্টোপাধ্যায়
তমালের চোখে ঘুম নেই। ঘরটার মধ্যে পায়চারি করতে করতে অস্বাভাবিক গরম লাগে। কপাল ঘেমে ওঠে।কেমন অস্থির লাগে। ভাবনাগুলো এলোমেলো হতে থাকে। একটা মাত্র জানলা ঘরটায়। জানলার বাইরেটায় ঘুরঘুট্টি অন্ধকার। তমাল সেই অন্ধকারেই তাকিয়ে থাকে।একদিনের মধ্যেই বদলে যাওয়া জীবনটাকে নাড়াচাড়া করতে থাকে সে।
ভালো কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিল তমাল।প্রথম থেকেই লেখাপড়ার ভালো সে। ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যে ফলের আশা ছাত্ররা করে সবটুকুই সে অর্জন করেছিল। চাকরি পেয়েছিল বড়ো আই.টি কোম্পানিতে। বাড়ি থেকে অনেকটা দূর পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু মাত্র একবছর।তার মধ্যেই একদিন চিঠি চলে এলো হাতে। কাজ নেই। এখনি ছেড়ে দিতে ঘর। প্রথমটায় বিস্ময়,তারপর অসহায় চেতনার আলোড়ন।
সেই রাতেই পথে এসে দাঁড়ালো তমাল। বাড়ি ফিরতে হবে। কিন্তু বড়ো বেশি রাত হয়ে গিয়েছে। ট্রেন নেই আগামীকাল ভোর পাঁচটার আগে। তাই রাতটা কাটানোর জন্য লজের একটা ঘরে গিয়ে উঠলো সে। এক কামরার লজ অনবরত তাকে ফিরিয়ে নিয়ে চলতে থাকলো পিছনে,তার স্বপ্ন আর বাস্তবতার টানাপোড়েনের দিকে।
ভোর হওয়ার আগেই বেরিয়ে পড়ল তমাল। বাড়ি যাবে সে। তবে বসে থাকবে না, লড়বে নতুন করে এমন ভাবনা নিয়ে হাঁটতে লাগলো।
সে যখন স্টেশনে পৌঁছলো তখন সবে পুব আকাশ ফর্সা হচ্ছে,শোনা যাচ্ছে ট্রেনের হুইসিল। তমাল পিঠের ব্যাগটা ঠিক করে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো।
Comments :0