নতুনপাতা
গল্প
বসন্তবৌরি
সৌ র ভ দ ত্ত
ভাঙাচোরা বাড়িটার পাশের পুকুরপাড়ে ছায়াঘেরা ছোট পেয়ারাপুলি আমগাছ।তারই একটা তির্যক ডালে বাসা বেঁধেছিল একটা বসন্তবৌরি।রাজা আর বাদশা ঐ বাড়িরই দুটো বাচ্ছা ছেলে।বয়স বড়জোর সাত কি
আট।তারা দুজন খেলামবাটি নিয়ে খেলার ফাঁকে গিয়ে আমগাছের বাসাটায় উঁকিঝুকি মারত।রাজা বাদশার কানে কানে বলত–এর বাচ্ছা হলে একটা তুই নিবি,আর একটা আমি।
এরপর একদিন পাখিটা বাসায় দুটো ডিম পাড়ল।যা দেখে তাদের দুজনের আনন্দের সীমা নেই।স্কুলের যাওয়া-আসার ফাঁকে সকাল-বিকাল পাখির বাসাটায় নজর রাখত।যাতে অন্য কেউ ডিমগুলোর ক্ষতি না করে।
একদিন ডিম ফুটে দুটো সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চা হল।রাজা আর বাদশা মিলে বাচ্চা দু-টোর নামও ঠিক করে ফেলল–একটার নাম সোনা,অন্যটার মণি–অর্থাৎ, সোনা-মণি।ভালবাসার স্পর্শ মাখানো নাম।
মা পাখিটা বাচ্চাদের সব সময় নজর রাখত।অনেক যত্ন করে পোকা-মাকড় ধরে এনে ছানাদের খাওয়াত।বাচ্চাদের গায়ের ছোট পালকগুলো ঠোঁট দিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করত।
রাজা-বাদশা প্রতিদিন এটা লক্ষ্য করত।তারা ভাবত–বাচ্চাদুটো কখন বড় হবে!মা পাখিটার দৃষ্টি এড়িয়ে ছানাদুটোকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাবে।
হঠাৎ একদিন সকালে ব্রাশ করার পর মুখ ধুতে গিয়ে বাসাটায় উঁকি দিয়ে বাদশা দেখল–মা পাখিটা নেই,সেইসঙ্গে বাচ্চাদুটোও নেই–'পাখি হুস্…'
বাসার মধ্যে শুধু একটা হলুদ পালক পড়ে আছে।পালকটা কুড়িয়ে বাদশা বুক পকেটে রেখে দিল।বাড়ি এসে দুঃখী দুঃখী স্বরে মাকে বলল–পাখিরা'তো যাযাবর হয় না মা?
Comments :0